ভূমিকাঃ সমাজবিজ্ঞান একটি আদর্শনিষ্ঠ বিজ্ঞান । মানবসভ্যতার উষালগ্ন থেকেই মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে আসছে। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, “মানুষ স্বভাবতই সামাজিক জীব। যে মানুষ সমাজে বাস করে না, সে হয় দেবতা না হয় পশু।” তাই সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ প্রথম থেকেই সমাজকে জানতে চেয়েছে।

সমাজবিজ্ঞানের পরিধি বা বিষয়বস্তুঃ বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমরা সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুকে নিম্নে উল্লেখিতভাবে দেখতে পারি। যথাঃ  

সামাজিক সম্পর্কঃ সমাজবিজ্ঞান সামাজিক সম্পর্কসমূহের বিশ্লেষণ ও সামাজিক ঘটনাসমূহের সমাজতাত্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে।

সামাজিক প্রতিষ্ঠানঃ সমাজের অভ্যন্তরে রাজনৈতি , অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, পারিবারিক, শিক্ষামূলক,

বিনোদনমূলক ইত্যদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যধারা, উৎপত্তি ও সমাজের ওপর প্রভাব সমাজবিজ্ঞানে আলোচিত হয়।

সম্প্রদায়ঃ সমাজে সম্প্রদায়ের স্থান বিশেষভাবে গুরুতৃপূর্ণ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য, কার্যধারা, উৎপত্তি ইত্যাদি সমাজবিজ্ঞানের আলোচনায় স্থান পেয়ে থাকে। 

পড়ুনঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিগুলাে সংক্ষেপে বর্ণনা কর  

সামাজিক স্তরবিন্যাসঃ সমাজ নানা স্তরে বিন্যস্ত। ব্যক্তিগত সম্পত্তির আবির্ভাবের ফলে স্তরবিন্যাস

আরও তীব্র হয়েছে। সমাজবিজ্ঞান এসব স্তর নিয়েও আলোচনা করে ।

সামাজিক কাঠামোঃ সমাজ জনসংখ্যার সমষ্টি। জনসংখ্যার ঘনত্বের জন্য সমাজকাঠামোতে পার্থক্য

পরিলক্ষিত হয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে জনসংখ্যা বিশেষ প্রভাব ফেলে। সমাজবিজ্ঞান এসব নিয়ে আলোচনা করে। 

সামাজিক নিয়ন্ত্রণঃ সমাজের বিশৃঙ্খলা, অন্যায়, দারিদ্র্য ইত্যাদি সমস্যা ও তার সমাধানের নিয়ম-কানুন তথা সামাজিক নিয়ন্ত্রণ সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় | .

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজ সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক বা বস্তুনিষ্ঠ অধ্যয়ন। ব্যক্তি এবং সমাজজীবনের পুরা চিত্র এতে স্থান পেয়েছে, তাই এর পরিধি বা বিষয়বস্তু অত্যন্ত ব্যাপক। সমাজের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় তথা মানুষের যাবতীয় আচরণ সম্পর্কে জানতে হলে সমাজবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।  

5/5 - (1 vote)