প্রশ্নঃ দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতির ধারণা তুলে ধর।

অথবা, দুই তরফা দাখিলা পদ্ধতি কী?  

Concept of Double Entry System

উত্তরাঃ প্রত্যেকটি আর্থিক লেনদেনে দুটি পক্ষ থাকে। পক্ষদ্বয়ের একটিকে বলা হয়, ডেবিট (বামপক্ষ) এবং অপরপক্ষকে বলা হয় ক্রেডিট (ডানপক্ষ)। যে হিসাব পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনের দুটি পক্ষকে সমান টাকার অঙ্ক দ্বারা একপক্ষকে ডেবিট অপরটিকে ক্রেডিট করে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে হিসাব পদ্ধতিতে হিসাব সমীকরণ (A = L + OE) অনুসরণ করে আর্থিক লেনেদেন লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে। 

দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিজ্ঞানসম্মত হিসাব পদ্ধতি। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে সর্বজনস্বীকৃত হিসাব নীতিমালা অনুসরণ করা হয় বিধায় এ পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত আর্থিক বিবরণীসমূহ সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়। এ পদ্ধতি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সঠিক আর্থিক ফলাফল নির্ণয় ও সঠিক আর্থিক অবস্থা উপস্থাপন করতে পারে। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা যায়। হিসাবে কোনো প্রকার জাল জুয়াচুরি হলে তা উদঘাটন করা সহজ হয়। এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করলে তা বিশ্লেষণ করে নানাবিধ তথ্য পাওয়া যায়- যা ভবিষ্যতে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

তাছাড়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সকলকে তাদের প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য প্রদান করতে পারে। এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করলে বিভিন্ন হিসাবকালের মধ্যে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ গতিবিধি অনুধাবন করা যায়। এ হিসাব পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট পক্ষকে জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ সৃষ্টিতে উৎসাহিত করে। এ হিসাব পদ্ধতির মূল সমস্যা হলো এটি অপেক্ষাকৃত জটিল। যাদের হিসাববিজ্ঞানের ওপর পরিপূর্ণ জ্ঞান নেই তাদের পক্ষে এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। এটি সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হিসাবপদ্ধতি। ফলে ছোট ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে এ পদ্ধতি ব্যবহার উপযোগী নয়। এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করলে বড় বড় হিসাবের বই সংরক্ষণ করতে হয়। গোপনীয়তা রক্ষা করা যায় না বলে এটি এ পদ্ধতির একটি অন্যতম সমস্যা।

Rate this post