উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পের উল্লিখিত অংশে ফুটপাথবাসী দুর্ভিক্ষপীড়িত নিরন্ন মানুষের কথা বলা হয়েছে।

এরকম মনে হওয়ার কারণ : মৃত্যুঞ্জয়ের একথা মনে হয়েছে। ফুটপাথের একটি মৃত্যুদৃশ্য মৃত্যুঞ্জয়কে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, তারপর থেকে ফুটপাথের মানুষেরা হয়ে উঠেছিল তার নিবিড় পর্যবেক্ষণের বিষয়। পাড়ায় পাড়ায় লঙ্গরখানা খুঁজে নিয়ে মৃত্যুঞ্জয় অন্নপ্রার্থীদের ভিড় দেখত। ডাস্টবিনের ধারে, গাছের নীচে বা খােলা ফুটপাথে যারা পড়ে থাকত, হামাগুড়ি দিয়ে গভীর রাত্রে বন্ধ দোকানের রােয়াকে উঠে যারা আশ্রয় খুঁজত কিংবা ভাের চারটে থেকে যারা লাইন দিত খাবারের জন্য, তারাই মৃত্যুঞ্জয়ের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল। কিন্তু প্রথম দিকে তাদের সঙ্গে আলাপের চেষ্টা করলেও পরে তা মৃত্যুঞ্জয় বন্ধ করে দেয়। কারণ একই ভঙ্গিতে তারা সকলেই একই দুঃখের কাহিনি বলে যেত। তাদের কোনাে নালিশ কিংবা প্রতিবাদ ছিল না।

নালিশহীনতা ও প্রতিবাদ হীনতার কারণে : দুর্ভিক্ষে উদবাস্তু হয়ে যাওয়া মানুষগুলি ফুটপাথের জীবন কি তাদের ভবিষ্যৎ মেনে নিয়েছে। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই তারা বুঝেছে যে, তারা আসলে ক্ষমতাবান মানুষদের শােষণের শিকার। এই সমাজে তাদের জীবনযাপনের অধিকার, মর্যাদা কোনােটাই স্থায়ী নয়। তাই তারা মেনে নিয়ে চলতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। ফলে তারা নালিশ ও প্রতিবাদহীন হয়ে যায়।

4/5 - (5 votes)