(১) বিশ্বের অন্যতম শুষ্ক ও মরুপ্রধান অঞ্চলের তুলে উৎপাদনকারী দেশ হল মিশর।

(২) মিশরে প্রায় 1 লক্ষ 30 হাজার হেক্টর জমিতে 4.5 লক্ষ বেল (2013) তুলাে উৎপন্ন হয়। তুলাে উৎপাদনে এই দেশ বিশ্বে 20-তম স্থানাধিকারী দেশ।

(৩) এখানে হেক্টর প্রতি তুলাে উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় 754 কেজি (3.5 বেল)।

(৪) নীলনদের অববাহিকায় জলসেচের সাহায্য প্রচুর পরিমাণে দীর্ঘ আঁশযুক্ত উচ্চশ্রেণির তুলাের চাষ হয়। দেশের মােট উৎপাদনের শতকরা প্রায় 65 ভাগ তুলাে নীলনদের বদ্বীপ অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। এই অঞ্চলের দোআঁশ মাটি তুলাে চাষের পক্ষে বিশেষ উপযােগী।

(৫) উৎকৃষ্ট মানের তুলাে মিশরের প্রধান অর্থকরী ফসল (cash crop) I

(৬) বিদেশের বাজারে এই দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলার চাহিদা খুব বেশি হওয়ায় এটি মিশরের অন্যতম প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। 2012 খ্রিস্টাব্দে তুলাে রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় 3.5 লক্ষ বেল।

(৭) মিশরের অধিকাংশ উৎকৃষ্ট মানের তুলাে (প্রায় 90 ভাগ) আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

সাহারা মরুভূমির পূর্বাংশে অবস্থিত মিশর মরুভূমির দেশ। এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম বার্ষিক বৃষ্টিপাত গড়ে 25 সেমিরও কম। এরকম শুষ্ক পরিবেশে সাধারণত কৃষিকাজ করা যায় না। কিন্তু মিশরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নীলনদ। বর্ষাকালে প্রবল বৃষ্টিপাতে নীলনদে বন্যা দেখা দেয়। অতীতে এই বন্যার জল সেচকাজে ব্যবহার করে নীলনদ অববাহিকায় তুলাে উৎপাদন করা হত। বর্তমানে এই সেচকাজের সুবিধার জন্যই মিশরে নীলনদের ওপর একটি বিশালাকৃতি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর নাম আসােয়ান বাঁধ। বাঁধের পশ্চাতে যে জলাধার তৈরি হয়েছে, তার নাম নাসের হ্রদ। এ ছাড়াও ডেল্টা ব্যারেজ, আসিয়ুট ব্যারেজ প্রভৃতি সেচবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এবং বাঁধ ও জলাধারগুলির দু-পাশ থেকে অসংখ্য খাল ও শাখা খাল খনন করা হয়েছে। এইসব জালধার ও সেচবাঁধের জল খালের মাধ্যমে অত্যন্ত নিপুণভাবে সেচকাজে ব্যবহার করা হয় বলেই শুষ্ক মরুভূমির দেশ মিশর আজ শস্যশ্যামলা হয়েছে। এর ফলে এখানে প্রচুর পরিমাণে তুলাে উৎপাদিত হয়।

Rate this post