প্রশ্নঃ কূটনৈতিকগণ বিশেষ সুবিধার অপব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়? 

ভূমিকাঃ প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের তাদের নিজেদের প্রয়ােজনে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যােগাযােগ স্থাপন করতে হয় বা সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। এই সকল যােগাযােগ বা সম্পর্ক বজায় রাখতে একটি দেশ বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি নিয়ােগ করে। এরা হলেন কূটনৈতিক প্রতিনিধি। কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা বিশেষ সুবিধা ও অধিকার ভােগ করেন।

কূটনৈতিকগণ এই সুবিধার অপব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়ঃ

কূটনৈতিকগণ এই সুবিধার অপব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা নিম্নরূপ-

(১) অবাঞ্ছিত ঘােষণাঃ কোন কূটনৈতিক প্রতিনিধি তার প্রাপ্ত সুবিধার অপব্যবহার করলে গ্রাহক রাষ্ট্র তাকে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করতে পারবে।

(২) প্রাপ্ত সুবিধা বাতিলঃ কোন কূটনৈতিক প্রতিনিধি তার প্রাপ্ত সুবিধার অপব্যবহার করলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত সুবিধা বাতিল করতে পারবে।

(৩) প্রেরক রাষ্ট্রকে নােটিশঃ কোন গ্রাহক রাষ্ট্র প্রেরক রাষ্ট্রকে যে কোন সময় এই মর্মে নােটিশ প্রদান করতে পারবে যে, কোন কূটনৈতিক কর্মচারি বা মিশন প্রধান বা মিশনের অন্য কোন কর্মচারি তাদের কাছে গ্রহণযােগ্য নয়। এই ধরনের নােটিশ প্রদানের জন্য গ্রাহক রাষ্ট্রকে কোন কারণ দর্শাতে হবে না।

(৪) প্রেরক রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরােধঃ কোন কূটনৈতিক প্রতিনিধি তার প্রাপ্ত সুবিধার অপব্যবহার করলে গ্রাহক রাষ্ট্র প্রেরক রাষ্ট্রকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরােধ করতে পারবে।

(৫) প্রেরক রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যাহারঃ গ্রাহক রাষ্ট্র কোন কূটনৈতিককে প্রত্যাহারের অনুরােধ করলে প্রেরক রাষ্ট্র তাকে প্রত্যাহার করতে পারে।

(৬) গ্রাহক রাষ্ট্র কর্তৃক বিচারঃ প্রেরক রাষ্ট্র উপরােক্ত অনুরােধ করলে বা তার প্রাপ্ত সুবিধা বাতিল করলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত কূটনৈতিকের বিচার করতে পারবে।

কোন কোন পরিস্থিতিতে একটি রাষ্ট্র একজন কূটনৈতিককে/দূতকে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করতে বা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেঃ

নিম্নোক্ত কারণে কোন গ্রাহক রাষ্ট্র কোন ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার / অবাঞ্চিত ঘােষণা করতে পারে-

(১) সৎ চরিত্রবান না হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি সৎ চরিত্রের অধিকারী না হন তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

(২) সাবেক নাগরিক হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি গ্রাহক রাষ্ট্রের সাবেক নাগরিক হয় তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

(৩) বিরূপ মনােভাবে অধিকারী হলেঃ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি কোন ঘােষণা বা বিবৃতি দ্বারা গ্রাহক রাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে বা সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিরূপ মনােভাব প্রকাশ করে তাহলে গ্রাহক রাষ্ট্র উক্ত ব্যক্তিকে কূটনৈতিক বা দূত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করতে পারে।

উপসংহারঃ কূটনৈতিক মিশনে কূটনৈতিক প্রতিনিধি যেমন থাকেন তেমনি অ-কূটনৈতিক প্রতিনিধিও থাকেন। যেমনঃ প্রশাসনিক ও কারিগরি কাজে নিয়ােজিত হিসাবরক্ষক, মুদ্রাক্ষরিক, অনুবাদক, প্রশাসনিক সহকারি ইত্যাদি। এছাড়া সেবক হিসেবে গণ্য পিওন, ড্রাইভার, লিফটম্যান, দারােয়ান ইত্যাদিও অ-কূটনৈতিক মর্যাদার কর্মচারি।

Rate this post