প্রশ্নঃ লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যবাদ কী?
অথবা, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যবাদ বলতে কী বুঝ?

ভূমিকাঃ সভ্যতার শুরু থেকেই নারী পুরুষ পরস্পরের সহযোগী হিসেবে সমাজবিনির্মাণে অবদান রেখে আসছে। অথচ আশ্চর্যের বিষয় সব সমাজেই নারী ও পুরুষের মাঝে স্পষ্ট অসমতা বিদ্যমান। মানবজাতির অর্ধেক যেহেতু নারী সেহেতু নারীদের অধিকার বঞ্চিত রেখে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়।

লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যবাদঃ লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যবাদ বলতে ঐ ধরনের বৈষম্যকে বুঝায় যেখানে জেন্ডার বা লিঙ্গের কারণে একই সমাজ বা রাষ্ট্রে বসবাসকারী নারী ও পুরুষের মধ্যে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্যতাসহ জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে স্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। সেখানে লিঙ্গকেই অধিকার ভোগ ও ভূমিকা পালনের মূল মানদন্ড ধরা হয়। অর্থাৎ লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে যে বৈষম্যতা, এক কথায় তাকে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যতা বলে। 

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও মনীষারা লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যবাদ সম্পর্কে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে প্রধান প্রধান কয়েকজন মনীষীর দেয়া সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলোঃ

রুশো (Rousseau) বলেছেন, বাল্য বয়স থেকেই মহিলাদের এমন শিক্ষা দিতে হবে, যে শিক্ষার ফলে তারা পুরুষের কাজে আসবে, পুরুষের যত্ন নিবে, তাদের আনন্দ দান করবে এবং জীবনকে মিষ্টি মধুর করে গড়ে তুলবে।

এ টমাস মুর (Thomas Moore ) বলেছেন, ‘মহিলাদের কাছে উপদেশ চাইবে এবং তারা যে উপদেশ দিবে, তুমি ঠিক তার উল্টোটা করবে, আর তাহলে তুমি অবশ্যই বিজ্ঞবান হবে।’

আরথুন সোপে হাওয়ার (A. Schopen Haur) বলেছেন, ‘মহিলা চরিত্রের একটি বিশেষ দোষ হচ্ছে তাদের কোনো বিচারবুদ্ধি নেই ।’

সমাজবিজ্ঞানী রবার্টসন বলেছেন, ‘Even the Image of God in our culture is made এখানে Our বলতে Robertson বা Robertson দের বুঝানো হচ্ছে। কেননা কথাটি তারই।’

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, জন্মগত গুণাবলি তথা জৈবিক পার্থক্যকে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণ বলা হয়, পুরুষেল গুণাবলিকে অধিকতর মূল্য দেয়া হয়। মেয়েলি স্বভাবের চেয়ে পুরুষালি স্বভাবকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।

Rate this post