জাতির সংজ্ঞা ও প্রকৃতি:

জাতি হল এমন এক জনসমাজ যা ক্রমবিকাশের পথে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। অর্থাৎ জাতি জনসমাজেরই চূড়ান্ত রূপ। জনসমাজ বলতে মোটামুটি একই ধরনের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত জনসমষ্টিকে বোঝান হয়। আর জাতীয় জনসমাজ বলতে সম-ভাবনায় ভাবিত সেই জনসমাজের কথা বলা হয় যা তার স্বতন্ত্র সত্তা সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন হয়েছে। সুতরাং জাতীয় জনসমাজ (Nationality) জনসমাজেরই (People) পরবর্তী উন্নততর পর্যায়। জাতীয় জনসমাজের স্বাতন্ত্র্যকামিতা প্রসারিত হয়ে যখন পৃথক রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের দাবিতে দানা বাঁধে তখন জাতির (Nation) উদ্ভব হয়। জনসমাজ জাতীয় স্তরে এসে পৌঁছায় তখনই যখন তারা তাদের চিন্তা-ভাবনা ও বৈশিষ্ট্যগুলিকে তাদের নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী পৃথকভাবে রূপদানের জন্য নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে অর্থাৎ রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতে পেলে এই জনসমষ্টি নিজেদের স্বতন্ত্র সত্তা ও বৈশিষ্ট্যের বিকাশ সাধন করতে এবং তার জাতীয়তাবোধকে বাস্তবে রূপদান করতে পারে। এই উপলব্ধি হল রাজনীতিক চেতনার উপলব্ধি। সুতরাং পৃথক রাষ্ট্র গঠনের যে আন্দোলন বা অধিকার লাভ তাই-ই হল জাতীয় জনসমাজের জাতিতে উত্তরণের পর্যায়। নিজ রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের মাধ্যমেই জাতি তার পরিপূর্ণতা লাভ করে।

ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকেই ‘জাতি’ (Nation) শব্দটির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। বলা হয় যে, ‘নাসসিও’ (Nascio) এই লাতিন শব্দটি থেকে ইংরেজী ‘Nation’ শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট লাতিন শব্দটির অর্থ হল জন্মান। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার যে, ‘নাসিও’ (Natio) এই শব্দটির অর্থ হল জন্মগতভাবে বা জন্মগত বিচারে ঐক্যবদ্ধ এক মানবগোষ্ঠী। সুতরাং প্রচলিত মূলগত অর্থের বিচারে ‘জাতি’ কথার মানে হল প্রজননগত বা বংশগত বিচারে একটি জনগোষ্ঠী। কিন্তু এই জনগোষ্ঠী কোন রকম রাজনীতিক তাৎপর্যহীন। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকের আগে অবধি ‘জাতি’ শব্দের কোন রকম রাজনীতিক ব্যঞ্জনা ছিল না। কিন্তু অতঃপর ‘জাতি’ শব্দটির সঙ্গে রাজনীতিক ধারণা সংযুক্ত হয়। এরপর থেকে ব্যক্তিবর্গ এবং গোষ্ঠীসমূহের শ্রেণীকরণ করা হয় জাতীয়তার বিচারে।

লর্ড ব্রাইস (Bryce) ও গিলক্রিস্ট (R. N. Gilchist): লর্ড ব্রাইস বলেছেন: “জাতি হল রাষ্ট্রনীতিকভাবে সংগঠিত বহিঃশাসন হতে মুক্ত অথবা মুক্তিকামী একটি জনসমাজ (“…a nation is a nationality which has organised itself into a political body either independent or desiring to be independent.”)। গিলক্রিস্ট-এর মতানুসারে, জাতি বলতে রাষ্ট্রাধীন এক সুগঠিত জনসমাজকে বোঝায়। তিনি বলেছেন: “Nation…is the state plus something else, the state looked at from certain point of view, viz., that of the unity of the people organised into one state.”

হায়েস ও গার্ণার: বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা জাতি ও জাতীয় জনসমাজের সূক্ষ্ম পার্থক্য স্বীকার করেন। তাঁরা রাজনীতিক সচেতনতার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। বস্তুত রাজনীতিক চেতনার গভীরতাই জাতিকে জাতীয় জনসমাজ থেকে স্বতন্ত্র করে। হায়েস (Hayes)-এর মতে একটি জাতীয় জনসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সার্বভৌম স্বাধীনতা অর্জন করলে জাতিতে পরিণত হয়। তিনি বলেছেন: “A nationality by acquiring unity and sovereign independence becomes a nation.” গার্ণারের অভিমত অনুসারে জাতি বলতে বোঝায় রাষ্ট্রনীতিকভাবে সংগঠিত এক জনগোষ্ঠীকে। কেবলমাত্র আত্মিক বা সাংস্কৃতিক সূত্রে আবদ্ধ জনগোষ্ঠীকে জাতি বলা হয় না।

স্তালিনের অভিমত: মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক বস্তুবাদ অনুসারে স্তালিন (J. V. Stalin) জাতির সংজ্ঞা ও প্রকৃতি ব্যাখ্যা করেছেন। ‘মার্কসবাদ ও জাতিসমস্যা’ শীর্ষক প্রবন্ধে স্তালিন জাতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। তাঁর মতানুসারে জাতি হল একটি বিশেষ জনসমষ্টি। এই জনসমষ্টি ঐতিহাসিকভাবে গড়ে উঠে। তা ছাড়া এই জনসমষ্টি হল স্থায়ী। জাতির প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য হিসাবে তিনি অভিন্ন ভাষা, বাসভূমি, আর্থনীতিক জীবন, মানসিক গঠন ও সাধারণ সংস্কৃতির কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন: ‘জাতি বলতে ঐতিহাসিকভাবে বিবর্তিত এমন একটি স্থায়ী জনসমাজকে বোঝায় যারা এক ভাষা, এক বাসভূমি, এক আর্থনীতিক জীবন ও এক মানসিক গঠনের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এবং যার এই মানসিক গঠন সাধারণ সংস্কৃতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

অতএব সংক্ষেপে বলা যায়, গভীরভাবে ঐক্যবদ্ধ জনসমাজ হল জাতীয় জনসমাজ এবং রাষ্ট্রনীতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও রাজনীতিকভাবে সংগঠিত জাতীয় জনসমাজ হল জাতি। নিম্নলিখিত একটি সরল গাণিতিক পদ্ধতি প্রয়োগ করেও আমরা এই ধারণাত্রয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক বুঝে নিতে পারি :

(১) জনসমাজ (People) = একই ধরনের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত জনসমষ্টি (An aggregate revealing certain common ways of life)।

(২) জাতীয় জনসমাজ (Nationality) = জনসমাজ + গভীরভাবে ঐক্যবদ্ধ স্বতন্ত্র সমাজচেতনা (People + Feeling of oneness )

(৩) জাতি (Nation) = জাতীয় জনসমাজ + রাষ্ট্রনৈতিক সংগঠন (Nationality + Political unity)।

জাতি গঠনের উদাহরণ:

উদাহরণস্বরূপ ভারতবর্ষের কথা বলা যায়। মুঘল আমল পর্যন্ত বা ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ পর্যন্ত ভারতবর্ষের জনসমষ্টি ধীরে ধীরে একটি ভারতীয় জনসমাজের রূপ ধারণ করেছিল। বহুবিচিত্র ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়েও দীর্ঘকাল একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মধ্যে পাশাপাশি বাস করে এবং বিভিন্ন ধরনের আর্থনীতিক ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপের আদান-প্রদানের ফলে কিছু সমধর্মী জীবনধারা গড়ে উঠেছিল। ব্রিটিশরাজ প্রবর্তিত হওয়ার ফলে যে কেবল ভারতীয় জনসমাজের (People) অস্তিত্ব সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হওয়া গেল তা নয়, বিদেশী শাসনের ফলস্বরূপ এই ভূখণ্ডের অধিবাসীদের একটা অন্তর্নিহিত ঐক্যের ধারা ধীরে ধীরে প্রকাশিত হল। অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলেই ভারতীয় জনসমাজ এক ‘জাতীয় জনসমাজ’ (Nationality)-এ রূপান্তরিত হল। ভারতের মানুষ নতুনভাবে এক স্বতন্ত্র সমাজচেতনায় আপ্লুত হল। বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণ (Renaissance) এই ‘জাতীয় জনসমাজ’-এর পর্যায়কেই নির্দেশ করে। এই ভারতীয় জাতীয় জনসমাজ (Indian Nationality) ভারতীয় জাতি (Indian Nation)-তে উত্তীর্ণ হল ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ধাপে। নবজাগরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের আবির্ভাব, কোম্পানীর আমলের অবসান, ১৮৫৭-এর সিপাহী বিদ্রোহ এবং শেষ পর্যন্ত ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের জন্ম—এই সব অবস্থা ও ঘটনাগুলিই ভারতের মানুষের জাতি গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। কালক্রম অনুযায়ী ১৮৮৫ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষের মানুষের জাতীয় ভাবটির পরিপক্কতার পর্যায়। তাই ঐ সময়টি ভারতের জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন নামে চিহ্নিত। ভারতের জাতীয় জনসমাজ তখন ভারতীয় জাতিতে পরিণত। ১৯৪৭ সালের ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে এই ভারতীয় জাতি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জাতি-রাষ্ট্র (Nation-State) গঠনের অধিকার পেল।


জাতি ও জাতীয় জনসমাজ সম্পর্কে মার্কসীয় ধারণা

মূলত আর্থনীতিক উপাদানের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা: মার্কসীয় দর্শনে আর্থনীতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাস ও যাবতীয় ঐতিহাসিক ঘটনার বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। মার্কসবাদীরা জাত ও জাতীয় জনসমাজের বিষয়টিকেও মূলত আর্থনীতিক দিক থেকে বিবেচনা করে থাকেন। তবে আলোচ্য ধারণা দু’টি বিচার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মার্কসবাদীরা ভৌগোলিক, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক উপাদানকেও গুরুত্ব দেন। তবে আর্থনীতিক উপাদানের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। মার্কসবাদীদের মতানুসারে আর্থনীতিক অখণ্ড বন্ধনের মাধ্যমে একটি জনগোষ্ঠী এক জাতি এক প্রাণে পরিণত হয়। একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে আর্থনীতিক চেতনা ও রাজনীতিক অগ্রগতি এক অভিন্ন মনস্তত্ত্বের সৃষ্টি করে। ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও জীবনযাত্রার সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে জনগোষ্ঠীর এই সাধারণ মনস্তত্ত্ব প্রকাশিত হয়। স্তালিন (Stalin) -এর মতানুসারে, ভাষা, বাসভূমি, আর্থনীতিক জীবন এবং নির্দিষ্ট জাতীয় সংস্কৃতি হিসাবে ব্যক্ত মননভঙ্গি—এই উপাদানগুলির সম্মিলনের মাধ্যমে ঐতিহাসিকভাবে গঠিত একটি স্থায়ী জনসমষ্টি হল জাতি’ (“A nation is a historically evolved stable community of language, territory, economic life and psychological make up manifested in a community of culture.”)।

মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে জাতি বলতে যে জনগোষ্ঠীকে বোঝায় তা জাতীয় জনসমাজের থেকে অধিকতর স্থায়ী। লেনিন (V.I. Lenin) -এর মতানুসারে জাতির এই স্থায়িত্বের মূল কারণ হল গভীর আর্থনীতিক উপাদান (profound economic factors )।


জাতি ও রাষ্ট্র মধ্যে পার্থক্য

স্বাধীন রাজনীতিক সংগঠনের মাধ্যমে জাতীয় জনসমাজ জাতিতে পরিণত হয়। এই কারণে সাধারণভাবে মনে করা হয় যে, জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে পার্থক্য নেই। কিন্তু প্রকৃত বিচারে জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বর্তমান। গিলক্রিস্ট এবং হায়েস উভয়ের মধ্যে পার্থক্য প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন।

(১) রাষ্ট্র গঠিত হয় চারটি উপাদান নিয়ে। এই উপাদান চারটি হল: জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমিকতা। কিন্তু জাতি গঠনের জন্য এই উপাদানগুলি লাগে না। জনসমাজের মধ্যে গভীর ঐক্য হল জাতি গঠনের মূল উপাদান। এই ঐক্য বিভিন্নভাবে জনসমাজের মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারে।

(২) রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। এই ক্ষমতার অধিকার রাষ্ট্রকে বিশিষ্টতা প্রদান করেছে। রাষ্ট্রের হাতে কেন্দ্রীভূত এই ক্ষমতা সরকারের মাধ্যমে প্রযুক্ত হয়। জাতি বলতে যা বোঝায় তার সার্বভৌম ক্ষমতা বা ক্ষমতা প্রয়োগের যন্ত্র সরকার নেই। রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও ইচ্ছা সরকারের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু জাতির এ রকম কোন সরকার নেই। 

(৩) একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে একটি জনসমাজ আইনগতভাবে সংগঠিত হলে রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। কিন্তু জাতি বলতে এমন এক জনসমাজকে বোঝায় যাদের মধ্যে একসঙ্গে বসবাসের সাধারণ ইচ্ছা আছে এবং যারা মনস্তাত্ত্বিকভাবে সংগঠিত।

(৪) রাষ্ট্র একজাতি-ভিত্তিক বা বহুজাতি-ভিত্তিক হতে পারে। একজাতি-ভিত্তিক রাষ্ট্রের উদাহরণ হল: জার্মানী, জাপান, হাঙ্গেরী, সুইডেন প্রভৃতি। অপরদিকে বহুজাতিক-ভিত্তিক রাষ্ট্রের উদাহরণ হলঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, গণ-প্রজাতন্ত্রী চীন, সুইজারল্যাণ্ড, সুইডেন প্রভৃতি। রাষ্ট্র ও জাতির সীমানা বা আয়তন খুব কম ক্ষেত্রেই সমানুপাতিক হয়। গার্ণার বলেছেন: “In fact they rarely coincide. ” রাষ্ট্রের সীমানা যেমন জাতীয় সীমানাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, তেমনি জাতির সীমানাও রাষ্ট্রের সীমানাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।

(৫) জাতির নিজস্ব রাষ্ট্র বিলুপ্ত হতে পারে, এতদ্‌সত্ত্বেও জাতি টিকে থাকতে পারে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে রাষ্ট্র হিসাবে জাপান ও জার্মানীর পতন ঘটে। কিন্তু জাতি হিসাবে জার্মান ও জাপানিগণ টিকে ছিল। 

(৬) রাষ্ট্র হল একটি আইনগত ধারণা। এর রাজনীতিক বাস্তবতা বিরোধ-বিতর্কের ঊর্ধ্বে। কিন্তু জাতি হল একটি ভাবগত বা মনস্তাত্ত্বিক ধারণা। এ হল এক মনস্তাত্ত্বিক অনুভূতির দ্বারা ঐক্যের চেতনা। 

(৭) রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকে জনগণের আনুগত্যের উপর। কিন্তু জাতি প্রতিষ্ঠিত থাকে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ চেতনার উপর।

উপসংহার: উভয়ের মধ্যে পার্থক্য সত্ত্বেও জাতি এবং রাষ্ট্র পরস্পরের পরিপূরক। এদের মধ্যে পারস্পরিক গভীর সম্পর্ক বর্তমান। জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দাবির অর্থ হল স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি বা উদ্যোগ। জাতির প্রচেষ্টার ভিত্তিতেই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। তেমনি আবার জাতি পূর্ণতা লাভ করে রাষ্ট্রের মধ্যেই। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (United Nations Organisation) এই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি হল সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির সংগঠন। কিন্তু একে ‘রাষ্ট্রপুঞ্জ’ না বলে ‘জাতিপুঞ্জ’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক স্তরে জাতি হিসাবে রাষ্ট্র পরিচিতি পায়।

Rate this post