শিক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চশিক্ষার সুযােগ সকলের নিকট পৌছে দেওয়ার জন্য জাতীয় শিক্ষানীতি (১৯৮৬ খ্রি.)-তে দূরাগত শিক্ষা বিষয়ে সংস্থান রাখা হয়েছে। যেমন— পত্রের মাধ্যমে শিক্ষা, টিভির মাধ্যমে শিক্ষা, রেডিয়ামের মাধ্যমে শিক্ষা প্রভৃতি। এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি (১৯৮৬ খ্রি.)-তে উল্লিখিত নীতি গুলি হল—

(১) শিক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উচ্চশিক্ষার সুযােগ সকলের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য NEP-1986-তে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এই উদ্দেশ্যেই ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (Indira Gandhi National Open University) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই শিক্ষানীতিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটির শক্তিশালী ও সার্বিক উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া হবে।

(২) প্রতিটি রাজ্যে এই ধরনের মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় খােলার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হবে।

(৩) মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য বয়সের কোন বাধা থাকবে না।

(৪) শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠদান করানো হবে।

(৫) চাকরিরত অবস্থায় অথবা যারা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাননি তারা এই সমস্ত মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলো থেকে পড়ার সুযোগ পাবেন।

(৬) শিক্ষার্থীদের পড়ার জন্য উপযুক্ত মানের Course Material দেওয়া হবে।

(৭) প্রত্যেকটি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিয়ে এই Course Material প্রস্তুত করানো হবে।

(৮) Counselling- এর জন্য বিভিন্ন স্থানে Study Centre থাকবে।

(৯) Study Centre গুলোতে ছুটির দিনে অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

(১০) Study Centre গুলিতে শিক্ষা প্রদানের জন্য টিভি, টেপরেকর্ডার, কম্পিউটার প্রভৃতি উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে।

(১১) দূরাগত শিক্ষার মাধ্যমে পড়াশোনা করলে শিক্ষার্থীদের উপার্জনের  সুযোগ করে দেওয়া যায়।

(১২) প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় ভর্তির চাপ কমানোর জন্য দূরাগত শিক্ষা চালু করার কথা বলা হয়।

(১৩) দূরাগত শিক্ষায় ভর্তির জন্য কোন বয়সের বাধা থাকবে না।

(১৪) শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা ও পরামর্শদানের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।

পিছিয়ে পড়া বা আর্থসামাজিক কারণে যারা শিক্ষা থেকে বঞিত তাদের জন্য দূরশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ আশার আলো দেখিয়েছে। নিরক্ষরতা দূরীকরণে দূরাগত শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

Rate this post