নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস

[ সংকেত : ভূমিকা; জন্ম ও জন্মস্থান; শিক্ষাজীবন; শিক্ষা বহির্ভূত কর্মকাণ্ড; বিবাহিত জীবন; কর্মজীবন; ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তন; গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা; নোবেল পুরস্কার; নোবেল শান্তি কমিটির বক্তব্য; ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যা পেলেন; ইউনূসের পুরস্কার পসরা; উপসংহার । ]

ভূমিকা : ড. মুহাম্মদ ইউনূস হলেন এমন একজন ব্যক্তি, যিনি বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন । তিনি হলেন প্রথম বাংলাদেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী । তিনি একজন অর্থনীতিবিদ হয়েও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন । তাঁর এই প্রাপ্তি বাঙালি জাতিকে নতুন পরিচিতি দান করেছে । ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার । জন্ম ও জন্মস্থান : ২৮ জুন ১৯৪০ সালে তিনি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর বাবা হাজী দুলা মিয়া সওদাগর ও মাতা সুফিয়া খাতুন । সাত ভাই-বোনের মধ্যে অধ্যাপক ড. ইউনূস দ্বিতীয় । ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড়ো বোন । ড. ইউনূসের ছোটো দুভাইয়ের মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. ইব্রাহিম এবং অন্যজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ।

শিক্ষাজীবন : ১৯৪৫ সালে গ্রামের প্রাইমারি স্কুল মহাজন ফকিরের স্কুলেই শুরু হয় মুহাম্মদ ইউনূসের লেখাপড়া । ১৯৪৭ সালে তাঁকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের লামাবাজার প্রাইমারি স্কুলে । স্কুলটি ছিল চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত । প্রাইমারি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালের মধ্যে তিনি প্রথম হন । ক্লাস ফাইভ ও সিক্স পড়েন চট্টগ্রামের একই স্কুলে । বৃত্তি পরীক্ষা দিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জে প্রথম হন । বাবা চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে ভর্তি করাতে চাইলেও শিক্ষকদের পরামর্শে তাঁকে ভর্তি করানো হয় চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে । ১৯৫৫ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন । ৩৯ হাজার ছেলেমেয়েদের মধ্যে ১৬তম স্থান অধিকার করেন। ম্যাট্রিক পাশের পর ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে । ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর ১৯৫৭ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে । ১৯৬১ সালে তিনি এমএ পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে দেশ ত্যাগ করেন ।

শিক্ষা বহির্ভূত কর্মকাণ্ড : ম্যাট্রিক পাশের পর কলেজ জীবনে সাহিত্য পত্রিকা বের করেন, যার নাম ‘দুপাতা’। এটি ছিল সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির ‘দুপাতা’ । ‘কোহিনূর’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ড. ইউনূস যে কলাম লিখতেন তার নাম ছিল ‘হিং টিং ছট’ । বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এনামুল হকের সাথে বের করলেন সাহিত্যপত্র ‘উত্তরণ’ । ড. ইউনূস ছিলেন ঐ পত্রিকার সহ-সম্পাদক । ১৯৫২ সালে স্কাউট আন্দোলনে অংশ নিতে তিনি পাকিস্তান জাম্বুরিতে করাচি গমন করেন। ১৯৫৫ সালে বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরিতে অংশগ্রহণের জন্য কানাডা গমন করেন । ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গবেষণামূলক গ্রন্থের নাম Banker of Poor : Micro-lending and the Battle Against World Poverty, যা ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয় ।

বিবাহিত জীবন : ১৯৭০ সালে আমেরিকাতে পড়াশুনার সময় তিনি রাশিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ভিরা ফোরোস্টোনকোকে বিয়ে করেন । ঐ ঘরে তাঁর এক মেয়ে রয়েছে, যার নাম মনিকা ইউনূস । মনিকা ইউনূসের আরও একটি বড়ো পরিচয় হলো, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত অপেরা শিল্পী । ২৬ বছর বয়সে মেট্রোপলিটান অপেরার সোপানো হওয়ার সুযোগ লাভ করেন তিনি । আমেরিকা ছাড়ার আগেই ভিরার সাথে ড. ইউনূসের বিচ্ছেদ ঘটে। দেশে ফিরে আসার পর তিনি বিয়ে করেন ড. আফরোজী ইউনূসকে । তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক । এ ঘরে তাঁর একমাত্র সন্তানের নাম দীনা ইউনূস । 

কর্মজীবন : লেখাপড়া শেষ হলে কিছুদিন অধ্যাপক নূরুল ইসলাম ও রেহমান সোবহানের তত্ত্বাবধানে ব্যুরো অব ইকনমিক্‌সে কাজ করেন । এর মধ্যেই প্রভাষক হিসেবে চট্টগ্রাম কলেজে সরকারি চাকরি পান । ১৯৬১ সালে তিনি এ কলেজে যোগ দেন । ১৯৭০ সালের দিকে পিএইচডি করার সময় টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন । ১৯৭২ সালের জুন মাসে চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন । দেশে আসার পর অধ্যাপক নূরুল ইসলাম জোর করে তাকে পরিকল্পনা কমিশনে চাকরি দেন । কিন্তু মাস তিনেক পর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন । এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু করেন শিক্ষকতা । সর্বোচ্চ বেতন দিয়ে অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক করে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে ।

ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তন : বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না । বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের ফলে মানুষ অনাহারে, অর্ধাহারে কষ্ট পাচ্ছিল । এই পরিস্থিতি ইউনূসের মনে নতুন উদ্যমের সৃষ্টি করে । ইউনূস গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারেন যে, তিনি অর্থনীতির অভিজাত মতবাদ শিক্ষা দিচ্ছেন অথচ মানুষের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত করুণ । তখন এ গরিব অসহায় মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে তিনি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন । গ্রামের অসহায় লোকদের খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি শুরু করেন নতুন গবেষণা । তাদের জীবিকার উৎস অনুসন্ধান করেন । একদিন গ্রামে ঘুরে দেখেন একজন দরিদ্র মহিলা সুফিয়া বাঁশের টুল বানাচ্ছে । তিনি সেই অসহায় মহিলার সাথে কথা বলে জানতে পারেন, মহিলাটির নিজস্ব কোনো মূলধন নেই । এ কারণে তার উপার্জনের ৯৩% এরও বেশি মধ্যস্বত্বভোগীকে দিয়ে দিতে হয় । তাই তিনি দরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্যোগ নেন । মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জনতা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ম্যানেজারকে বললেন সুফিয়াদের মতো দরিদ্র কর্মীদের ঋণ দেওয়ার জন্য । ম্যানেজার রাজি হলেন না । জামানত না থাকলে ঋণ দেওয়ার বিধান নেই । অন্য একটি শাখায় গিয়েও তিনি একই কথা শুনলেন । এভাবে ছয় মাস ঘুরে নিজে গ্যারান্টার হয়ে জোবরা গ্রামে শুরু করলেন কাজ । টাকা ঋণ নিল জোবরা গ্রামের মানুষ, আবার পরিশোধও করল । ব্যাংক বলল, এক গ্রামে হয়েছে, দুই গ্রামে হবে না । কেউ বললেন পাঁচ গ্রামে হবে না । কিন্তু ইউনূস দমে যাওয়ার পাত্র নন, তিনি এই ঋণ কার্যক্রম আশপাশের গ্রামেও শুরু করে দিলেন এবং সাফল্য পেলেন । 

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা : ১৯৭৬ সালে ইউনূস তাঁর ক্ষুদ্র ঋণ ধারণাকে বাস্তবে রূপ দান করেন । জোবরা গ্রামের ক্ষুদ্রঋণ থেকেই ক্রমে ক্রমে ১৯৮৩ সালের ১ অক্টোবর ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্ম হলো । ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রমাণ করলেন, ঋণ মানুষের মানবিক অধিকার । গরিবদের ঋণ পেতে হলে কোনো বন্ধকির দরকার হবে না । ব্যাংকই তাদের কাছে যাবে, ব্যাংকে তাদের আসতে হবে না । গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য আজ দুনিয়াজোড়া আগ্রহের সৃষ্টি করেছে । যারা এই ব্যাংকের ঋণ পেয়েছে তাদের জীবনে এসেছে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন । আজ গ্রামীণ ব্যাংক একা গরিবদের যে পরিমাণ ঋণ দেয়, বাংলাদেশের সবগুলো জাতীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকও তার সমান ঋণ দিতে পারে না । যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য তাঁর শাসনামলে ড. ইউনূসকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যান এবং তাঁর সুপারিশ শোনেন । 

নোবেল পুরস্কার : ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংককে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে । এই পুরস্কারের আর্থিক মূল্যমান ১৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার । অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা প্ৰায়।

নোবেল শান্তি কমিটির বক্তব্য : নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটির এক ঘোষণাপত্রে বলা হয়, তৃণমূল পর্যায় থেকে আর্থনীতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংককে সমান দুই ভাগে এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় । বিশাল জনগোষ্ঠী যদি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসার পথ না পায় তাহলে দীর্ঘকালীন শান্তি অর্জন করা সম্ভব নয় । ক্ষুদ্রঋণের অর্থই হচ্ছে এরকম । তৃণমূল পর্যায় থেকে এই উন্নয়ন গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের অগ্রগতিতে বিরাট কাজে আসে । মুহাম্মদ ইউনূস নিজেকে এমন একজন নেতা হিসেবে প্রমাণ করেছেন, যিনি শুধু বাংলাদেশ নয়; বিশ্বের অন্যান্য দেশের লাখ লাখ মানুষের কল্যাণে তাঁর দর্শনকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন । নোবেল শান্তি কমিটির ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়, কোনো প্রকার আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়াই লোকজনকে ঋণ দেওয়াটা অসম্ভব ব্যাপার বলে মনে হতো । তিন দশক আগে সাদামাটাভাবে শুরুর পর ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ক্ষুদ্রঋণকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারে পরিণত করেছেন । সংস্কৃতি এবং সভ্যতার মাধ্যমে ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক দেখিয়ে দিয়েছে— দরিদ্রের চেয়ে দরিদ্ররাও নিজেরা নিজেদের উন্নয়নে কাজ করতে পারে । 

ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক যা পেলেন : প্রথা অনুযায়ী রাজকীয় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে নরওয়ের রাজধানী অসলোর সিটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে ১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেন ড. ইউনূস । নোবেল পুরস্কার হিসেবে ড. ইউনূস ও তার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক পেয়েছিল নগদ ১ কোটি ক্রোনার বা ১০ লাখ ৭০ হাজার ইউরো বা ১৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার, যা টাকার মূল্যমানে ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা । তাছাড়াও পেয়েছেন একটি সোনার পদক ও একটি ডিপ্লোমা ।

ইউনূসের পুরস্কার পসরা : পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার আগে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও ৬০টি পুরস্কার লাভ করেছেন । কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ নানা সম্মানে ভূষিত ইউনূসের খ্যাতি আজ আকাশ ছোঁয়া । তাঁর আন্তর্জাতিকভাবে প্রাপ্ত পুরস্কারের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো :

রাষ্ট্রপতি পুরস্কার ১৯৭৮, বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার ১৯৮৫, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ১৯৮৭, রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল পুরস্কার ১৯৯৩, ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম গোল্ড মেডেল পুরস্কার ১৯৯৪, ঢাকা মেট্রোপলিটান রোটারি ক্লাব ফাউন্ডেশন পুরস্কার ১৯৯৫, আইডিইবি স্বর্ণপদক ২০০২ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি স্বর্ণপদক ২০০৫ ।

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ৭টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্যের ২টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন দেশের ১৩টিসহ মোট ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন ড. ইউনূস । বিশেষ সম্মানসূচক পদবি পান জাতিসংঘ ও ফ্রান্স থেকে । ২০০২ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক দেওয়া হয় International Goodwill Ambassador for UNAIDS. ২০০৪ সালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক তাকে প্রদান করেন সেদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘লিজিয়ান অব অনার’ । বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁকে সম্মানসূচক পদবিতেও ভূষিত করা হয় ।

উপসংহার : নোবেল পুরস্কার পৃথিবীর সবচেয়ে গৌরবসূচক ও সম্মানজনক পুরস্কার । দীর্ঘ ৯৩ বছরের মধ্যে এ পর্যন্ত তিনজন বাঙালিকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করেছে সুইডিশ একাডেমি । এর সূচনা হয়েছিল কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের মাধ্যমে ১৯১৩ সালে । ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান অমর্ত্য সেন এবং ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস । কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের এটাই প্রথম নোবেল পুরস্কার অর্জন । ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের গর্ব । তাঁর অর্জিত নোবেল পুরস্কার শুধু তাঁর ব্যক্তিগত সম্মানই নয়— এটি আমাদের জাতির জন্যও অত্যন্ত গৌরবের ব্যাপার ।

Rate this post