প্রশ্নঃ Counter Culture (পাল্টা সংস্কৃতি), Norms (আদর্শ), Sanctions (অনুশাসন) সম্পর্কে আলােচনা কর।

অথবা, Counter Culture (পাল্টা সংস্কৃতি) Norms (আদর্শ), Sanctions (অনুশাসন) সম্পর্কে বিশ্লেষণ কর।

ভূমিকাঃ সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ আলােচ্য বিষয় হলাে পাল্টাসংস্কৃতি, আদর্শ ও অনুশাসন। এগুলাে মূলত সংস্কৃতির অংশবিশেষ। নিম্নে পাল্টা সংস্কৃতি, আদর্শ ও অনুশাসন সম্পর্কে আলােচনা করা হলাে-

পাল্টা সংস্কৃতিঃ পাল্টা সংস্কৃতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে টি. রােমজাক বলেন, “পাল্টা সংস্কৃতি সমাজের আধিপত্যশীল সংস্কৃতির পরিধির বাইরে গুণগতভাবে একটি নতুন ও বিকল্প সংস্কৃতির পরিচায়ক।” .

বৈশিষ্ট্যঃ পাল্টা সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে-

(১) পাল্টা সংস্কৃতি প্রতিক্রিয়াশীল হতে পারে।

(২) বিরােধী মনােভাব প্রকাশকারী সংস্কৃতি।

(৩) প্রচলিত সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদস্বরূপ।

(৪) এটি একটি বিকল্প সংস্কৃতি।

(৫) এটি একটি বৈপ্লবিক সংস্কৃতি।

আদর্শঃ একটি সমাজে চলার পথে কালের পরিক্রমার স্থায়ী যে মূল্যবােধ গড়ে ওঠে তাকে আদর্শ বলে।

বৈশিষ্ট্যঃ আদর্শের বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে-

(১) প্রচলিত মূল্যবােধের পরিপন্থী নয়।

(২) মানুষকে নৈতিক করে তােলে।

(৩) সামজে এর গুরুত্ব অত্যধিক।

(৪) সমাজ পরিবর্তিত হলেও আদর্শ সহজে পরিবর্তিত হয় না।

(৫) আদর্শ হচ্ছে স্থায়ী।

(৬) আদর্শহীন মানুষের সমাজে মূল্যায়ণ কম।

(৭) একটি অর্জন করতে কোনাে বস্তুগত মাধ্যমের প্রয়ােজন হয় না।

(৮) আদর্শগত পরিবর্তন সমাজে কমে নয়।

অনুশাসনঃ অনুশাসন হচ্ছে সংস্কৃতির একটি অপরিহার্য অঙ্গ।

বৈশিষ্ট্যঃ অনুশাসনের বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে-

(১) এটি এক প্রকার অবস্তুগত সংস্কৃতি।

(২) অনুশাসন ছাড়া সমাজ চালিত হতে পারে না।

(৩) আদর্শ ও মূল্যবােধের সমন্বয়ে অনুশাসন তৈরি হয়।

(৪) অনুশাসন লিখিত বা অলিখিত হতে পারে।

(৫) অনুশাসন না মানা হচ্ছে আদর্শগত বিচ্যুতি।

উপযুক্ত আলােচনা প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমাজে আদর্শ ও অনুশাসন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এগুলাে ছাড়া একটি সমাজ । বিচ্যুত হতে বাধ্য। পাল্টাসংস্কৃতিকে অনেক সমাজে নেতিবাচক বিবেচনা করা হলেও সমাজে এর যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে। পাল্টা সংস্কৃতি না থাকলে অনেক সময় প্রচলিত সমাজব্যবস্থা গোঁড়মীর দিকে এগিয়ে চলে।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, পাল্টা সংস্কৃতি (Counter Culture) আদর্শ (Norms) এবং অনুশাসন। Sanctions হচ্ছে একটি সমাজের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলাে ছাড়া সমাজ স্থিতিশীল থাকতে পারে না। আবার ইতিবাচকভাবে গতিশীলও হতে পারে না। অর্থাৎ এগুলাে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সকল সমাজেই এগুলাের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। সমাজকে টিকিয়ে রাখতেই আদর্শ ও অনুশাসনের কোনাে বিকল্প নেই। পাল্টা সংস্কৃতি অন্যদিক। থেকে হলাে প্রচলিত সংস্কৃতির প্রতিবাদস্বরূপ, যা সকল সমাজেই খুঁজে পাওয়া যায়।

Rate this post