প্রাককথন: জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতার পটভূমিতে আছে এক নির্মল ‘ভাের’।

প্রকৃতির রূপ : সেখানে ‘আকাশের রং’ ঘাসফড়িঙের দেহের মতাে কোমল নীল। টিয়ার পালকের মতাে সবুজ পেয়ারা ও নােনার গাছ। সকালের আলােয় টলমলে শিশিরে চারদিকের বন ও আকাশ ঝিলমিল করছে। এই অসামান্য ভােরেই বেঁচে থাকার পরিসর খুঁজেছিল সুন্দর বাদামি হরিণ।

হরিণের বেঁচে থাকার উল্লাস : সারারাত এক বন থেকে অন্য বনে পালিয়ে চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে এই ভােরের আলােয় হরিণটি বেঁচে থাকার উল্লাস উপভােগ করতে চেয়েছিল। সে ভােরের আলােয় ছিড়ে খেয়েছিল কচি বাতাবিলেবুর মতাে সবুজ সুগন্ধি ঘাস আর ‘নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে’ নেমেছিল রাতজাগার ক্লান্তি মেটাতে।

নাগরিক মানুষের লালসা : ভােরের আলােয় হরিণটি যখন জীবনের উল্লাস খুঁজে নিচ্ছিল, ঠিক তখনই ভেসে আসে বন্দুকের গুলির শব্দ আর নদীর জল হরিণের রক্তে হয়ে ওঠে ‘মচকাফুলের পাপড়ির মতাে লাল’। নাগরিক মানুষের লালসা মেটাতে নিষ্পাপ হরিণটি ‘উষ্ম লাল’ মাংসে পরিণত হয়।

উপসংহার : নক্ষত্রের নীচে ঘাসের বিছানায় বসে অনেক পুরােনাে শিশিরভেজা গল্প আর সিগারেটের ধোঁয়ায় সভ্যতার যে চিহ্ন দেখা যায় তাতে স্পষ্ট হয় সভ্যসমাজের নৃশংসতায় চিরকালের ঘুমের দেশে নিম্পাপ জীবনের হারিয়ে যাওয়ার কাহিনিই।

5/5 - (1 vote)