ভূমিকা: ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ কাল প্রবাহের উৎস সলিলে কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯-১৯৭৬] অবগাহন করেছিলেন। তাই তাঁর কালের চেতনা তাঁর ব্যক্তিজীবনে এবং শিত্যিক জীবনে গভীরভাবে স্পন্দিত। বাংলা সাহিত্যজগতে তাঁর আবির্ভাব বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। জুলিয়াস সাজারের মতো বাংলা সাহিত্যে ‘তিনি এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন।’ তাঁর এক-একটি কবিতা প্রকাশিত হতে লাগল ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায়- আর সমগ্র বাঙালি শিহরিত হলো এক নতুন কবির আশ্চর্য কবিতার শক্তিতে। ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর এক হাতে রণতূর্য’ নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হলেন বিদ্রোহী কবি, সাম্যবাদের কবি এবং প্রেমিক কবি। একদিকে তিনি তাঁর কাব্যে চিরসুন্দরের সাধনা করলেন, অন্যদিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের অগ্নিসৈনিকরূপে রণতূর্যবাদকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। নর-নারীর হৃদয়লীলা তাঁকে যেমন বিচক্রি করেছিল-অন্যদিকে মানুষের শোষণ-শাসনের নির্মমতা তাঁকে বিক্ষুব্ধ এবং বিদ্রোহী করে তুলেছিল।

রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রোত্তর যুগের কবিদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় সম্ভবত কাজী নজরুল ইসলামই শীর্ষস্থান অধিকার করে আছেন। বস্তুত রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কবিরূপে যে নামটি সমস্বরে উচ্চারিত হয়ে থাকে, সে নামটি অবশ্য নজরুল, যদিও এর যথার্থ্য বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। প্রথম মহাযুদ্ধকালে নজরুল সৈন্যদলে যোগদান করেন এবং এই অবস্থাতেই ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর ‘মুক্তি’ নামে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ‘বিজলী’ পত্রিকায় নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ নামক কবিতাটি প্রকাশিত হবার পরই তিনি পাঠক মহলে প্রভূত সাড়া জাগাতে পেরেছিলেন। তদবধি তিনি নিজেও ‘বিদ্রোহী কবি’-রূপেই পরিচিত হয়ে আসছেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসবার পর থেকে বস্তুত তিনি সাহিত্য ও সংগীত সাধনাকেই জীবনের ব্রত বলে গ্রহণ করেছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল। রাজদ্রোহাত্মক কাব্য রচনার দায়ে তাঁকে রাজরোষেও পড়তে হয়েছে। নজরুলের জীবনের শেষার্ধ (১৯৪২-১৯৭৬) বড়োই করুণ, এই সুদীর্ঘ সময় তিনি জীবনস্মৃত অবস্থায় বর্তমান ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে নিয়ে আসা হয় এবং এখানেই তিনি লোকান্তরিত হন।

নজরুল প্রধানত কবি, তবে গদ্য রচনায়ও তিনি অকৃপণ ছিলেন। গল্প উপন্যাসে তাঁর কৃতিত্ব খুব উচ্চাঙ্গ না হলেও কবিশ্বভাব তাতেও প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ফারসি ভাষা থেকে তিনি বেশ কিছু ‘রুবাঈ’ এর অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অগ্নিবীণা’ (১৯২২), ‘ব্যথার দান’ [গল্প-১৯২২), ‘বিষের বাঁশী’ (১৯২৪), ‘সাম্যবাদী’ (১৯২৫), ‘রিক্তের বেদন’ [গল্প-১৯২৫], ‘সর্বহারা’ [১৯২৬], ‘ফণীমনসা’ (১৯২৭), ‘বাঁধনহারা’ উপন্যাস-১৯২৭), ‘প্রলয়শিখা’ (১৯৩০), ‘শিউলিমালা’ (গল্প-১৯৩১], ‘কুহেলিকা’ উপন্যাস-১৯৩৭), ‘মৃত্যুক্ষুধা’ (উপন্যাস) ইত্যাদি। নজরুলের যথার্থ কৃতিত্ব প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের সংগীতরচনায়। তাঁর রচিত সংগীতের সংখ্যা অসংখ্য। ‘দোলনচাঁপা’ [১৯২৩], ‘ছায়ানট’ (১৯২৪), ‘পূবের হাওয়া’ (১৯২৫), ‘সিন্ধু হিন্দোল’ (১৯২৭), ‘চক্রবাক’ (১৯২৯), ‘সন্ধ্যা’ [১৯২৯), ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ ও ‘লুবুল’, ‘চোখের চাতক’, ‘বনগীতি’, ‘গীতিশতদল’ ইত্যাদি গীতিসঙ্কলন।

বাংলাসাহিত্যে নজরুলের আবির্ভাব ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্য দিয়ে, বস্তুত তাঁর সমগ্র কাব্যচেতনার মধ্যে বিদ্রোহই বরাবর সচেতনভাবে ধরা দিয়েছে। তাঁর এই বিদ্রোহের পশ্চাতে দেশাত্মবোধের প্রেরণা ছিল নিশ্চিতই, কিন্তু তাই সব নয়। তাঁর বিদ্রোহ যাবতীয় সামাজিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও।

নজরুলের ‘অগ্নি-বীণা’ [১৯২২] কাব্য প্রকাশের সময় তাঁর বয়স ছিল তেইশ বছর। তেইশ বছরের প্রাগজীবন আলোচনা করলে দেখা যায়, জন্মের পর প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে ওঠা এবং বহুবর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় বাধা-সংকটের ভিতর দিয়ে যৌবন অতিক্রম এবং পরাধীন দেশের শৃঙ্খল মোচনের জন্যে যে প্রাণান্তরকর চেষ্টা এবং ইচ্ছা যুগপৎভাবে কাজ করেছিল- যা তাকে অনিবার্যভাবে বিদ্রোহী করে তুলেছিল। ব্রিটিশ সরকারের অব্যাহত শোষণ, অত্যাচারের এবং সামাজিক অবক্ষয় ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে মানব মুক্তির তীব্র বাসনা জেগে ওঠে নজরুলের মনে। মূলত কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহ শোষিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত অবহেলিত সর্বোপরি দারিদ্রক্লিষ্ট মানুষের জয়গানে উচ্চকিত। তাঁর চিন্তা- চেতনায় বিদ্রোহের স্বরূপ-সূচনা ও সূতিকাগারে ‘অগ্নি-বীণা’ কাব্য থেকেই এ কথা একবাক্যে স্বীকার্য। তিনি সমস্ত আইন- কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা ভেঙে এগিয়ে যেতে চান, সামাজিক শৃঙ্খলাকে পদদলিত করেন, গোঁড়ামি আর সাম্প্রদায়িকতাকে ইতিহাস থেকে বিদূরিত করতে চান, ধ্বংসের আহবানে তিনি নিরলস। কাব্যের প্রথম কবিতায় ‘প্রলয়োল্লাস’ এর মাধ্যমে কবি বিদ্রোহের-আগুনখেলার ঘোষণা দিলেন তরুণদের:

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!

ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখীর ঝড়।

“তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!”

ব্রিটিশ সরকারের অব্যাহত শোষণ, অত্যাচারের এবং সামাজিক অবক্ষয় ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে মানব মুক্তির তীব্র বাসনা জেগে ওঠে নজরুলের মনে। তিনি দেশকালের সীমা-পরিসীমা অতিক্রম করে দুঃশাসন-অপশাসনকে ডিঙিয়ে ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় উচ্চারণ করলেন-

“মহা বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত,

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,

অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-

বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত

আমি সেই দিন হবো শান্ত।”

নজরুল ইসলামি সংগীত রচনায় যেমন দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, সম্ভবত সমধিক কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। শ্যামাসঙ্গীত রচনাতেও। তাঁর পারিবারিক জীবনে এর প্রতিফলন দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে প্রথম মহাযুদ্ধের সমাপ্তিতে সমগ্র বিশ্ব জুড়েই যে মানবজাতির মনে একটা বিরাট মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল এবং সমকালে রাশিয়ায় যে একটা আমূল পরিবর্তিত সাম্যবাদী সমাজব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল, তারই উদ্দীপনায় নজরুল দেশের যুবশক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছিলেন তাঁর কবিতার সাহায্যে। যদিও এ বিষয়ে এর আগে পথ কেটে রেখেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘সবুজের অভিযান’ কবিতায়। যাহোক, নজরুলের উদ্দীপনাময়ী বিদ্রোহাত্মক কবিতাগুলো যুবমানসে প্রবল প্রেরণা সঞ্চার করলেও তিনি রাজরোষে পতিত হন এবং তাঁর ‘বিষের বাঁশী’, ‘অগ্নি-বীণা’, ‘সর্বহারা’ ইত্যাদি গ্রন্থ বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। নজরুলের কবিতায় মানবিকতার জয়গান ঘোষিত হলেও তা প্রচারধর্মিতার জন্যই সমসাময়িকতাকে অতিক্রম করতে পারেনি।

কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার বিষয়-বিন্যাসে অনেকবার বাঁকপরিবর্তন ঘটেছে। ‘নবযুগ’ পত্রিকা পর্বে আমরা কবিকে বিদ্রোহী ভূমিকা, ‘ধূমকেতু’ পর্বে তাঁর বিপ্লবী ভূমিকার এবং ‘লাঙ্গল’ পর্বে এসে সাম্যবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখি। ‘সাম্যবাদী’ (১৯২৫] গ্রন্থের কবিতাগুলোতে শ্রেণি বৈষম্য বা শ্রেণি সংগ্রামের তুলনায় সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে সমতার বাণী উচ্চারিত হয়েছে। ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতাতেই কবি সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক অসাম্যের বিরুদ্ধে, অবিচার, শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে স্বীয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। চাষি, শ্রমিক, কুলি-মজুর এমনকি চোর ডাকাত, বারাঙ্গনা পর্যন্ত তাঁর কাব্যে স্থান পেয়েছে। চোর-ডাকাত সম্বন্ধে কবি বলেছেন,

“কে তোমায় বলে ডাকাত বন্ধু, কে তোমায় চোর বলে?
চারিদিকে বাজে ডাকাতি ডঙ্কা, চোরের রাজ্য চলে।
চোর-ডাকাতের করিছে বিচার কোন সে ধর্মরাজ?
জিজ্ঞাসা কর, বিশ্ব জুড়িয়া কে নহে দস্যু আজ?”

কাজী নজরুল ইসলামের মানবতাবাদের দর্শনমূলক কবিতাবলিতে রাজনৈতিক বাস্তবতা, প্রত্যয়, জীবনঘনিষ্ঠতা থাকলেও হৃদয়োত্তাপে কবিতাগুলো সাময়িক হয়ে নেই। কারণ তিনি সাময়িক কবি নন- তিনি চিরন্তনের কবি। তাঁর কবিসত্তা হলো সামাজিক জাগরণ ও সমাজসত্তার বিপ্লবী চেতনার প্রতিনিধি, সকল দেশের, সকল মানুষের ধ্যান আর ও বণান তাঁর কাব্যকর্ম- এ ধারার কাব্য হিসেবে ‘সর্বহারা’ (১৩৩৩ বাংলা /১৯২৬ ইংরেজি) কাব্যটি স্বতন্ত্র। এ কাব্যটিতে একাধিক ভাব এবং বিষয়ের সম্মিলন ঘটেছে। তবে, কাব্যটি মূল সুর নিহিত আছে সর্বহারা মানুষদের মঙ্গল কামনায়।

কাজী নজরুল ইসলাম সাম্রাজ্যবাদী শোষণমুক্তির কথাই প্রকাশ করেছেন তা নয়- এ কাব্যে তিনি শ্রেণিহীন সর্বক্ষেত্রে শোষণশাসন- মুক্ত সমাজের বাস্তব চিত্র এঁকেছেন। তাই তিনি নিজেকে সর্বহারাদের কবি বলেছেন। কৃষক-শ্রমিক-ধীবর প্রভৃতি যারা আমাদের সমাজের বুনিয়াদ তাদের সার্বিক প্রতিষ্ঠার আয়োজনে তাঁর কাব্য মুখরিত। যেমন-

“ওঠ রে চাষী জগদ্বাসী ধর্ কষে লাঙল।
আমরা মরতে আছি- ভাল করেই মরব এবার চল।”

‘অগ্নি-বীণা’র অগ্নিগর্ভ বাণীর ঝঙ্কার মিলিয়ে যেতে না যেতেই কবি ‘বিপ্লব বাঁশিতে’ সুর সংযোজন করলেন। ‘চিরতিক্ত প্রাণের’ গভীর থেকে উদগত ‘কণ্ঠছেড়া বিষ অভিশাপ তিক্ত’ গান রচনার সংকল্প থেকেই ‘বিশের বাঁশীর” সুর লহরীর উদ্ভব। কাব্যের ভূমিকায় এ সম্পর্কে কবি জানিয়েছেন: “বিষের বাঁশীর বিষ যুগিয়েছেন আমার নিপীড়িতা দেশমাতা আর আমার ওপর বিধাতার সকল রকম আঘাতের অত্যাচার।” তবে রাজরোষে পতিত’ অগ্নি-বীণার’ পরিণাম দেখে তিনি যে এ কাব্যে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন, তা তাঁর ভূমিকার বক্তব্য থেকেই পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। ‘বিষের বাঁশীর’ অধিকাংশ কবিতা ও গান বিদ্রোহের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত ও অস্থির। এ কবিতা ও গানগুলোর উদ্দীপন ভাব যুগিয়েছে পরাধীনতার জ্বালাবোধ, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও স্বদেশের দুঃখ-বেদনার প্রতি গভীর সমবেদনাবোধ। পরাধীনতার অভিশাপের বিরুদ্ধে স্বদেশ প্রেমের নিজস্ব মূর্তি নির্মাণেই ‘বিষের বাঁশীর’ বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।

কাজী নজরুল একদিকে যেমন বিদ্রোহী- তেমনি অন্যদিকে তাঁর মধ্যে লুকিয়ে আছে প্রেমিকসত্তা। কবির রোমান্টিক- প্রণয়মূলক কবিতায় কবির আকুতি- মোহময়তার রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ ধরনের কাব্যগুলোর মধ্যে ‘ছায়ানট’, ‘দোলনচাঁপা’, ‘সিন্ধু হিন্দোল’, ‘চোখের তারা’, ‘চক্রবাক’, ‘ফণিমনসা’ প্রভৃতি।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা কবিতার ইতিহাসে যত না বড়ো কবি- তাঁর চেয়ে বেশি তিনি জনপ্রিয় কবি। তাঁর কবিতায় তিনি মুক্তির কথা বলেছেন- বলেছেন সাম্যের কথা- প্রকাশ করেছেন হৃদয়ের গোপন কথা। বাংলা কবিতার ধারায় তিনি হিন্দু পুরাণ-মুসলিম পুরাণ ব্যবহার করেছেন। তাঁর এই ব্যবহার এতটাই সহজ ও প্রাসঙ্গিক হয়েছিল যে হিন্দু- মুসলিমসহ সব জাতি-পেশার মানুষই তাঁর কবিতাকে সমানভাবে গ্রহণ করেছিলেন। কবি বলতেন-

“হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন
কাণ্ডারী! বলো, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।”

পরিশেষে বলা যায় যে, কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রাণ প্রবাহের কবি। তার কাব্যকথা ছিল উল্লাসিত জীবনের জয়গানে মুখরিত। ভাষা ব্যবহারে বলিষ্ঠ আত্মচেতনা প্রকাশে নজরুল যে রীতি অবলম্বন করেছেন তা বাংলা কাব্য সাহিত্যে এক নতুন ধারা নিয়ে আসে। তিনি প্রচলিত রীতি সংস্কার, অন্যায় শাসন এবং সমস্ত শোষণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠকন্ঠে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। তার এই বিদ্রোহই তাকে রবীন্দ্রোত্তর বাংলা কাব্যে অভিনবত্ব ও স্বাতন্ত্র্য দান করে বিশিষ্ট আসনের অধিকারী করেছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।

Rate this post