প্রশ্নঃ ১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইনানুসারে রেজিস্ট্রেশনকারী কর্মকর্তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব আলোচনা কর। রেজিস্ট্রার এবং সাব-রেজিস্ট্রারের বিশেষ ক্ষমতা আছে কি ?

উত্তরঃ রেজিস্ট্রেশন করা কর্মকর্তার কার্যাবলী ও ক্ষমতা ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনের পার্ট XI যে, রেজিস্ট্রেশনকারী কর্মকর্তার কার্যাবলী ও ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান রয়েছে। এগুলো নিম্নরূপ-

৫১ ধারার বিধান অনুযায়ী ৫টি নিবন্ধন বই ও ইনডেক্স রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। এগুলো বিভিন্ন ধরনের যেমন উইলের জন্য ৩ নম্বর নিবন্ধনের জন্য যেগুলো অস্বকৃতি জানানো হয়েছে তার কারণ লিপিবদ্ধ থাকবে ২ নম্বর বইয়ে।

কোন দলিল নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন করা হলে তিনি কি করবেন তার বিবরণ দেয়া হয়েছে ৫২ পৃষ্টায়। প্রত্যেকটি দলিলে উপস্থাপনের তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ করে স্বাক্ষর করবেন।

২০০৪ সালের সংশোধনীতে ৫২ক ধারা সন্নিবেশীত করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে যে, স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়াবলি উল্লেখ করা না হলে নিবন্ধন কর্মকর্তা তা নিবন্ধন করবেন না।

(ক) সর্বশেষের ক্ষতিয়ান।

(খ) বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির মালিক হলে তার নামে বা তার মূলসূরির নামের সর্বশেষ খতিয়ান। 

(গ) সম্পত্তির প্রকৃতি।

(ঘ) সম্পত্তির মূল্য।

(ঙ) সম্পত্তির বাউণ্ডারিসহ নকসা।

(চ) সম্পত্তি সম্পর্কে বিগত ২৫ বছরের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

(ছ) ইতিপূর্বে এই সম্পত্তি অন্য কারো নিকট বিক্রেতা হস্তান্তর করেনি এই মর্মে একটি এফিডেভিট ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, সবগুলো ক্রমিক সংখ্যানুযায়ী সন্নিবেশ করতে হবে। কোন ইনডেক্সে কি আছে তার বিবরণ থাকতে হবে।

রেজিস্ট্রারের ক্ষমতা ও কর্তব্যঃ সাব-রেজিস্ট্রারের কর্তব্য হচ্ছে রেজিস্টারের বৈধ নির্দেশ মেনে চলা: জেলা রেজিস্ট্রারের নিমন্ত্রনে ও তত্তাবধানে সাব-রেজিস্ট্রার তার দায়িত্ব পালন করবেন ২(ধারা ৬৮)। উইল ব্যতীত অন্য স্থাবর সম্পত্তি রেজিস্ট্রার নিবন্ধন করলে তিনি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারকে অবহিত করবেন।

ধারা ৮০ ক হতে ৮০৩ পর্যন্ত ধারায়-টাউট সম্পর্কে ব্যাবস্থা নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রারের। সন্দেহজনক টাউট সম্পর্কে তদন্ত করা তাদের তালিকা ঝুলিয়ে দেয়া, অফিস প্রাঙ্গন হতে তাদেরকে বের করে দেয়া এবং প্রয়োজন বোধে তাদের আটক, বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারেন। এই সাব-রেজিস্ট্রারকে দেওয়ানী আদালত হিসেবে গণ্য করা হবে।

সাব-রেজিস্ট্রারের বিশেষ কর্তব্যঃ ধারা ৬৩ ক হতে ৬৫ ধারায় সাব-রেজিস্ট্রারের বিশেষ কর্তব্য সম্পর্কে বিধান রয়েছে। দলিল বর্ণিত সম্পত্তির মূল্য যদি বাজার দর থেকে কম দেখানো হয়, তাহলে তিনি উপস্থাপন কারীকে যথাযথ মূল্যমান দেখায়ে প্রয়োজনীয় ফিস ডিউটি প্রদান করার আদেশ দিতে পারেন। এটা মান্য করতে ব্যর্থ হলে তা অসাদারণ হিসেবে গণ্য হবে।

৬৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক সাব-রেজিস্ট্রার উইল ছাড়া অন্যান্য সম্পত্তির দলিল যা সম্পূর্ণ তার এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় পড়ে না সেগুলোও নিবন্ধন করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের নিকট এ সম্পর্কে একটা মেমোরেন্ডাম পাঠাবেন।

সম্পত্তি বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক জেলার রেজিস্টারের নিকট এরূপ মোমো পাঠাতে হবে। ( ধারা ৬৫)

রেজিস্ট্রারের বিশেষ কর্তব্যঃ উইল ব্যতীত অন্যাঅন্য দলিল রেজিস্ট্রার নিবন্ধন করলে তিনি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার রেজিষ্ট্রারকে অবহিত করবেন। (ধারা ৬৬)

Rate this post