বিভিন্ন আইনবিদগণ আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন।

অধ্যাপক ওপেনহাম এর মতে, আন্তর্জাতিক আইন বলতে প্রথাযুক্ত আইনের সমষ্টি ও সন্ধির সমষ্টিকে বােঝায় যার ভিত্তিতে সভ্য দেশগুলাের পারস্পরিক কাজে আইনগত বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করে।

অধ্যাপক হল এর মতে, আন্তর্জাতিক আইন বলতে এমন কিছু নিয়মাবলীকে বােঝায় যা আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে অবশ্য পালনীয় বলে গ্রহণ করে। সুতরাং বলা যায়, ন্যায়-নীতি ও আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যে আইন প্রয়ােগ করা হয় তাকে আন্তর্জাতিক আইন বলে।

নিম্নে আন্তর্জাতিক আইন বিকাশের বিবরণ আলােচনা করা হলাে-

(১) ইসলাম ধর্মঃ ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক আইনের অনেক বিধি-বিধান এই গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে।

(২) হিন্দু ধর্মঃ হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকেও আন্তর্জাতিক আইনের বিভিন্ন তত্ত্ব গ্রহণ করা হয়েছে।

(৩) রােমান আইনঃ রােমান আইন একটি অতি প্রাচীন আইন। এই আইন থেকে বিভিন্ন আইনের উৎপত্তি হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের অনেক দর্শন রােমান আইন থেকে নেয়া হয়েছে।

(৪) গ্লোসিয়াসের বইঃ গ্লোসিয়াসের “De jura Belli ac pacis” গ্রন্থটি মূলত আন্তর্জাতিক আইনের মূল ভিত্তি। গ্রন্থটির ইংরেজি ভার্সন হলাে- Law of war and peace.

(৫) রিচার্ড জোচীর বইঃ রিচার্ড জোচীর লিখিত “Juris et ludicil Facialis, sive juris Gentes.” গ্রন্থটিও আন্তর্জাতিক আইনকে সমৃদ্ধ করেছে।

(৬) ভিয়েনা সম্মেলনঃ ১৮১৫ সালের ভিয়েনা সম্মেলনে মূলত আন্তর্জাতিক নদী ও কূটনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

(৭) প্যারিস সম্মেলনঃ প্যারিস সম্মেলন হয় ১৮৫৬ সালে। এই সম্মেলনে যুদ্ধ জাহাজ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

(৮) জেনেভা কনভেনশনঃ ১৮৬৪ সালের জেনেভা কনভেনশনেও যুদ্ধ সংক্রান্ত বিধান প্রণীত হয়।

(৯) লীগ অব নেশনঃ প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর ‘লীগ অব নেশন’ গঠিত হয়। আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে এটি যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।

(১০) জেনেভা কনভেনশনঃ জেনেভা কনভেনশনে যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যা আন্তর্জাতিক আইনে সাথে সংশ্লিষ্ট।

(১১) জাতিসংঘ সনদঃ জাতিসংঘ সনদ তৈরি হয় ১৯৪৫ সালে। আন্তর্জাতিক আইনে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

Rate this post