আমলাতন্ত্রের আলোচনা সাম্প্রতিককালের বিষয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকেও জনপালন কৃত্যক বা আমলাতন্ত্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার সৃষ্টি হয়নি। ঊনবিংশ শতাব্দীতেই ইংল্যাণ্ডে আমলাতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার সৃষ্টি হয়। তাই বলা হয় যে আমলাতন্ত্র হল ঊনবিংশ শতাব্দীর ইংল্যাণ্ডে শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক উদ্ভাবন। ওয়ালাস তাঁর The Process of Government গ্রন্থে বলেছেন: “The creation of this service is one of the great political invention in this nineteenth century England.” ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে যে সমস্ত গ্রন্থাদি রচিত হয়েছে সেগুলিতে আমলাতন্ত্রের আলোচনা গুরুত্ব পেয়েছে। লাওয়েলের Government of England প্রকাশিত হয় ১৯০৮ সালে। এই গ্রন্থে প্রথম রাষ্ট্রকৃত্যক ‘বা আমলাদের সম্পর্কে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়েছে।

আমলাতন্ত্রের অর্থ

আমলাতন্ত্র কাকে বলে? আমলাতন্ত্রের কোন সুনির্দিষ্ট ও সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা নির্দেশ করা সহজ নয়। রাষ্ট্রপ্রধান ও মন্ত্রীদের নিয়ে শাসন-বিভাগের যে সকল স্থায়ী কর্মচারী থাকেন তাঁদের সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রকৃত্যক (Civil Servants) বলা হয়। বর্তমান সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় এই সকল স্থায়ী কর্মচারিগণ ‘আমলা’ (Bureaucrat) হিসাবে অধিক পরিচিত। এঁদের দ্বারা পরিচালিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা ‘আমলাতন্ত্র’ (Bureaucracy) নামে অভিহিত হয়। রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবস্থায় আমলারা হলেন সরকারের অ-রাজনীতিক (non-political) অংশ। জনকল্যাণমূলক তত্ত্ব, সমাজতান্ত্রিক আদর্শ, সামাজিক ও আর্থনীতিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রভৃতি বহুবিধ জটিল সমস্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সরকারের দায়-দায়িত্ব অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনিক কলাকৌশলের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার অভাব-হেতু মন্ত্রিমণ্ডলী বা রাজনীতিক প্রশাসকগণের পক্ষে সকলক্ষেত্রে প্রশাসনিক নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয় না। ফলে তাঁরা শাসন-বিভাগের স্থায়ী কর্মচারী বা অ-রাজনীতিক অংশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সাফল্য বহুলাংশে স্থায়ী সরকারী কর্মচারীদের উপর নির্ভরশীল। ল্যাস্কি মন্তব্য করেছেন: “Every state is enormously dependent upon the quality of its public officials.” তাই প্রতিনিধিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আমলাদের ভূমিকার গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। তাই প্রত্যেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনানুসারে এবং নিয়মিত প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে স্থায়ী সরকারী কর্মচারী বা আমলাগণ থাকেন।

আমলাতন্ত্রের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ:

অনেক ক্ষেত্রে নিন্দাসূচক অর্থে ‘আমলাতন্ত্র’ কথাটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে ‘আমলাতন্ত্র’ শব্দটির সঙ্গে একটি বিকৃত ধারণা বা নিন্দাসূচক অর্থ জড়িয়ে আছে। আমলাতন্ত্র বলতে এখন সরকারী কর্মচারীদের প্রশাসনিক নিয়মকানুনের প্রতি অন্ধ আনুগত্য, দীর্ঘসূত্রতা, অনমনীয়তা, দপ্তর ঘেঁসা মানসিকতা, ঔদাসীন্য, স্বেচ্ছাচারিতা, সৌজন্যবোধ ও মানবিকতার অভাব প্রভৃতি ধারণার কথা মনে আসে। বস্তুত আমলাতন্ত্র হল একটি সাংগঠনিক ব্যবস্থা যার দ্বারা সরকারী প্রশাসন পরিচালনা করা হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে আমলাদের ভূমিকার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। শব্দগত বিচারে আমলাতন্ত্র বা ইংরেজী ‘ব্যুরোক্রেসী’ (Bureaucracy) শব্দটি ফরাসী শব্দ ‘ব্যুরো’ (Bureau) এবং গ্রীক শব্দ ‘ক্রেটিন’ (Kratein)-এর সমাহারে সৃষ্ট। লেখার টেবিল বা ডেস্ক (desk) অর্থে ‘ব্যুরো’ এবং শাসন অথে ‘ক্রেটিন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। সুতরাং ব্যুৎপত্তিগত অর্থে আমলাতন্ত্র বা ‘ব্যুরোক্রেসী’ হল ‘টেবিল-শাসনব্যবস্থা’ (desk-government)। তবে বর্তমানে এক একটি দপ্তর অর্থেও ‘ব্যুরো’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এই দিক থেকে আমলাতন্ত্র অর্থে বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে শাসন পরিচালনাকে বোঝানো হয়।

রাজনীতিক ও অ-রাজনীতিক প্রশাসক: বর্তমান গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ দুটি অংশে বিভক্ত। এই দু’টি অংশ হল রাজনীতিক প্রশাসক (Political Executive) ও অ-রাজনীতিক প্রশাসক (Non-Political Executive)। এই অ-রাজনীতিক প্রশাসকদের রাষ্ট্রকৃত্যক বা জনপালন কৃত্যক (Civil Service) বলে। রাজনীতিক প্রশাসক বলতে রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী প্রভৃতি পদাধিকারীদের বোঝায়। এঁরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হন এবং এই রাজনীতিক প্রশাসকগণ তাঁদের কাজকর্মের জন্য জনগণের কাছে দায়িত্বশীল থাকেন। শাসন-বিভাগের অ-রাজনীতিক অংশ বলতে প্রশাসনিক কাজে স্থায়িভাবে নিযুক্ত সরকারী কর্মচারীদের (Permanent Executive) বোঝায়। এঁদেরই রাষ্ট্রকৃত্যক বা জনপালন কৃত্যক (Civil Service) বলা হয়। আশিরবথম তাঁর Political Theory গ্রন্থে বলেছেন: “The civil service constitutes the permanent executive in modern state. While the Parliament, the Cabinet and the President may reign, it is the civil service which really governs.” এই রাষ্ট্রকৃত্যক বা জনপালন কৃত্যকই হল আধুনিক রাষ্ট্রের স্থায়ী শাসন-বিভাগ। দেশের প্রকৃত শাসন পরিচালনার দায়িত্ব এঁদের উপরই ন্যস্ত থাকে। এই রাষ্ট্রকৃত্যক, বিশেষত পদস্থ সরকারী কর্মচারীদের ‘আমলা’ (Bureaucrat) বলে। আর ‘আমলাতন্ত্র’ হল আমলাদের দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থা।

আমলাতন্ত্রের বিভিন্ন সংজ্ঞা:

প্রত্যেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিয়মিতভাবে এবং আইনানুসারে শাসনকার্য পরিচালনার জন্য স্থায়ী সরকারী কর্মচারী থাকেন। এই স্থায়ী সরকারী কর্মচারীদের সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রকৃত্যক বা আমলা বলে। আধুনিক শাসনব্যবস্থায় এঁদেরই আমলাতন্ত্র বলা হয়ে থাকে। স্থায়ী, অভিজ্ঞ ও বেতনভুক্ একদল সরকারী কর্মচারীকে নিয়ে আমলাতন্ত্র গঠিত হয়। ফাইনার আমলাতন্ত্রের সংজ্ঞা সম্পর্কে বলেছেন: “…a body of officials, permanent paid and skilled.” আমলাতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মুখ্যত স্থায়ী সরকারী কর্মচারীরাই সরকারের কার্যাবলী সম্পাদন করেন। গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ এবং সরকারী সিদ্ধান্ত রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করেন। গার্নার তাঁর Political Science and Government গ্রন্থে বলেছেন: “Strictly speaking a bureaucratic government is one which is‌ carried on largely by ministerial bureaus and in which important politics are determined. and decisions rendered by the administrative chiefs of such bureaus.” (Political Science গ্রন্থে আমলাতন্ত্রের ধারণা ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতানুসারে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে নিযুক্ত কর্মচারীদের রাষ্ট্রকৃত্যক বলা হয়। এই সরকারী কর্মচারীদের সঙ্গে আইন ও বিচার-বিভাগীয় কর্মচারীদের‌ এবং সৈন্যবাহিনীর পার্থক্য আছে। অগ তাঁর English Government and Politics গ্রন্থে রাষ্ট্রকৃত্যকের ধারণা ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতানুসারে এ হল নর-নারীর এক বিশাল বাহিনী। এই বাহিনী সমগ্র দেশে আইনকে বলবৎ করে এবং দেশবাসীর সঙ্গে জাতীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। অ্যালমণ্ড ও পাওয়েল তাঁদের Comparative Politics গ্রন্থে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁদের মতানুসারে আমলাতন্ত্র হল ব্যাপক সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে শাসকগণ বা আইন প্রণেতারা (rulers or rule-makers) তাঁদের সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপায়িত করার ব্যবস্থা করেন।

আমলাতন্ত্র সম্পর্কে‌ ওয়েবারের অভিমত:

ম্যাক্স ওয়েবার তাঁর Essays on Sociology গ্রন্থে আমলাতন্ত্র সম্পর্কে‌ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনা মূলত সমাজতান্ত্রিক। তিনি বলেছেন: “(Bureaucracy) is a system of administration characterised by expertness, impartiality and the absence of humanity.” তাঁর মতানুসারে যদি কোন সংস্থা বা সংগঠন আয়তনের বিশাল আকার ধারণ‌ করে, তা হলে সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য একদিকে দরকার নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি এবং সঙ্গে সঙ্গে দরকার একদল বিশেষ পরিচালকের। এই সব ব্যক্তি নির্দিষ্ট পরিধির মধ্যে ক্রমোচ্চ শ্রেণী-কাঠামোর ভিত্তিতে সংগঠিত। তাঁরা নির্ধারিত কাজ দায়িত্বের সঙ্গে এবং সঠিকভাবে সম্পাদন করেন। সরকারী কৃত্যকের সকল পদাধিকারী ব্যক্তি আমলাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। তবে পদমর্যাদা অনুসারে এঁদের ঊর্ধ্বাধঃ শ্রেণীবিন্যাস থাকে। ক্রমকাঠামো অনুসারে তাঁরা অধঃস্তন থেকে ঊর্ধ্বতন নানা স্তরে অবস্থিত। ওয়েবার বলেছেন: “The body of officials activity engaged in public office, along with the respective apparatus or material implements and the files make up a bureau.”

আমলাতন্ত্র সম্পর্কে‌ অ্যালমণ্ড ও পাওয়েলের অভিমত:

পরস্পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের একটি সংগঠিত প্রশাসনকেই আমলাতন্ত্র বলা হয়ে থাকে। আমলাতন্ত্র হল প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত এমন একটি সংগঠন যেখানে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ পরস্পরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। অ্যালমণ্ড ও পাওয়েল-এর মতানুসারে আমলাতন্ত্র বলতে এমন এক ব্যাপক সংগঠনকে বোঝানো হয়ে থাকে যার মাধ্যমে শাসক বা আইন প্রণয়নকারিগণ নিজেদের সিদ্ধান্তকে বলবৎ করার চেষ্টা করেন। এই দুই চিন্তাবিদ তাঁদের Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন: “…when we speak of bureaucracies we are referring to the relatively elaborate organisation through which the rulers or rule-makers seek to implement their decision.” তবে আমলাতন্ত্র রাষ্ট্রীয় প্রশাসকদের উচ্চস্তরের সঙ্গেই জড়িত। উচ্চপদস্থ বিশেষ যোগ্যতা সম্পন্ন বা বিশেষজ্ঞ স্থায়ী সরকারী কর্মচারীদের আমলা বলা হয়—নিম্নস্তরের সরকারী কর্মচারীদের নয়।

আমলাতন্ত্র সম্পর্কে‌ গার্নার ও ফাইনারের অভিমত:

গার্নারের মতানুসারে আমলাতন্ত্র হল এমন এক শাসনব্যবস্থা যেখানে সরকারী কাজকর্ম মূলত বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে সম্পাদন করা হয় এবং দপ্তরের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিগণ সরকারী নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। ফাইনারের মতানুসারে আমলাতন্ত্র বলতে স্থায়ী, অভিজ্ঞ ও বেতনভুক্ত কর্মচারীদের দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়। তিনি বলেছেন: “The civil service is a professional body of officials, permanent, paid and skilled.” এই সমস্ত স্থায়ী কর্মচারীরা সরকারী নীতি ও কর্মসূচীকে কার্যকরী করার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় কাজে আত্মনিয়োগ করাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে থাকেন।

আমলাতন্ত্র একটি সার্বজনীন ধারণা। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্বের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই কম বেশি আমলা দ্বারা পরিচালিত। আধুনিক রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা বহুলাংশে আমলাদের উপরই নির্ভরশীল।

Bureaucracy” শব্দটি যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত সুপরিচিত একটি শব্দ। আমলাতন্ত্রের যেমনিভাবে ব্যাপক সুনাম রয়েছে তেমনিভাবে এর সমালোচনা রয়েছে অনেক। কখনো কখনো এটি তার নিয়ম পদ্ধতির বাইরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। আর অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ।

আমলাতন্ত্রের শাব্দিক অর্থ : আমলাতন্ত্রের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো— ‘Bureaucracy‘। শব্দটি ফরাসী শব্দ ‘Bureau‘ ও গ্রীক শব্দ ‘Kratein‘ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ হচ্ছে ‘Desk Government’ – তাই উৎপত্তিগত অর্থে আমলাতন্ত্র হলো দপ্তর সরকার বা ‘Desk Government.

আমলাতন্ত্র : আধুনিককালে যে কোনো প্রশাসনই আমলানির্ভর। আমলাতন্ত্রের সূত্রপাত হয়েছে সেনাবাহিনীতে। বর্তমানে এটি প্রশাসনের একটি অপরিহার্য সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আমলাতন্ত্রের জনক যদিও ম্যাক্স ওয়েবারকে বলা হয়, পরবর্তীতে বিভিন্ন দার্শনিক এর সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।

পারিভাষিক সংজ্ঞা : সাধারণত আমলাতন্ত্র বলতে আমলাদের কর্তৃত পরিচালিত শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায় । সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচিকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য যে কর্তৃক ব্যবস্থা মানবশক্তি, কার্যালয় ও বিভিন্ন কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেন, তারই সমষ্টিকে আমলাতন্ত্র বলা হয়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে আমলাতন্ত্রের যে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন তা নিম্নে তুলে ধরা হলো :

অধ্যাপক ফাইনার এর মতে, The civil service is body of officials permanent paid and skilled. অর্থাৎ আমলাতন্ত্র একটি স্থায়ী বেতনভুক্ত এবং দক্ষ চাকরিজীবী শ্রেণি।

Paul H. Apleby এর ভাষায়, আমলাতন্ত্র বলতে অসংখ্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে ও জটিল শর্তে সুশৃঙ্খলভাবে পরস্পর একত্রিত হওয়াকে বুঝায়।

আধুনিক সরকার ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাষ্ট্রীয় শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গণতন্ত্রে আমলাতন্ত্র বহুবিধ কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। তবে আমলাতন্ত্র যে সর্বদা নন্দিত তা কিন্তু নয়। আমলাতন্ত্রে কতিপয় ত্রুটি বিদ্যমান। বিরুদ্ধবাদীরা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এর সমালোচনা করেছেন। যা আমলাতন্ত্রকে সীমিত করেছে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা :

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের ভূমিকা ও কার্যাবলি নিম্নরূপ-:

১। নীতি নির্ধারণ : রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণ আমলাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র নীতি নির্ধারণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমলাগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২। আইন প্রণয়ন : আইন প্রণয়ন করা আমলাতন্ত্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আমলারা আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আইন প্রণয়নের জন্য যে সকল কলাকৌশল, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা প্রয়োজন তা অনেক সময় আইনসভার সদস্যগণের মাঝে পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে আমলারা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের উপর আইন প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পিত হয়। এক্ষেত্রে তাদের রচিত আইনকে Delegated Legalslation বলে ।

৩। বিচার : বর্তমান গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আমলারা বিচার সংক্রান্ত কাজ করে। বর্তমানে আমলারা কিছু কিছু বিরোধের সমাধান করে থাকে। তারা আদালতের পরিবর্তে নিজেরাই কিছু কিছু বিবাদ-বিসম্বাধের মীমাংসায় অংশ নেয়।

Alomond Dowel-এর ভাষায়, বিভাগীয় ন্যায়-বিচার ও বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল সম্প্রসারণের ফলে আমলাতন্ত্রে কিছু কিছু বিচার সংক্রান্ত কার্য সম্পাদিত হয়।

৪। সরকারি নীতির বাস্তবায়ন : আমলাতন্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো সরকারি নীতির বাস্তবায়ন। আমলারা শুধু আইন প্রণয়ন করে না, আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে। আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে সরকারি নীতি ও বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়।

৫। প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা রক্ষা প্রশাসনিক : ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আমলাতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বদায়িত্ব। নিরবচ্ছিন্ন শাসনকার্য ছাড়া প্রশাসনিক গতিশীলতা আসে না। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তিত হয়। কিন্তু আমলাশক্তির কোনো পরিবর্তন ঘটে না। তারা প্রশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে।

৬। দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনা: আমলাতন্ত্রের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হলো দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনা করা। গণতন্ত্রে আমলারা দৈনন্দিন প্রশাসন পরিচালনা করে থাকে। আমলাদের দৈনিক কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সামাজিক নিরাপত্তা, পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থা, সংস্থাপন, কর ও জনকল্যাণ সংক্রান্ত কাজ। দৈনন্দিন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রশাসন গতিশীলতা লাভ করে।

৭। পরামর্শদান : আমলাতন্ত্র পরামর্শ সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি আমলাদের একটি উপদেষ্টামূলক কাজ। মন্ত্রীরা অনেক বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে পারেন না। এক্ষেত্রে আমলাগণ তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকেন।

৮। সামাজিক পরিবর্তন : সামাজিক পরিবর্তন গণতন্ত্রের একটি বিশেষ দিক। গণতন্ত্র সদা পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে গণতন্ত্র সমুন্নত ও শক্তিশালী হয়। এক্ষেত্রে সামাজিক পরিবর্তন বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৯। স্বার্থের মূল্যায়ন : আমলাতন্ত্র বিভিন্ন প্রতিযোগিতাশীল মূল স্বার্থের মূল্যায়নে ভূমিকা রাখে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে জনস্বার্থের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করে। সংশ্লিষ্ট বিষয় জনস্বার্থে কতটুকু সম্পৃক্ত তা আমলারা যাচাই করে। এক্ষেত্রে গোষ্ঠী স্বার্থের চেয়ে জনস্বার্থ বেশি প্রাধান্য পায়।

১০। তথ্য সরবরাহ : তথ্য সরবরাহে আমলাতন্ত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমলারা বিভিন্ন বিষয়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। জনসাধারণ, বিভিন্ন গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সরকারের প্রয়োজন হয়। আমলারা সেসব ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।

১১। ভারসাম্য রক্ষা : আমলাতন্ত্রের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ভারসাম্য রক্ষা করা। আমলারা পেশাগত ও নৈতিক মূল্যবোধের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে। এছাড়া গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর স্বার্থে সমন্বয় সাধন করে। যার মাধ্যমে প্রশাসনিক ভারসাম্য তৈরি হয়।

১২। রাজনৈতিক স্থায়িত্ব : আমলারা রাজনৈতিক স্থায়িত্বে ভূমিকা রাখে। রাষ্ট্রের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। বিশেষত অনুন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে এক্ষেত্রে আমলারা কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

১৩। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা : রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা আমলাতন্ত্রের একটি বিশেষ কাজ। আমলাতন্ত্র কখনো কখনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে । এটি তাদের একটি আনুষ্ঠানিক কাজ ।

আমলাতন্ত্র এর সমালোচনা :

আমলাতন্ত্র সব সময় স্বচ্ছ তা কখনো নয়। আমলাতন্ত্রে নানা ত্রুটি বিদ্যমান। নিম্নে আমলাতন্ত্রের সমালোচনা তুলে ধরা হলো :

১। লালফিতার দৌরাত্ম্য :

আমলাতন্ত্রের অন্যতম ত্রুটি হচ্ছে লালফিতার দৌরাত্ম্য। লালফিতার দৌরাত্ম্য বলতে মূলত পূর্বের নীতিকে অনুসরণ বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা বুঝায়। তবে যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে পূর্বের নজির বা নীতিকে অনুসরণ একেবারে খারাপ নয়। কে. বি. স্মেলক এর মতে, যথাযথভাবে ব্যবহৃত লালফিতার আইনের সামনে সকল নাগরিকের সমানাধিকার প্রতীক হতে পারে। তবে পূর্ব নজিরকে হুবহু অনুসরণ করা ঠিক নয়। কারণ এর মাধ্যমে সততার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং বিষয়টির ফয়সালা তার গুণাগুণের ভিত্তিতে হয় না। বরং এটি মান্ধাতা আমলের পুরনো নজির অনুসারে সম্পাদিত হয়।

২। ক্ষমতার লিপ্সা :

আমলাতন্ত্রের অন্যতম ত্রুটি হচ্ছে ক্ষমতার লিপ্সা। এটি আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ। আমলারা দায়িত্বে বসার পর থেকে তাদের ক্ষমতা, পদমর্যাদা, কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। তারা আইনসভা ও বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা গ্রহণে সচেষ্ট থাকেন। তারা ক্ষমতা হস্তান্তর নীতিতে খুব একটা আগ্রহী নয়, কারণ এর মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। তাদের ক্ষমতার মোহ জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে।

৩। দায়িত্বহীনতা :

দায়িত্বহীনতা আমলাতন্ত্রের বিশেষ সমালোচনা। এটি আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি। আমলাগণ রাষ্ট্রের স্থায়ী কর্মচারী। যে কোনো কাজের জন্য সরাসরি জনগণের কাছে দায়ী থাকে না। কাজের জন্য জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হয় মন্ত্রীগণকে। যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা জনগণের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা জনগণের নিকট দায়বদ্ধ না থাকায় নিজেদের খেয়াল খুশিমত কাজ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না।

৪। উদাসীনতা :

উদাসীনতা আমলাতন্ত্রের অন্যতম একটি সমালোচনা। আমলারা তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। তারা নিজেদেরকে একটি এলিট শ্রেণি বলে দাবি করেন। তারা নিজেদেরকে উচ্চ শিক্ষিত বলে দাবি করেন। তারা সময় সময় নিজেদের ইচ্ছামত নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে চায়। যার কারণে অনেক সময় জনগণের স্বার্থের প্রতি উদাসীন থাকেন।

৫। বিভাগীকরণ :

আমলাতন্ত্রের বিশেষ ত্রুটি হচ্ছে বিভাগীকরণ। বিভাগীকরণ আমলাতান্ত্রিক সরকারের কাজকর্ম বিভাজিত করে কতিপয় পৃথক ও স্বতন্ত্র বিভাগ সৃষ্টি করে। E. N. Giadden বলেন, আমলারা তাদের সংগঠনের কর্মপরিধি ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তোলার ব্যাপারে সর্বদা সচেতন। প্রত্যেক দফতর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এ সকল বিভাগীকরণের কারণে সরকারি কার্যক্রম বিভাগভিত্তিক হয়ে পড়ে। এর ফলে প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দেয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংগঠনের কর্মের প্রতি লক্ষ্য না রেখে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টায় থাকেন, যার ফলশ্রুতিতে কর্মচারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়িয়ে তোলেন ।

৬। নীতি নির্ধারণে হস্তক্ষেপ :

বর্তমানে আমলারা নির্বাহী ও আইন বিভাগের কাছ থেকে অনেক বেশি নীতিনির্ধারণী ক্ষমতা ভোগ করেন। বর্তমানে সরকারের কার্যাবলি বৃদ্ধির সাথে সাথে রাজনীতি ও প্রশাসনের সম্পৃক্ততা বেড়েছে। আমলারা এ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছে। রাজনীতিবিদদের প্রশাসনিক অজ্ঞতার কারণে নীতিনির্ধারণে আমলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৭। হৃদয়হীন আমলাতন্ত্র :

আমলারা একই পদ্ধতিতে | নি নিয়মমাফিক কাজ করতে করতে এমন একটি মানসিকতা গড়ে জ তোলে যে, তারা একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। তারা ব্য মানুষের মনমানসিকতাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে না। একটি মানুষ আ কি চায়, কিভাবে তাকে কোনো একটি কাজে সহযোগিতা করা যায়, সেদিকে না তাকিয়ে নিজেদের মত ও পথকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। যার কারণে আমলাদেরকে রোবটের সাথে তুলনা করা হয়েছে।

৮। আমলাতন্ত্র’র দীর্ঘসূত্রিতা :

দীর্ঘসূত্রিতা আমলাতন্ত্রের আরেকটি বড় ত্রুটি। সব কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করা তাদের চিরাচরিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কোনো বিষয় যতই জরুরী হোক না কেন সমস্ত সিঁড়িপত্র স্তর ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কাজটি সম্পন্ন করে। ডব্লিউ বেজহাট তাঁর বিখ্যাত The English Constitution গ্রন্থে লিখেন, আমলাতন্ত্রের অপরিহার্য ত্রুটি এই যে, আমলারা ফলাফলের চেয়ে রুটিন মতো কাজ হলো কি-না তা নিয়ে মাথা ঘামাবে বেশি।

৯। আলাদা শ্রেণি :

আমলারা নিজেদেরকে অনেক সময় সমাজের আলাদা শ্রেণি হিসেবে মনে করে। তারা নিজেদের ব্যাপারে যা-তা কল্পনা করে। তারা মনে করে তাদের মানসম্মান সমাজের অন্যান্যদের চেয়ে অনেক উঁচু।

১০। আমলাতন্ত্র’র দুর্নীতি :

আমলাতন্ত্রের সমালোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু হচ্ছে দুর্নীতি। এটি আমলাতন্ত্রের নেতিবাচক দিক। তারা অসদুপায় অবলম্বনের উদ্দেশ্যে বছরের পর বছর বিভিন্ন ফাইলবন্দি করে রাখে। কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য তারা কখনো কখনো উৎকোচ দাবি করে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের ক্ষেত্রে এ ত্রুটি বেশি দেখা যায় ।

১১। জনকল্যাণের পরিপন্থী :

জনকল্যাণের পরিপন্থী। আমলারা নিজেদেরকে জনগণ থেকে | আমলাতন্ত্র অনেকটা পৃথক করে রাখার চেষ্টা করে। জনকল্যাণ ও দ্রুত অর্থনৈতিক | উন্নয়নের বিষয়ে তারা তেমন চিন্তা করেন না। যার কারণে জনকল্যাণ ব্যাহত হয়।

পরিশেষে

বলা যায় যে, আমলারা আমলাতন্ত্র উন্মাসিকতা, আত্মশ্লাঘা বিধি-বিধান ও রুটিন কাজের স্থবিরতা, কাজ কর্মের মানবিক দিক উপেক্ষা, সংকীর্ণ গণ্ডিবদ্ধ মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গির রক্ষণশীলতা প্রভৃতি ত্রুটিগ্রস্ত। আর এসব আমলাতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমলাতন্ত্রের এ ত্রুটিসমূহ গণতন্ত্রকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। এর থেকে মুক্তি পেতে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে।

Rate this post