প্রশ্নঃ অনুমোদিত ও প্রতিশ্রুত / বিলিকৃত মূলধনের পার্থক্য কি? 

ভূমিকাঃ ইংরেজি Capital শব্দের বাংলা অর্থ মূলধন। মূলধনকে একটি কোম্পানির প্রাণ বলা যায়। কোন কোম্পানি গঠন করতে হলে বা জিনিসপত্র ক্রয় করতে হলে বা যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে হলে বা শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরি প্রদান ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করতে হলে মূলধনের বিকল্প নেই।

কোম্পানির মূলধন (Capital) বা পুঁজি কাকে বলেঃ

কোন কারবার শুরু করতে হলে অর্থ প্রয়োজন। অর্থ ছাড়া কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বা কারবার শুরু করা যায় না এবং পরিচালনাও করা যায় না ।

সুতরাং বলা যায়, যে অর্থ বিনিয়োগ করে কোন কারবার আরম্ভ করা হয় তাকে মূলধন বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দেনা ছাড়া কোম্পানির যে অর্থ-সম্পদ থাকে তাকে মূলধন বলে।

অনুমোদিত ও প্রতিশ্রুত / বিলিকৃত মূলধনের পার্থক্যঃ নিম্নে অনুমোদিত ও প্রতিশ্রুত / বিলিকৃত মূলধনের পার্থক্য-

পার্থক্যের বিষয়

অনুমোদিত মূলধন

প্ৰতিশ্ৰুত বা বিলিকৃত মূলধন

(১) সংজ্ঞাগত পার্থক্য 

কোন কোম্পানি যে পরিমাণ শেয়ার বিক্রির অধিকার পায় সেই অভিহিত মূল্যকে শেয়ারের অনুমোদিত মূলধন বলে। 

মূলধনের যে অংশ ক্রয়ের জন্য জনগণের নিকট থেকে আবেদনপত্র পাওয়া গেছে এবং যা বিক্রি করা হয়েছে তাকে প্রতিশ্রুত/বিলিকৃত মূলধন বলে।

(২) প্রতিশব্দগত পার্থক্য 

অনুমোদিত মূলধনকে ইংরেজিতে Authorize Capital বলে। 

প্রতিশ্রুত মূলধনকে ইংরেজিতে Subscribed Capital বলে। 

(৩) শ্রেণিগত পার্থক্য

অনুমোদিত মূলধন বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হতে পারে। 

প্রতিশ্রুত মূলধন বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হতে পারে না। নির্দিষ্ট শ্রেণিতে বিভিক্ত হয়। 

(৪) বৃদ্ধিগত পার্থক্য 

অনুমোদিত মূলধন বৃদ্ধি করা যায়৷ 

প্রতিশ্রুত মূলধন বৃদ্ধি করা যায় না।

(৫) হ্ৰাসগত পার্থক্য

অনুমোদিত মূলধন হ্রাস করা যায়৷ 

প্রতিশ্রুত মূলধন হ্রাস করা যায় না।

(৭) ব্যাপকতাগত পার্থক্য

অনুমোদিত মূলধন ব্যাপত অর্থে ব্যবহৃত হয়। 

প্রতিশ্রুত মূলধন সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহৃত হয়। 

(৮) নিবন্ধনগত পার্থক্য

কোম্পানি নিবন্ধনের সময় অনুমোদিত মূলধন প্রয়োজন হয়।

কোম্পানি নিবন্ধনের সময় প্রতিশ্রুত মূলধন প্রয়োজন হয় না।

(৯) পরিমাণগত পার্থক্য

কোম্পানির মোট মূলধনই হলো অনুমোদিত মূলধন। 

প্রতিশ্রুত মূলধনের একটি অংশ হলো প্রতিশ্রুত মূলধন।

(১০) বিলিগত পার্থক্য 

অনুমোদিত মূলধনের সম্পূর্ণ অংশ বিলিযোগ্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।

প্রতিশ্রুত মূলধনের সম্পূর্ণ অংশ বিলিযোগ্য।

উপসংহারঃ মূলধন ছাড়া কোন কোম্পানি চলতে পারে না। মূলধনই হলো কোম্পানির মূল ভিত্তি। কোন কোম্পানি প্রয়োজন মনে করলে তার মূলধন বৃদ্ধি করতে পারে। আবার প্রয়োজন মনে করলে হ্রাসও করতে পারে। মূলতঃ কোম্পানির উন্নতির জন্যই মূলধন বৃদ্ধি বা হ্রাস করা হয়।

Rate this post