এই পৃথিবীতে জীববৈচিত্র্য আছে বলে মানুষ সঠিকভাবে তাদের জীবন পরিচালনা করতে পারে।
আর এর জন্যই আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস পালন করা হয়ে
থাকে। তবে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস পালন করা হলেও মানুষ এখনো
যথেষ্ট সচেতন নয়। সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস সম্পর্কে জানতে
আমার আর্টিকেলটি পড়ুন।

প্রতিবছর ২২ শে মে জীব বৈচিত্র্য দিবস পালন করা হয়। আমি আন্তর্জাতিক
জীববৈচিত্র, জীব বৈচিত্র্য, জীব বৈচিত্রের নামকরণ, জীববৈচিত্রের গুরুত্ব ও
সংরক্ষণ কিভাবে করা যায় এগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।নিচে আন্তর্জাতিক
জীববৈচিত্র্য দিবস সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

 

পোস্ট সূচিপত্রঃআন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস

 

আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য 

পৃথিবীতে জীবনের জৈবিক বৈচিত্র্য এবং পরিবর্তনশীলতাকে বলা হয় জীববৈচিত্র।
জীববৈচিত্র সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে জীববৈচিত্র দিবস পালন করা হয়।
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি অনুযায়ী প্রতিবছর বাই ২২শে মে জীববৈচিত্র দিবস
হিসেবে পালন করা হয়। প্রকৃতিতে বিভিন্ন জন্তু ও পাখি থেকে শুরু করে ফুল,
মাছ,  কিট পতঙ্গ এছাড়াও রঙ্গিন গাছপালা থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র জীব সব
কিছু নিয়েই আমাদের এই পরিবেশ।

এবং আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী সিপিসির বা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ
সম্পাদক সি চিন পিংন এর মতে জীববৈচিত্র পৃথিবীকে প্রাণে পূর্ণ করে তোলে এবং এটি
মানুষের বেঁচে থাকা ও উন্নয়নের ভিত্তি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
স্বাধীনতার পর অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে জীববৈচিত্র ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ সেল আইন প্রণয়ন করেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯২ সালের ২২ শে মে  বাংলাদেশ ব্রাজিলের রাজধানী
রিওডি জেনিরোতে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির ধরিত্রী সম্মেলনে সিবিডি বিভিন্ন
দেশের সমাবেশের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বিশ্বের প্রায় ১৬৮ টি দেশ নির্ধারিত
সময়ের মধ্যেই সিবিডি চুক্তিতে সই করে এবং সেই বছর থেকেই সিবিডির ২৯ ডিসেম্বর
থেকে কার্যকর হয়। বর্তমানে ১৯৫টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

 

জীব বৈচিত্র

পৃথিবীতে জীবনের জৈবিক বৈচিত্র এবং পরিবর্তনশীলতা হলো জীব বৈচিত্র্য। অধ্যাপক
হ্যামিলটনের মতে জীববৈচিত্র হলো পৃথিবীর মাটি, বায়ু, পানিতে বসবাস কারি সব
উদ্ভিদ, প্রাণী ও অনু জীবের মধ্যে যে পরিবেশগত, প্রজাতিগত ও জিনগত যে বৈচিত্র
তাকে বোঝায়। মার্টিন জীব বিজ্ঞানী ইএ নরেশ এবং তার সহযোগীদের সূত্র অনুযায়ী
জীব বৈচিত্র্য হলো পানি, বায়ু, স্থল সকল জায়গায় পরিবেশে থাকা সকল প্রকার
জীব।

বিভিন্ন জীব জন্তু এবং উদ্ভিদের বসবাস অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য কে নানাভাবে
সংজ্ঞায়িত করা যায় যেমন, ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম অনুসারে
বস্তু তন্ত্রের বিভিন্ন তা হলো  জীব বৈচিত্র্য। সিজে ব্যারোর মতে,
জীববৈচিত্র্য হল একটি অঞ্চলের অর্থাৎ বস্তু তন্ত্রের অন্তর্গত বিভিন্ন প্রজাতির
মধ্যে যে বৈচিত্র তাকে জীববৈচিত্র বলে।

কোন একটি অঞ্চলের অন্তর্গত প্রাকৃতিক বাসস্থান বা হেবিটার্ট এবং ওই বাসস্থানর
বসবাসকারী  সমস্ত উদ্ভিদ, প্রাণী ও অনু জীবের প্রজাতি এবং তাদের জিনগত
বৈচিত্রের সমাহারকে এক কথায় বলা হয় বৈচিত্র্য বা বায়োডাইভারসিটি।

 

জীব বৈচিত্রের নামকরণ

বন্যপ্রাণী বিজ্ঞানী ও সংরক্ষণ বিদ রেমন্ড এফ ডাসমান ১৯৬৮ সালে সর্বপ্রথম
বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি বা জীববৈচিত্র কথাটি ব্যবহার করেন। এরপর
বায়োডাইভারসিটি ১৯৮৫ সালে ডবু জি রোজেন সর্বপ্রথম কথাটি ব্যবহার করেন। আবার
পতঙ্গ বিদ ইউ উইল সন ১৯৮৮ সালে এই ডাইভারসিটি কথাটি ব্যবহার করেন।

 

জীব বৈচিত্রের শ্রেণীবিভাগ

প্রধানত তিনটি ভাগে জীববৈচিত্র্য কে ভাগ করা হয়েছে যথা

 জিনগত বৈচিত্র 

প্রজাতিগত বৈচিত্র

বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র

জিনগত বৈচিত্র 

একটি প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতির মধ্যে যে জিনগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় তাকে
জিনগত বৈচিত্র বলা হয়। এই জিনগত পার্থক্যকে আবার ভেরিয়েবলিটি ও বলা হয়ে
থাকে। জিনের প্রবাহ বা জিনগত বৈচিত্র্য ঘটায় পরিব্যক্তি বা মিউটেশন বন্য
প্রজাতির রোগ প্রতিরোধকারী জিনগুলি প্রতিস্থাপন করে ট্রান্স জেনেটিক উদ্ভিদ
তৈরি সহ ভ্যারাইটি উদ্ভিদ তৈরি করা হয় যেন উদ্ভিদ রোগে আক্রান্ত না হয়।

উদাহরণ স্বরূপ ধানের রোগ প্রতিরোধী জিন প্রতিস্থাপন করে ট্রান্সজেনেটিক
ভ্যারাইটির ধান সৃষ্টি করা হয়েছে। এই উন্নত জাতের ধান ৪ ধরনের ধানের রোগ কে
প্রতিহত করে থাকে।

 

প্রজাতিগত বৈচিত্র

প্রজাতিগত জীববৈচিত্র্য বা স্পশিজ ডাইভারসিটি বলতে বোঝায় কোন বাস্তবতন্ত্রের
বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ, অনুজীব ও প্রাণীর উপস্থিতিকে। প্রজাতিগত বৈচিত্র্য
থেকে জানা যায় এর সংখ্যা, শ্রেণী ও বর্ণ প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বা
স্পশিজ সবচেয়ে বেশি নিরক্ষীয় বৃষ্টি অরন্যে। প্রজাতিগত বৈচিত্র হলো একটি
স্থানে অবস্থানকারী বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যে বৈচিত্র তাকে বোঝানো হয়।

আর বৈচিত্র পরিলক্ষিত হয় বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে অথবা এইসব প্রজাতির অন্তর্গত
সদস্য সমূহের মধ্যে। .১৯৯২ সালে বিজ্ঞানী এড ওয়ার্ড উইলসন অন একটি মন্তব্য
করেন তার মতে, এই বিশ্বে ১০ মিলিয়ন থেকে ৫০ মিলিয়ন জীবিত প্রজাতি আছে তবে এর
মধ্যে কেবলমাত্র ১.৫ মিলিয়ন  জীবিত প্রজাতির ও তিন লক্ষ জীবাশ্ম প্রজাতির
আবিষ্কার করে নামকরণ করা হয়েছে।

এ তবে এর মধ্যে বহু প্রজাতি প্রাকৃতির সাথে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনি বলে
বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রজাতির বৈচিত্র তার নির্ণয় করতে  সেনন উইনার
সূচক এবং সি স্পসন সূচক নামে দুটি সূচক ব্যবহার করা হয়।

 

বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র

বাস্তুতান্ত্রিক জীববৈচিত্র্য বা ইকোসিস্টেম ডাইভারসিটি বলতে বোঝায় একটি
বিরাট অঞ্চল জুড়ে বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের প্রকারভেদ কে। আবার অনেক সময়
বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের প্রজাতিগত বৈচিত্র বা জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে
ও বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য ঘটে থাকে। আবার প্রাকৃতিক পরিবেশের
তাপমাত্রা, আদ্রতা, শক্তি প্রবাহ ভিন্নতার কারণে জীব বৈচিত্র ঘটে
থাকে। 

১৯৯৭সালে জীববিজ্ঞানী হুইটেকার একটি গবেষণা করেন। তার গবেষণামতে
বাস্তুতান্ত্রিক নির্ধারণের তিনটি সূচক কাজ করে। যথা –

আলফা বৈচিত্র

প্রকৃতির একটি নির্দিষ্ট বনভূমি বা প্রজাতির যে গড় বৈচিত্র তাকে আলফা বৈচিত্র
বলে।

 গামা বৈচিত্র এবং

ভৌগলিক অঞ্চল যেগুলো আয়তনে অনেক বড় যেমন হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এর মধ্যে
প্রাকৃতিক বাসভূমি বা পরিবেশের মধ্যে যে পার্থক্য তাকে গামা বৈচিত্র বলা হয়।
পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোর বৈচিত্র হলো গামা বৈচিত্র। পৃথিবীতে যত প্রকার
বৈচিত্র্য আইন ও ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলা হয়েছে তা গামা বৈচিত্রের উপর নির্ভর
করে করা হয়েছে।

 বিটা বৈচিত্র

আঞ্চলিক জীববৈচিত্র্য ও আলফা জীব বৈচিত্রের
অনুপাতকে বিটা বৈচিত্র বলা হয়। আর এই পদ্ধতিতে এক পরিবেশ থেকে অন্য পরিবেশের
প্রজাতির সব বৈচিত্র সম্পর্ক কে জানা যায়।

 

জীব বৈচিত্রের গুরুত্ব

এই পৃথিবীতে জীব বৈচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এই পৃথিবীতে পরিবেশ শক্তি
প্রবাহ ঘটে জীব বৈচিত্রের কারণেই। এই পৃথিবীতে কীটপতঙ্গ বেঁচে থাকে খাদ্য –
খাদ্য সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে। বাস্ততন্ত্র গতিশীল ও কার্যকর।পরিবেশ রক্ষায়
জীব বৈচিত্রের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে, যেমন- ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ও সুনামির হাত
থেকে উপকূলীয় অঞ্চল কে রক্ষা করতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে থাকে।

এছাড়া ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা আধ্যাত্মিক ও নান্দনিক মূল্যবোধ তৈরি করা,
মূলবোধ রক্ষা করার ক্ষেত্রে জিব বৈচিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
জীব বৈচিত্রের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও অপরিসীম। এ জীব বৈচিত্র আছে বলেই মানুষ
খাদ্যের যোগান পায়, বিনোদন ও পর্যটন শিল্প গড়ে তুলে, শিল্পের কাঁচামাল পায়।
মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরির কাঁচা জীববৈচিত্রের থেকেই পাওয়া
যায়।

 

জীববৈচিত্র ধ্বংসের কারণ

বর্তমানে জীববৈচিত্র নানা কারণে ধ্বংসের সম্মুখীন। কারণগুলো নিচে বর্ণনা করা
হলো-

    • জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য
    • পরিবেশ দূষণের জন্য
    • অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের জন্য।
    • জীবগোষ্ঠীর প্রাকৃতিক বাস ভূমি বা স্বাভাবিক বাসস্থান বিনষ্ট হওয়ার জন্য ও
      অতিরিক্ত স্বীকার করার জন্য।
    • ভূমিকম্প,উল্কাপাত, অগ্নুৎপাত, সুনামি, দাবানল, খরা, বন্যা,
      প্রকৃতি,প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
    • রাস্তা, রেল লাইন, ব্রিজ বা জলধারা, খাল নির্মাণ, খনি, অরণ্য নিধন, কৃষি
      জমির প্রসারতা, নগরায়ন ও শিল্প উন্নয়নের জন্য।
    • জীব গোষ্ঠীর প্রাকৃতিক বাসভূমি বা স্বাভাবিক বাসস্থান বিনষ্ট হওয়ার জন্য
      এবং অতিরিক্ত স্বীকার করার জন্য।
    • বিদেশ বা অন্য কোন জায়গা থেকে আসা আগন্তকদের প্রজাতির আগ্রাসনের
      কারণে।

 

 

যেমন যে কচুরিপানা, ল্যান টানা, উইক্যালিপটাশ প্রভৃতি-বিদেশি উদ্ভিদ প্রজাতির
মধ্যে আগ্রাসী বৈশিষ্ট্য আছে এর স্থানীয় উদ্ভিদ প্রজাতিকে নষ্ট করে।

 

জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ

আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সংস্থা বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় জীব বৈচিত্রের
একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকা কে বলা হয় রেড ডাটা বুক। দেশের অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ নৈশিক  সেন্ট মার্টিন জীববৈচিত্র সুরক্ষায় পরিবেশগত
ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্রের উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা
সংরক্ষণ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এছাড়াও যে সব এলাকায় পরিবেশ সংকটা পণ্য সেসব এলাকায় সমাজ ভিত্তিক অভিযোজন
কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও কিছু
নতুন প্রকল্প গ্রহণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যেমন – টাঙ্গুয়ার হাওর।

 

সমুদ্র পরিবেশ সংরক্ষণ

সমুদ্র পরিবেশ সংরক্ষণ সমুদ্র দূষণ রোধ, সমুদ্র সম্পদ আরোহণ ও সমুদ্র সম্পদের
পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেন ।সামুদ্রিক উপকূলীয় জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও
ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারার লক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্লু
ইকোনোমি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। 

এছাড়াও পরিবেশ সম্পদ এবং সম্পাদনের লক্ষ্যে পরিবেশ পরিকল্পনা গ্রহণ করা
হয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে যে, জলবায়ু, বন এবং পাহাড়কাটা রোধ
করতে হবে।

 

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সালের সংশোধিত করে ২০১০ সালে এই আইনে পাহাড় কাটা রোধ
কল্পে নিয়মিত মনিটরিং এবং গণসচেতনতা সৃষ্টি্র লক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও পরিবেশ দূষণ
নিয়ন্ত্রণ সেল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেন।

দেশের সামগ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা প্রণয়নের লক্ষ্যে
নতুনভাবে প্রণীত জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ তে পূর্বের ১৫টি খাসহ আরো নয় ৯টি খাত
যোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো পাহাড়, পরিবেশ,
জীববৈচিত্র ও পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জীব নিরাপত্তা পরিবেশ বান্ধব পর্যটন
ইত্যাদি।

মোট ২৪টি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে কার্যক্রম গুলো বাস্তবায়নের লক্ষে
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ এবং সংস্থা চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৭ আইন
প্রণয়ন করা হয়েছে এছাড়াও বাংলাদেশের জীব নিরাপত্তা নীতিমালা ২০১২ এর জীবন
নিরাপত্তা গাইডলাইন ২০০৮ জেনেটিক্যাল পরিবর্তিত জীবের গবেষণার জন্য করা
হয়েছে।

নদনদীর পরিবেশ সংরক্ষণে শিল্প  কারখানার তরল বর্জ্য থেকে বাঁচাতে আইন
প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে ৬০৫টি বর্জ্য উৎপাদনকারী শিল্প কারখানায় উপকূলে
প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া ও শিল্প কারখানা দূষণ রোধে ২০১৬-১৭ এবং
২০২০ ২১ পর্যন্ত মোট ৫১৩১টি শিল্প কারখানার বিরুদ্ধে এন্ড ফোর্সমেন্ট কার্যক্রম
পরিচালনা করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠা গুলোর বিরুদ্ধে ১৫৮. ১৯ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হয় এবং
৬২.০৯  
কোটি টাকা জরিমানা   টাকা আদায় করা হয়েছে শুধু পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্যই। এছাড়া ও ঢাকার
চারপাশে বুড়িগঙ্গা ,তুরাগ, বালু, শীতলক্ষা নদী কে সুরক্ষা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ কমাতে হাজারীবাগের টানারি শিল্প গুলো কেন্দ্রীয়
বর্জ্য পরিশোধনাগার ঢাকার বাইরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ৬৪ টি  ওয়াশিং কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিবেশ
সংরক্ষণের জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা
একনিষ্ঠতা প্রকাশনার জন্য ১৯১৫ সালে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার
“চ্যাম্পিয়ন্স অফ দা আর্থ” অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ছয়টি থিমের আওতায় প্রায়
৪৪ টি প্রোগ্রামের অধীনে উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়িত হয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক জীব বৈচিত্র দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়

প্রতিবছরই একটি প্রতিপাদ্য বিষয়ের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক  জীব বৈচিত্র্য দিবস পালন করা হয়এবারের আন্তর্জাতিক জয়ীব বৈচিত্র্য দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে -“সকল
প্রাণীর জন্য একটি অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা”। চীন ১৫ হাজারেরও বেশি
প্রজাতের উদ্ভিদ সংগ্রহ করেছে সারা বিশ্ব থেকে যার মধ্যে রয়েছে ১০০০ প্রজাতির
বিরল ও বিপন্ন গাছপালা। সারা বিশ্বে তিন লক্ষাধিক প্রজাতির উচ্চতর উদ্ভিদ
রয়েছে তার মধ্যে চীনে রয়েছে ৩৭ প্রজাতির উদ্ভিদ। 

লিয়াং চেনছাং নামক একজন জীববিজ্ঞানী চীনে আঙুর নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার
গবেষণামতে ৭০ টিরও বেশি বন্য আঙ্গুর রয়েছে। তার মতে বাজারে যেসব আঙ্গুর পাওয়া
যায় তার বেশির ভাগে বিদেশ থেকে আসে। তবে বিশ্বে যে ৭০ প্রকার আঙ্গুর রয়েছে
তার মধ্যে চল্লিশটির বেশি আঙ্গুর চিনে পাওয়া যায়।

 

শেষ কথা

জীববৈচিত্রকে রক্ষা করতে হবে আর জীববৈচিত্র কে রক্ষা করতে শুধু সরকারের
সহযোগিতা নয় ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়েও জীববৈচিত্র কে রক্ষা করতে হবে আজকের
জীববৈচিত্র্য হোক আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এই পরিকল্পনাকে সামনে রেখে আমাদের তরুণ
সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে।

আন্তর্জাতিক সমাজের সাথে হাত মিলিয়ে পুলিশ বয়েসগত সভ্যতার ধারণাকে সমুন্নত
রেখে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পৃথিবীর জীবনের একটি অভিনয় স্বার্থে
কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে এবং একটি পরিচ্ছন্ন সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে
জীববৈচিত্রই হোক আগামী দিনের প্রত্যাশা।

 

Rate this post