Hello,

Sign up to join our community!

Welcome Back,

Please sign in to your account!

Forgot Password,

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Please briefly explain why you feel this question should be reported.

Please briefly explain why you feel this answer should be reported.

Please briefly explain why you feel this user should be reported.

QNA BD Latest Questions

Mithu Khan
Enlightened

মদিনা সনদ কত সালে লিখিত হয়

মদিনা সনদ কত সালে লিখিত হয়

1 Answer

  1. মদিনা সনদ ৬২২সালে লিখিত হয় ।

    ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন তখন মদিনার সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। মদিনায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার মতো কোনো কেন্দ্রীয় সরকার ছিল না।

    তাই হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় ইসলাম প্রচার ও সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা কায়েম করার পর সেখানে সর্বপ্রথম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে মদিনায় বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সদ্ভাব প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সংকল্প করেন। মহানবী (সা.) তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দ্বারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে মদিনা ও এর আশপাশে বসবাসকারী মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান ও পৌত্তলিকদের মধ্যে সদ্ভাব ও সম্প্রীতি স্থাপন করতে না পারলে একটি সুসংহত রাষ্ট্র স্থাপন করা সম্ভব নয়। তাই হিজরতের অব্যবহিত পরেই তিনি মদিনায় অবস্থানকারী মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন ও মদিনায় বিবদমান গোত্রগুলোর মধ্যকার বিরোধ মীমাংসা করে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের প্রয়াস পান।

    এ উদ্দেশ্যে তিনি মদিনায় বসবাসরত সব জাতির জন্য ৬২২ খ্রিস্টাব্দে একটি সনদ প্রণয়ন করেন, যা বিশ্ব ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ (Charter of Medina) নামে পরিচিত। মদিনা সনদে মোট ৪৭টি ধারা ছিল। এর উলে­খযোগ্য ধারাগুলো নিন্মরূপ-♦          মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী মুসলমান, ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিকসহ সব সম্প্রদায় একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে এবং সব সম্প্রদায় সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে।

    ♦          হজরত মুহাম্মদ (সা.) নব গঠিত মদিনা প্রজাতন্ত্রের সভাপতি হবেন এবং পদাধিকার বলে তিনি মদিনার সর্বোচ্চ বিচারালয়ের (Court of Appeal) সর্বময় কর্তা হবেন।

    ♦          সব নাগরিক পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

    ♦          কেউ কুরাইশদের সঙ্গে বা অন্য কোনো বহিঃশত্রুর সঙ্গে কোনো প্রকার গোপন সন্ধি করতে পারবে না কিংবা মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রে কুরাইশদের সাহায্য করতে পারবে না। কোনো সম্প্রদায় মদিনা প্রজাতন্ত্রের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কাজে লিপ্ত হতে পারবে না।

    ♦          সনদে স্বাক্ষরকারী সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

    এ জন্য সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।♦          মদিনা নগরী আক্রান্ত হলে দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সবাই যুদ্ধ করবে এবং প্রতিটি সম্প্রদায় নিজ নিজ ব্যয়ভার বহন করবে।

    ♦          মদিনা নগরীকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো এবং এখানে রক্তপাত, হত্যা, বলাৎকার ও অপরাধমূলক কাজ নিষিদ্ধ করা হলো।

    ♦          দুর্বল ও অসহায়কে সর্বাÍকভাবে সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।

    ♦          অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে এবং সব ধরনের পাপী ও অপরাধীকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে।

    ♦          হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পূর্ব অনুমতি ছাড়া মদিনাবাসী কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।

    ♦          নিজেদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তা মীমাংসা করে দেবেন।

    ♦          এই সনদের শর্ত ভঙ্গকারীর ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হবে।

    ♦          ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করবে। মদিনা সনদই পৃথিবীর সর্বপ্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ লিখিত সংবিধান। এর আগে সুমেরীয় রাজা ডুঙ্গি ‘ডুঙ্গি কোড’ ((Dungi Code, বেবিলনীয় রাজা হাম্মুরাবি ‘হাম্মুরাবি আইন সংহিতা’ ((Code of Hammurabi) ১৭৫৪ খ্রিস্টপূর্ব ও রোমানরা ‘দ্বাদশ সারণি’ (Twelve Tables) ৪৫০ খ্রিস্টপূর্ব লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। যুগের চাহিদা অনুযায়ী এসব আইন বা সংবিধান অভিনব হলেও আধুনিক রাষ্ট্রীয় সংবিধানের ন্যায় তা রাষ্ট্র পরিচালনা ও নাগরিকদের সব ধরনের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম ছিল না। এরপর দীর্ঘকাল বিরতির পর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনা সনদ নামে যে আইনটি প্রণয়ন করেন, তা ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান। এ আইনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল। মদিনায় বসবাসরত সব জাতি ও গোত্র এ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। এ আইনে দাস-দাসী, নারী, দুর্বল ও অসহায় থেকে শুরু করে উচ্চ শ্রেণি পর্যন্ত সবার অধিকারের কথা উলে­খ ছিল। মদিনা সনদের অপর একটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে পার্থিব ও ধর্মীয় বিধানের সমন্বয় হয়েছিল। মহানবী (সা.) মদিনা সনদের মাধ্যমে প্রকারান্তরে আল্লাহর বিধানকে কার্যকর করেছিলেন। আল্লাহর বিধান ছিল সমগ্র মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। তাই মদিনা সনদ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। এর মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছিল। বর্তমান বিশ্বের রাষ্ট্রীয় সংবিধানের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, এগুলো মদিনা সনদের অনেক পরে রচিত হয়েছে। এসব সংবিধান বিভিন্ন সময় সংশোধিতও হচ্ছে। তার পরও তা সব নাগরিকের কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না। সংবিধানের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রায়ই বিতর্ক হয়। অথচ আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে আরবে যখন অন্ধকার যুগ চলছিল, যে সমাজে হত্যা, লুণ্ঠন, যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাত, প্রতিহিংসা প্রভৃতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রচলিত ছিল, সেই সময়ে মহানবী (সা.)-এর মদিনা সনদ সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছিল। পৃথিবীর পূর্বাপর সব সংবিধানের মধ্যে মদিনা সনদই শ্রেষ্ঠ। মদিনা সনদের প্রতিটি ধারা সর্বকালের সব দেশের রাষ্ট্রীয় সংবিধানের জন্য একটি আদর্শ। এ সংবিধানের আলোকে যেকোনো দেশের সংবিধান রচিত হলে আজও তা সব নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।

Leave an answer

Leave an answer

Related Questions