Hello,

Sign up to join our community!

Welcome Back,

Please sign in to your account!

Forgot Password,

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Please briefly explain why you feel this question should be reported.

Please briefly explain why you feel this answer should be reported.

Please briefly explain why you feel this user should be reported.

QNA BD Latest Questions

Mithu Khan
Enlightened

ইউনিয়ন পরিষদের কয়টি বাধ্যতামূলক এবং কয়টি ঐচ্ছিক দায়িত্ব রয়েছে?

ইউনিয়ন পরিষদের কয়টি বাধ্যতামূলক এবং কয়টি ঐচ্ছিক দায়িত্ব রয়েছে

1 Answer

  1. উত্তর: : ইউনিয়ন পরিষদের ১০টি বাধ্যতামূলক এবং ৩৮টি ঐচ্ছিক দায়িত্ব রয়েছে।

    বাধ্যতামূলক কার্যাবলী

    • আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করে।
    • অপরাধ, বিশৃঙ্খলা এবং চোরাচালান দমনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
    • কৃষি, বৃক্ষরোপণ, মৎস্য ও পশুপালন, স্বাস্থ্য, কুটিরশিল্প, সেচ, যোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পাদন করে।
    • পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের প্রসার ঘটায়।
    • স্থানীয় সম্পদের উনণয়ন ঘটায় এবং তার ব্যবহার নিশ্চিত করে।
    • জনগণের সম্পত্তি যথা-রাসত্মা, ব্রীজ, কালভার্ট, বাঁধ, খাল, টেলিফোন, বিদ্যুত ইত্যাদি সংরক্ষণ করে।
    • ইউনিয়নপর্যায়ে অন্যান্য সংস্থার উন্নয়ন কার্যাবলী পর্যালোচনা করে এবং প্রয়োজনেউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট এ বিষয়ে সুপারিশ করে।
    • স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহ দেয়।
    • জন্ম-মৃত্যু, অন্ধ, ভিক্ষুক ও দুঃস্থদের নিবন্ধন করে।
    • সব ধরনের শুমারী পরিচালনা করে।

    ঐচ্ছিক কার্যাবলী

    • ইউনিয়ন পরিষদ জনপথ ও রাজপথের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।
    • সরকারি স্থান, উন্মুক্ত জায়গা, উদ্যান ও খেলার মাঠ-এর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।
    • জনপথ, রাজপথ ও সরকারি স্থানে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করে।
    • সাধারণভাবে গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ এবং বিশেষভাবে জনপথ, রাজপথ ও সরকারি জায়গায় গাছ লাগায় এবং তা রক্ষা করে।
    • কবরস্থান, শ্মশান ঘাট, জনসাধারণের সভার স্থান ও জনসাধারণের অন্যান্য সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করে।
    • পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করে এবং তা সংরক্ষণ করে।
    • জনপথ, রাজপথ ও সরকারি স্থান নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেসব জায়গায় অনধিকার প্রবেশ রোধ করে।
    •    জনগণের পথ, রাস্তা, নির্ধারিত স্থানে উৎপাত বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণ করে।
    • ইউনিয়নের পরিচ্ছন্নতার জন্য নদী, বন ইত্যাদির তত্ত্বাবধান, স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
    • গোবর ও রাসত্মার আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ করে।
    • অপরাধমূলক ও বিপজ্জনক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।
    • মৃত পশুর দেহ অপসারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে।
    • পশু জবাই নিয়ন্ত্রণ করে।
    • ইউনিয়নে দালান নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
    • বিপজ্জনক দালান ও সৌধ নিয়ন্ত্রণ করে।
    • কূয়া, পানি তোলার কল, জলাধার পুকুর এবং পানি সরবরাহের অন্যান্য কাজের ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ করে।
    • খাবার পানির উৎস শুদ্ধকরণ এবং দূষিতকরণ রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
    • জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সন্দেহযুক্ত কূপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানের পানি ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ।
    • খাবারপানির জন্য সংরক্ষিত কূপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বানিকটবর্তী স্থানে গোসল, কাপড় কাঁচা বা পশুর গোসল নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করে।
    • খাবারপানির জন্য সংরক্ষিত কূপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের অন্যান্য স্থানে বানিকটবর্তী স্থানে শন, পাট বা অন্যান্য গাছ ভেজানো নিষিদ্ধ করে।
    • আবাসিক এলাকার মধ্যে চামড়া রং করা বা পাকা করা নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করে।
    • আবাসিক এলাকার মধ্যে মাটি খনন করে পাথর বা অন্যান্য বস্ত্ত উত্তোলন নিষিদ্ধ করে।
    • আবাসিক এলাকায় ইট, মাটির পাত্র বা অন্যান্য ভাটি নির্মাণ  নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করে।
    • গৃহপালিত পশু বা অন্যান্য পশু বিক্রয়ের তালিকা তৈরি করে।
    • মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
    • জনসাধারণের উৎসব পালন নিশ্চিত করে।
    • অগ্নি , বন্যা, শিলাবৃষ্টিসহ ঝড়, ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের তৎপরতার ব্যবস্থা করে।
    • বিধবা, এতিম, গরিব ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করে।
    • খেলাধুলার উন্নয়ন করা।
    • শিল্প ও সামাজিক উন্নয়ন, সমবায় আন্দোলন ও গ্রামীণ শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে এবং এসব ক্ষেত্রে অংশ নেওয়ার জন্য মানুষকে উৎসাহ দেয়।
    • বাড়তি খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
    • পরিবেশ ব্যবস্থাপনার কাজ করে।
    • গবাদিপশুর খোয়াড় নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করে।
    • প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে।
    • গ্রন্থাগার ও পাঠাগারের ব্যবস্থা করে।
    • ইউনিয়ন পরিষদের সাথে মিল আছে এমন কাজে নিয়োজিত অন্যান্য সংস্থার সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে।
    • জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে শিক্ষার উন্নয়নে সাহায্য করে।
    • ইউনিয়নের বাসিন্দা বা পরিদর্শনকারীদের নিরাপত্তা, আরাম-আয়েশ বা সুযোগ সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

     

     

     

     

    ইউনিয়ন পরিষদ পৌর ও উন্নয়ন কাজের  আওতায় সামাজিক,অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক ৪টি দায়িত্ব পালন করে। যথা:

    যোগাযোগ

    • গ্রামপর্যায়ে রাসত্মাঘাটের উন্নয়ন করা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব। চলাচল ওউৎপন্ন পণ্য হাটে বাজারে নেয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ রাসত্মা, পুল, কালভার্টনির্মাণ ও সংরক্ষণ করে। জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য রাসত্মার পাশেবৈদ্যূতিক বাতির ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পরিষদ উদ্যোগ গ্রহণ করে।ইউনিয়ন পরিষদ রাসত্মার দু’পাশে গাছ লাগায় এবং এই ব্যাপারে জনগণকে   উৎসাহিতকরে। বিভিন্ন জাতের গাছের চারা যাতে গ্রামবাসী কিনতে পারে সেই বিষয়েইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে যোগাযোগকরবে। অর্থকরী ফল ও ঔষধি বৃক্ষ লাগানোর সুফল সম্পর্কে জনগণকে উৎসাহিত করেইউনিয়ন পরিষদ।

    শিক্ষা,কৃষি,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ

    • গ্রামেরপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনায় উন্নয়ন, স্কুলে যাওয়ার উপযুক্তছেলেমেয়েদেরকে স্কুলে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করা এবং সরকারের বিভিন্ন শিক্ষাকার্যক্রম বাসত্মবায়নে অর্পিত দায়িত্বগুলো ইউনিয়ন পরিষদ পালন করে। ইউনিয়নপরিষদ বাস্তব জরিপের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য শস্য উৎপাদন এবং অধিকজমি চাষের আওতায় আনা এবং চাষের জমিতে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য পরিকল্পনাও কার্যক্রম তৈরি এবং বাসত্মবায়নের জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। প্রতিবছরইউনিয়ন পরিষদ নিজস্ব এলাকায় সেচের উদ্দেশ্যে ব্যাপক জরিপের মাধ্যমে খাল, নালা, পুকুর এবং বিল খনন ও পুনঃখনন করে। অতিরিক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় আনারউদ্দেশ্যে এবং প্রয়োজনের অধিক বাড়তি পানি নিস্কাশনের জন্য বাঁধ তৈরি ওরক্ষা করা ইউনিয়ন পরিষদের কাজ। প্রতিবছরে প্রথমে ফসলওয়ারী সার ও বীজেরচাহিদা তৈরি করে ইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টকর্মকর্তার নিকট পাঠায়। কৃষকদেরকে সার ও উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারে উৎসাহিতকরে এবং ইউনিয়ন এলাকার যেসব কৃষক উন্নত ধরণের বীজ উৎপাদন করেন তাদের তালিকাইউনিয়ন পরিষদ অফিসে টাঙ্গানোর ব্যবস্থা করে। এই তালিকা উপজেলা কৃষিকর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করা হয়। কৃষকরা যাতে উন্নত জাতের বীজ ও পোকামাকড়বিধবংসী ঔষধ ব্যবহার করেন ইউনিয়ন পরিষদ সে প্রেক্ষিতে কর্মসূচি গ্রহণ করে।ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্লক সুপারভাইজারদের মাধ্যমে প্রদর্শনী খামার স্থাপন করেইউনিয়ন পরিষদ।
    • গবাদিপশু,হাঁসমুরগী পালন এবং মাছ চাষের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করা ইউনিয়নপরিষদের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথেযোগাযোগ করে জনসাধারণ যাতে পশু ও হাঁস-মুরগির ঔষধ ও টিকা, মৎস্য বীজ, মৎস্যচাষের যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে পারে তার ব্যবস্থা করে।
    • গ্রামকেপরিস্কার রাখা,ময়লা দূর করা,পরিবেশকে সুন্দর রাখা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবারব্যবস্থা করার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের। ইউনিয়ন পরিষদ আবর্জনা ও জঙ্গলঅপসারণ, কচুরিপানা উচ্ছেদ এবং পরিবেশকে মনোরম ও পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থাকরে।। কোন মহামারীর আশংকা দেখা দিলে ইউনিয়ন পরিষদ স্বাস্থ্য বিভাগের সাথেযোগাযোগ করে প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করে। গ্রামবাসীদের মাঝে পরিবার পরিকল্পনাসম্পর্কে যে ভুল ধারণা বা কুসংস্কার আছে তা দূর করে এ কর্মসূচিকে জনপ্রিয় ওগ্রহণযোগ্য করার ব্যাপারে কাজ করে ইউনিয়ন পরিষদ।

    পানীয় জল সরবরাহ

    • বিশুদ্ধপানীয় জলের ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব। এর জন্য ইউনিয়নপরিষদ কূয়া, পুকুর, ইঁদারা ইত্যাদি খনন, পুনঃখনন ও সংরক্ষণ করে এবং এসবেরপানি যাতে অন্য কোন ব্যবহার দ্বারা দূষিত না হয় তার ব্যবস্থা করে।সুবিধাজনক জায়গায় নলকূপ বসানো ও তা রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদেরগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নলকূপ বসানোর কাজ ঠিকমত সম্পন্ন এবং এর গোড়ায়প্লাটফরম ঠিকমত তৈরি হল কিনা এবং তার স্থায়িত্ব সম্পর্কে তত্ত্বাবধান করেনইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণ। নলকূপের যন্ত্রাংশ যাতে চুরি না হয় এবং এর পানিব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা জনসাধারণকে বুঝিয়ে দেওয়া ও সতর্ক করা ইউনিয়ন পরিষদেরদায়িত্ব। নলকূপ বিকল হয়ে যেন বেশিদিন পড়ে না থাকে সেজন্য বিকল হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে মেরামতের ব্যবস্থা অবলম্বন করে ইউনিয়ন পরিষদ। গ্রাম এলাকায় বিশুদ্ধপানীয় জলের সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্যে প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নপরিষদের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কমিটি আছে। এককথায়, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পানীয় জলের জন্য ব্যবহৃত পুকুর ও নলকুপ সংরক্ষণের জন্যপ্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করাই ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব।

    সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ

    • উন্নয়নমূলককাজ ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ কিছু সাংস্কৃতিক ও সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাঠাগার স্থাপন। ইউনিয়ন পরিষদ ইউনিয়ন কমপ্লেক্সেপাঠাগার স্থাপন করে। বয়স্কদের জন্য নৈশ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করে। চিত্তবিনোদনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ জাতীয় উৎসবের দিনগুলো উদযাপন, মেলা ওপ্রদর্শনীর আয়োজন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান, মাঠ ও উদ্যানেরব্যবস্থা  ইত্যাদি দায়িত্ব  পালন করে।
    • ইউনিয়নপরিষদের কিছু সমাজকল্যাণমূলক কাজও আছে যেমন-কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটরক্ষণাবেক্ষণ এবং বিধবা, অনাথ ও দরিদ্র ব্যক্তিদের সহায়তা করা। ইউনিয়নপর্যায়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত সমাজকল্যাণমূলক কাজে ইউনিয়ন পরিষদ অর্পিত এসবদায়িত্বাবলী পালন করে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সমাজ সেবা অধিদপ্তর এবং পল্লীউন্নয়নবোর্ড এর কর্মসূচিতে অংশ নিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ এবং বাসত্মবায়নেরজন্য সহযোগিতা করে। এছাড়া আগুন, বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদি পরিস্থিতিতেকর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী ত্রাণকার্য পরিচালনা করা এবং প্রাকৃতিকদুর্যোগ দেখা দিলে জনগণকে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাকরাও ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব।

    পুলিশ ও নিরাপত্তা

    সরকারগেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার গ্রাম পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠাএবং তাদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও শিষ্টাচার নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের চাকুরিরশর্তাবলী নির্ধারণ করে। অধ্যাদেশের প্রথম তফসীলের দ্বিতীয় অংশে গ্রাম পুলিশবাহিনীর ক্ষমতা ও দায়িত্বগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকযদি মনে করেন যে কোন ইউনিয়ন বা তার অংশবিশেষে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাজননিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, তাহলে তিনি আদেশ জারিরমাধ্যমে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। তাঁর আদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন বাঅংশবিশেষে সক্ষম যুবক পুরুষ বসবাসকারী টহল দেন। জেলা প্রশাসকের আদেশঅনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ তার ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব পালন করে।

     

    গ্রামাঞ্চলেরজনসাধারণ ও তাদের মালামালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ইউনিয়ন পরিষদেরঅন্যতম দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ মহল্লাদার ওদফাদার নিয়োগ করে। মহল্লাদার ও দফাদারদের কাজ হচ্ছে ইউনিয়নের গ্রাম ওমহল্লায় প্রহরার ব্যবস্থা করা এবং পুলিশকে অপরাধ দমনে যথাসাধ্য সাহায্যকরা। সন্দেহজনক কোন ব্যক্তি বা  কোন কারণে ইউনিয়নে শামিত্ম বিঘ্নিত হতেপারে এমন কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সে সম্বন্ধে থানার ওসিকে এরা অবহিত করেএবং ১৫ দিনে অমত্মত একবার তার কাছে রিপোর্ট করে। ইউনিয়নে কোন প্রকারমহামারীর আশংকা দেখা দিলে বা কোন বাঁধ বা সেচ প্রকল্পের কোন ক্ষতিরসম্ভাবনা হলে বা ইউনিয়ন পরিষদের কোন সম্পত্তি অন্যায় দখল হলে ইউনিয়নপরিষদকে তা তখনই জানাতে হয়। তাছাড়া রেললাইন, টেলিফোন বা টেলিগ্রাম বাইলেকট্রিক লাইন, টিউবওয়েল এবং অন্যান্য সরকারি সম্পত্তি ক্ষতির সম্মুখীনহলে জনসাধারণ, মহল্লাদার বা দফাদার ইউনিয়ন পরিষদকে জানায়। সেই অনুযায়ীইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রেমহল্লাদার বা দফাদাররা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ও ওয়ারেনট ছাড়াই গ্রেফতার করতেপারে যেমন-কেউ যদি কোন আদালত অগ্রাহ্য অপরাধ করে, বা কারও কাছে কোন সিদেলযন্ত্র বা চোরাই মাল থাকে বা কেউ হাজত থেকে পলায়ন করে গ্রামে আত্মগোপন করে  ইত্যাদি। কিন্তু তাদেরকে যত শীঘ্র সম্ভব থানায় সোপর্দ করতে হয়। এছাড়ামহল্লাদারের আরেকটি অন্যতম প্রধান কাজ  হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রারেলিপিবদ্ধ করা।

    গ্রামপ্রতিরক্ষা দলের গঠন ও কার্যাবলীর সাথে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসদস্যগণ সম্পৃক্ত। গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠনের প্রধান উদ্দেশ্যাবলী হচ্ছে:

    • রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত এবং অস্ত্রধারী দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।
    • নিজনিজ এলাকার মধ্যে যাতে দুস্কৃতিকারী ও অন্যান্য অপরাধীগণ খাদ্য ও আশ্রয় নাপায় তার ব্যবস্থা করা এবং তাদের দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকেসাহায্য করা।
    • বে-আইনী অস্ত্র উদ্ধারে সাহায্য করা।
    • নিজ নিজ এলাকায় অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানসমূহ পাহাড়ার কাজে অংশগ্রহণ করা।
    • নতুন লোকের আগমন ও চলাফেরা সম্পর্কে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা।
    • প্রয়োজনবোধে রাতে টহলদার ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশদের পাহাড়ার কাজে সহায়তা করা।

    রাজস্ব ও প্রশাসন

    নিজস্ব দায়িত্ব সম্পাদন ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ:

    • রাজস্ব ও সাধারণ প্রশাসনিক কাজে সহায়তা করে।
    • রাজস্বঅথবা ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে রাজস্ব ও কর্মকর্তা এবং সাধারণ প্রশাসনকেসহায়তা করে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী ইউনিয়নের রাজস্ব ও প্রশাসনপরিচালনা, রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড ও মূল্যায়ন তালিকা প্রণয়ন, সার্ভে বা শস্যপরিদর্শনে সহায়তা করে।
    • কোনঅপরাধ সংগঠিত হলে পুলিশকে অবহিত করে। জনসম্মুখে পুলিশকে কুখ্যাত চরিত্রেরব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত করবে, তদমত্ম কাজে, অপরাধ দমনে এবং অপরাধীকেগ্রেফতার করতে সহায়তা করে।
    • জনপথ, রাসত্মা বা জনসাধারণের জায়গায় অবৈধ দখল বা দালান বা সম্পত্তির ক্ষতি হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট করে।
    • সরকারঅথবা অন্য কোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষে নির্দেশ অনুযায়ী জনসাধারণকেবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যেসকল বিষয় জানানোর  নির্দেশ দেওয়া হয় তা বিজ্ঞপ্তিরমাধ্যমে জানানো।
    • কর্মকর্তাদেরকে তাদের কাজে সহায়তা করা এবং উক্ত কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী তথ্যাদি সরবরাহ করা।

     

    উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণ

    গ্রামউন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। কৃষি ও কুটির শিল্পের উন্নতিএবং সমবায় আন্দোলনের বিসত্মার এবং বন, পশু ও মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির জন্যইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন পরিকল্পনাএমনভাবে তৈরি করে যাতে একে যেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যেমন-কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, কুটিরশিল্প ইত্যাদি বিষয়ক প্রকল্পগুলো পৃথক পৃথকভাবেদেখানো হয়। নিম্নলিখিত তথ্যাদি উন্নয়ন পরিকল্পনায় লিপিবদ্ধ করা হয়:

    • বিভিন্ন খাতের লক্ষ্যমাত্রা
    • প্লানের নির্দিষ্ট প্রকল্পসমূহ
    • কি ধরণের কর্মচারী প্রয়োজন হবে এবং এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোন সাহায্যের প্রয়োজন হবে কিনা।
    • যে সকল দ্রব্যাদি এবং সরঞ্জামের প্রয়োজন হবে।
    • কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে এবং কিভাবে তা পাওয়া যাবে।
    • জনসাধারণের কাছ থেকে প্রাপ্ত চাঁদা, দ্রব্যাদি ও স্বেচ্ছাশ্রম।
    • কিভাবে বার্ষিক পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাসত্মবায়িত হবে।
    • কোন প্রকল্প সমাপ্ত হলে তার সংরক্ষণের ব্যবস্থা ও আবর্তক খরচ।

     

    প্রত্যেকইউনিয়ন পরিষদ বিভিন্ন এলাকার চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী একটি উন্নয়নপরিকল্পনা তৈরি করে। উন্নয়ন পরিকল্পনার মেয়াদ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী হয়।তবে এযাবৎ সরকারের নির্দেশ মোতাবেক উন্নয়ন পরিকল্পনার মেয়াদ পাঁচ বছর করেহয়ে আসছে। বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের চাহিদা একসঙ্গে বা এক বছরেমেটানো সম্ভব নয়, পরিষদের আর্থিক সংগতিও পর্যাপ্ত নয়। এসব কারণে পরিকল্পনাপ্রণয়নের সময় দেখা হয় বৃহত্তর জনস্বার্থে এবং পরিষদের আর্থিক সংগতির দিকেলক্ষ্য রেখে কোন ধরনের প্রকল্প বা প্রকল্পগুলো প্রথম বছর, কোনগুলো দ্বিতীয়বছর, কোনগুলো তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম বছরে কার্যকরী করা সম্ভব হবে। এককথায় বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচশালাপরিকল্পনা গ্রহণ করে ইউনিয়ন পরিষদ। প্রতিবছর উন্নয়ন পরিকল্পনা খাতে যেপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হবে তা পাঁচশালা পরিকল্পনার ভিত্তিতে খরচ করা হয়, অন্যভাবে নয়। তবে যে প্রকল্পগুলো আগে সম্পন্ন করা হয়েছে তার উন্নয়ন বামেরামতের কাজ এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পায়। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে একটিপ্লানবুক আছে যার মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নির্দেশ করা থাকে।বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ যাতে সুচারুরূপে সম্পাদিত হয় সেজন্য ইউনিয়ন পরিষদ  বিভিন্ন কমিটি গঠন করে।

     

    ইউনিয়ন পরিষদের প্রকল্প গ্রহণ ও বাসত্মবায়নের মূল লক্ষ্য হল:

    (ক) গ্রামের বেকার, গরীব ও দুঃস্থ জনগণের কর্মসংস্থান করা ও স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করা এবং সব সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

    (খ)গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নভিত্তিক দরিদ্র ও বেকার এবং দুঃস্থ লোকদের সঠিকপরিসংখ্যান বাসত্মব জরিপের মাধ্যমে প্রস্ত্তত করা। এ পরিসংখ্যান সর্বদাইউনিয়ন পরিষদ সংরক্ষণ করবে এবং ইউনিয়ন অভ্যমত্মরে যেসব উন্নয়ন প্রকল্পবাস্তবায়িত হবে তাতে বেকার ও দরিদ্র এবং দুঃস্থ জনাংশের কর্মসংস্থানেরঅগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

    বিচার

    বাংলাদেশেরগ্রামীণ জনসাধারণের ঝগড়া-বিবাদের মীমাংসা ও মামলা মোকদ্দমা নিস্পত্তি এবংবিড়ম্বনা এবং এ সংক্রামত্ম খরচের হাত থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সরকারগ্রামাঞ্চলে প্রাথমিকভাবে বিচার ব্যবস্থার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের উপরন্যাস্ত করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালত গঠনের মাধ্যমে কতিপয় ফৌজদারী ওদেওয়ানী উভয় প্রকার   মামলার  বিচার করতে পারে।

Leave an answer

Leave an answer

Related Questions