❋ মনে কর, তুমি তুষার এবং তােমার বন্ধু মাহফুজ। তোমার স্কুলের বার্ষিক বনভোজনের বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একখানা পত্র লেখ।

৩১শে জানুয়ারি, ২০২২ 

৭/এ, পােস্ট অফিস রােড,

জিগাতলা, ঢাকা

প্রিয় মাহফুজ, 
আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। অনেকদিন তােমার কোনাে চিঠি না পেয়ে আমি ভীষণ চিন্তিত। আমার এ পত্র পেয়ে অবশ্যই উত্তর দিবে। গত ২৬শে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমাদের বিদ্যালয়ের বার্ষিক বনভােজন। তার একটি বর্ণনা আজ তােমাকে লিখছি।

সকলের মতামত অনুযায়ী আমাদের বনভােজন বা পিকনিক স্পট নির্বাচিত হয় কুমিল্লার ‘কোটবাড়ি’ এলাকা। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী এ দিন সকাল সাতটার মধ্যে আমরা সবাই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হই। আমাদের বাস, মাইক ও ডেকোরেশন ঠিক করাই ছিল। তাই যাত্রার পূর্বে কোনাে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় নি। সবকিছু গুছিয়ে ঠিক আটটার সময় আমরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ‘বনভােজন-২০২২’ ব্যানার খচিত বাসে যাত্রা শুরু করলাম। সকালের মিষ্টি রােদ আর মৃদুমন্দ হাওয়ায় চলল আমাদের গাড়ি। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা-ঘাট থাকে ফাঁকা। তাই আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছতে তিন ঘণ্টার বেশি সময় লাগল না।

আমাদের সাথে ছিলেন বাংলার স্বনামধন্য শিক্ষক জনাব মাহফুজ স্যার। কোটবাড়ি নেমেই তিনি আমাদের সকলকে ডেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন এবং কিছু উপদেশ দিলেন। এরপর আমরা সবাই আমাদের ইচ্ছামতাে ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগ্লাম- কেউ পাহাড়, কেউ বন, কেউ বা সংরক্ষিত জাদুঘর। অনেকে ক্যামেরা নিয়ে বিভিন্ন দৃশ্য ও নিজেদের ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় কাটায়। তবে আমার কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে চন্দ্রবংশীয় রাজাদের তৈরি বিভিন্ন নিদর্শনসমূহ এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (BARD)। ঠিক একটা সময় বাবুর্চিদের রান্না-বান্না শেষ হলে শুরু হয় খাওয়ার পর্ব। আমাদের খাবার মেনুতে ছিল পােলাও, মুরগির রােস্ট ও কোল্ড ড্রিংকস। সকলে তৃপ্তি ভরে খেলাম। বনের মধ্যে গাছের ছায়ায় বসে খাওয়ার যে কি আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। খাওয়ার পর সামান্য বিশ্রাম। বিশ্রামের ফাঁকে আমাদের প্রিয় বন্ধু রবিন গীটার বাজিয়ে অপূর্ব কণ্ঠে গান শােনায়। আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতাে তার গান শুনি। বেলা চারটার সময় আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়িতে চেপে বসলাম। সন্ধ্যা সাতটার সময় আমরা নিরাপদে ঢাকায় ফিরে এলাম। অতঃপর যার যার ঘরে ফেরার পালা। এ আনন্দঘন দিনটির কথা আমি কোনােদিন ভুলব না।

এ বছর তােমরা বনভােজনে গিয়েছ কি-না জানিয়ে পত্র লিখবে। তােমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম ও ভাই-বােনদের স্নেহ দিও। তােমার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি।

ইতি       

তোমার বন্ধু 

তুষার।    

  

[ পত্র লেখা শেষে খাম এঁকে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয়। ]   

Rate this post