কথামুখ: আন্তন চেখভের সােয়ান সং অবলম্বনে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘নানা রঙের দিন নাটকটিতে স্মৃতির পথ ধরে একজন অভিনেতার নিজেকে খোঁজার পটভূমিতে রয়েছে তার বর্তমানের অসহায়তা এবং গ্লানি। এই গ্লানির একদিকে যেমন রয়েছে তার ব্যক্তিজীবনের নিঃসঙ্গতা, অন্যদিকে রয়েছে অভিনয় জীবনের অপ্রাপ্তির হতাশা।

নিঃসঙ্গ ব্যক্তিজীবন : পরিবারের কেউ না থাকায় একাকিত্বের কারণে তার মনে জন্ম নেয় তীব্র অবসাদ। বারবার ফিরে আসে অভিনয়ের কারণে যৌবনের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার দুঃসহ স্মৃতি।

অপ্রাপ্তির হতাশী : একসময়ের প্রধান চরিত্রাভিনেতা আজ দিলদারের মতাে নিতান্তই গৌণ চরিত্রে অভিনয় করেন এবং “তাও আর বছর কয়েক পরে মানাবে না”—এই হতাশাই হয়তাে অভিনেতা রজনীকান্তকে নেশার প্রতি আসক্ত করে তােলে। আর এই নেশার ঘাের থেকে মুক্তি পেতেই স্মৃতির পথ ধরে হাঁটেন তিনি। তখন রিজিয়া নাটকে বক্তিয়ারের চরিত্রে কিংবা, ‘সাজাহান’ নাটকে ঔরঙ্গজেবের চরিত্রে অভিনয়ের স্মৃতি তাকে সেই শূন্য প্রেক্ষাগৃহের অন্ধকারপ্রায় মধ্যে সাময়িকভাবে পুনরুজ্জীবিত করে তােলে। পরমুহূর্তেই বর্তমানের শূন্যতা ঘিরে ধরে তাকে। তার মনে হয় মন থেকে নেমে এলে অভিনেতার আর কোনাে সামাজিক স্বীকৃতিই থাকে না।

ইতিকথা : এভাবেই ‘নানা রঙের দিন’ নাটকে একজন অভিনেতার জীবনের রূপ ও রূপান্তরের ছবিকে সার্থকভাবে তুলে ধরেছেন নাট্যকার অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Rate this post