প্রশ্নঃ জনগণের সার্বভৌমত্ব কাকে বলে?

অথবা,জনগণের সার্বভৌমত্ব কী?

ভূমিকাঃ সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব সম্ভবপর নয়। সার্বভৌমত্বের প্রকৃতি, অবস্থান ও ব্যবহার সম্পর্কে মতবিরােধীদের সাথে এর বিভিন্ন রূপ রয়েছে। জনগণের সার্বভৌমত্বের ধারণা গণতন্ত্রের ধারণার সাথে সম্পর্কিত।

জনগণের সার্বভৌমত্বঃ জনগণের সার্বভৌমত্বের ধারণা কোনাে নতুন বিষয় নয়। পাশ্চাত্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অগ্রগতির সাথে এ তত্ত্ব প্রচারিত হয়েছে। মধ্যযুগের অবসানের প্রাক্কালে ওকহ্যামের এবং পাদুয়ার মারসিলিও জোরের সাথে ঘােষণা করেন যে, জনগনই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। মুসলিম দার্শনিক ইবনে রুশদ স্বােচ্ছার কণ্ঠে। জনগণের ক্ষমতার জয়গান করেন। জন লক ও রুশাে জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা প্রচার করেন। জন লকের মতে, ‘জনগণই চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী’। আমেরিকার স্বাধীনতা ঘােষণার এবং ফরাসী বিপ্লবের সময়ও জনগণের সার্বভৌমতুকে মূলধন হিসাবে গ্রহণ করা হয়। অধ্যাপক রিচির মতে, প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরােক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে, ভয় দেখিয়ে অথবা বিপ্লবের পতাকা উত্তোলন করে জনগণ সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়ােগ করে। যদি সার্বভৌমত্বে জোরের কোনাে সম্পর্ক থাকে, তাহলেও জনগণ যে সবচেয়ে শক্তিশালী তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। জনগণ ইচ্ছা করলে যেকোনাে সরকারের পতন ঘটাতে পারে। তাই বলা যায়, জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায়, জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার প্রকৃত মালিক। জনগণের সার্বভৌমত্ব বলতে নির্বাচকমণ্ডলীর সার্বভৌমত্ব বুঝায়। কারণ জনগণ তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়ােগ করে।

Rate this post