লোহা তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং এতে বিভিন্ন ধাপ জড়িত। মূলত, দুটি প্রধান পদ্ধতি ব্যবহার করে লোহা তৈরি করা হয়:

১. খনিজ থেকে লোহা নিষ্কাশন:

• খনি অনুসন্ধান ও উত্তোলন: প্রথমে, পৃথিবীর ভূত্বকে অনুসন্ধান করে লোহার আকরিক খনি খুঁজে বের করা হয়। এরপর খনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খনিতে থাকা লোহার আকরিক উত্তোলন করা হয়। লোহার প্রধান আকরিক হলো হেমাটাইট (Fe2O3), ম্যাগনেটাইট (Fe3O4), আয়রন পাইরাইটিস (FeS2) এবং সিডারাইট (FeCO3)।
• সংশোধন: উত্তোলিত আকরিকে প্রথমে ভেঙে চূর্ণ করা হয় এবং তারপর অপ্রয়োজনীয় পদার্থ (যেমন, পাথর, বালি) আলাদা করে ফেলা হয়। এই প্রক্রিয়াকে সংশোধন বলা হয়।
• বিজারণ: সংশোধিত আকরিককে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করে বিজারণ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায়, আকরিকের অক্সিজেন অপসারণ করা হয় এবং লোহার অক্সাইড (যেমন, Fe2O3) লোহাতে পরিণত হয়। বিজারণের জন্য সাধারণত কয়লা বা কোক ব্যবহার করা হয়।
• শোধন: বিজারিত লোহায় এখনও কিছু অপ্রয়োজনীয় পদার্থ (যেমন, কার্বন, সিলিকন, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, সালফার) থাকে। এই অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলো অপসারণের জন্য লোহাকে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করে শোধন করা হয়। শোধনের জন্য সাধারণত অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়।

২.ব্যবহৃতলোহা থেকে পুনর্ব্যবহার:

• সংগ্রহ ও বাছাই: প্রথমে, ব্যবহৃত লোহার জিনিসপত্র (যেমন, গাড়ি, যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র) সংগ্রহ করা হয় এবং বিভিন্ন ধরণের লোহার উপকরণ অনুসারে বাছাই করা হয়।
• পিগলেট করা: বাছাই করা লোহার জিনিসপত্রগুলোকে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করে পিগলেট করা হয়।
• শোধন: পিগলেট করা লোহায় থাকা অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলো অপসারণের জন্য লোহাকে উচ্চ তাপমাত্রায় গরম করে শোধন করা হয়।