শিশুর শিক্ষায় পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও পরিবারের কতকগুলি সীমাবদ্ধতাও থাকে। নীচে এমনই কয়েকটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করা হল一

(১) পরিবারের অকারজনিত সমস্যা: যৌথ পরিবার লােপ পাওয়ার ফলে বর্তমানে পরিবারের আকার ছােটো হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সদস্যরা লৌকিকতা, সামাজিকতা ইত্যাদি সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়ছে। ফলে পরিবার তার শিক্ষামূলক ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে।

(২) পরিবারের কার্য পরিসরের সীমাবদ্ধতা: আগে বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা পরিবার নিজেই করত। কিন্তু বর্তমানে সমাজ বিবর্তনের ফলে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে পরিবারের পাশাপাশি বস্তু সমান্তরাল প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। ফলে শিশুর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ আজ আর শুধুমাত্র পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

(৩) সময়ােপযােগী চাহিদাপূরণে ব্যর্থতা: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আজকের পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। শিশুদের কাছে পরিবারের শিক্ষামূলক গ্রহণযােগ্যতার ক্ষেত্রটিও সীমিত হয়ে আসছে।

(৪) নিরক্ষরতাজনিত সমস্যা: নিরক্ষরতার সমস্যাটি পরিবারের শিক্ষামূলক কাজের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সীমাবদ্ধতা।

(৫) শিক্ষার বহুমুখিত: আধুনিক যুগের শিক্ষার বৈচিত্র্য বাবচুমুখিতা পরিবারের শিক্ষামূলক ভূমিকার ক্ষেত্রে আর-একটি সীমাবদ্ধতা।

(৬) নিরাপত্তাজনিত সমস্যা: ছােটো পরিবারে তিন-চার জন সদস্য থাকে, ফলে পরিবার শিশুকে সবসময় উপযুক্ত নিরাপত্তা দিতে পারে না।

(৭) পরিবারের অজ্ঞতা: শিশুর বিকাশ সম্পর্কিত বহু তথ্য আজ বিজ্ঞানের করায়ত্ত। তবু অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরাই এ সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অবহিত নন। এটি পরিবারের অন্যতম সীমাবদ্ধতা।

ওপরের আলােচনা থেকে দেখা যায়, যৌথ পরিবার ভেঙে পরিবার ছােটো হওয়ার ফলে এবং ক্রম পরিবর্তনশীল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় পরিবারের কাছ থেকে শিশুরা সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, দৈহিক নিরাপত্তা প্রভৃতি পর্যাপ্ত পরিমাণে পায় না। এসবই হল শিক্ষার প্রতিষ্ঠান, হিসেবে পরিবারের সীমাবদ্ধতা।

Rate this post