চর্যাপদের দ্বিতীয় পদের ব্যাখ্যা
Sign up to join our community!
Please sign in to your account!
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
Notifications
চর্যাপদ – ২ [পুথিপৃষ্ঠা ৪।খ রাগ- গবড়া কবি – কুক্কুরীপা]
শব্দার্থ ও টীকা
দুলি- কাছিম, দুহি – দহন করা, বিআতি- বিবাহযোগ্য নারী, চৌরি – চোরে, গই- গিয়ে, মাগঅ- খোজা যায়, দিবসই- দিনের বেলা, ভাঅই- ভীত হওয়া, কাউ- কাক, কামরু- কামরুপ।
বাচ্যার্থ
মাদি কাছিম দহন করা হল, পাত্রে দুধ ধরে না। গাছের তেঁতুল কুমীরে খায়। আঙ্গিনাতেই ঘর – সংসার। ওগো বধূ শোনো। অর্ধরাত্রে চোর এসে কানেট ( কানের অলংকার) নিয়ে গেল, শ্বশুর নিদ্রা,বধূ জেগে রইল। দিনে বধূ কাকের ভয়ে ভীত হয় রাত্রিতে কামসেবার্থে যায়। এই চর্যা কক্কুরীপা এর দ্বারা গাওয়া হয়।
গূঢ়ার্থ
দুলি অর্থ সর্ব প্রকার দ্বৈতত্ব বা তার প্রতীক দেহের দুই পাশের দুই নাড়ী। দোহন জাত বস্তু সংবৃত্তি বোধিচিত্ত পীঠ নাভিদেশে অবস্থিত মণিপুর চক্র।বৃক্ষ দেহবৃক্ষ,তেন্তলি বক্রগামী বোধিচিত্ত,কুম্ভীর যৌগিক কুম্ভক, কুম্ভক যোগে বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবিকৃত করা যায়। বিআতি ও বহুড়ী হল অবধূতিকা। সহজানন্দের আশ্রয় মহাসুখচক্রই হল ঘর এবং অঙ্গন হল বিরমানন্দস্থান। কানেট হল প্রকৃতি দোষ, চোর সহজানন্দ। অর্ধরাত্রি হল সহজানন্দে বিলীন হবার পূর্বক্ষণ।শ্বশুর শ্বাসবায়ু।দিবস চিত্তের প্রবৃত্তিময় অবস্থা,রাত্রি নিবৃত্তির অবস্থা এবং কামরুপ মহাসুখচক্র।
এই সব সন্ধ্যাভাষার মাধ্যমে আসলে সহজানন্দ উপভোগের উপায়ই বর্ণনা করা হয়েছে।বামগা ঈ দক্ষিণগা নাড়ীর দ্বৈতত্ব ও স্বাভাবিক গতি নষ্ট করে তাদের মধ্যমার্গে একত্রিত করলে বোধিচিত্তকে আর নাভিস্থিত মণিপুরচক্রে ধরে রাখা যায় না,তা উর্দ্ধগামি হয়।কুম্ভক যোগের দ্বারা বোধিচিত্তকে বিশুদ্ধ করা যায়। বোধিচিত্তকে নিঃস্বভাবিকৃত করে মধ্যমার্গে উর্ধ্বগামি করলে সাধকের যে আনন্দ হয় সেই আনন্দানুভুতির তৃতীয় ও চতুর্থ স্তর হল বিরমানন্দ ও সহজানন্দ আঙ্গিনা ও ঘরের মতোই পরস্পরের সমীপবর্তী। সহজানন্দে বিলীন হবার পূর্বক্ষণে সাধক যদি কুম্ভকযোগে চিত্তের প্রকৃতিদোষ হরণ করেন তবে তিনি এই আনন্দ লাভ করেন। সাধকের পক্ষে এই প্রকৃতি প্রভাস্বর সর্বশূণ্য অবস্থাই পরম কাম্য। পারমার্থিক অবস্থায় চিত্ত নির্বিকল্পাকারে মহাসুখচক্রে গমন করে।