এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী- সে যে আমার জন্মভূমি।
বাংলাদেশে প্রবেশের হাজার দুয়ার খােলা রয়েছে কিন্তু বেরুবার একটিও নেই।
(খ) রােমাঞ্চকর ভ্রমণ এবং পরিবেশভিত্তিক পর্যটন : বাংলাদেশে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিচিত্র বন্যপ্রাণী এবং বহু উদ্ভিদ দেখা যায় । রাঙামাটির হ্রদে নৌবিহার, মৎস্য শিকার, জলক্রীড়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার ট্রেকিং, হাইকিং ইত্যাদির সুযােগ রয়েছে। সাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা অপরূপ দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পর্যটক আকর্ষণের এমনি অনেক সুযােগ রয়েছে আমাদের এই
বাংলাদেশে।
(গ) ঐতিহ্য ও প্রত্ন-নিদর্শনভিত্তিক পর্যটন : আমাদের বাংলাদেশে বহু ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এসবের মধ্যে মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর, ময়নামতি, ঢাকার লালবাগের দুর্গ, আহসান মঞ্জিল, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় জাদুঘর, সােনারগাঁও জাদুঘর, রাজশাহীর বরেন্দ্র মিউজিয়াম, নাটোর ও পুঠিয়ার রাজবাড়ি প্রসিদ্ধ। এছাড়া আরও অনেক
ঐতিহ্যভিত্তিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে।
(ঘ) ধর্মীয় ঐতিহ্যভিত্তিক পর্যটন : বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লােকেরা মূলত ধর্মীয় অনুভূতি থেকেই কিছু কিছু স্থানে ভ্রমণ করেন। আমাদের দেশে অনেক মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মাজার, দরগাহ, মঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। এসব নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে- বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, ঢাকার সাতগম্বুজ মসজিদ, রাজশাহীর শাহ মখদুমের মাজার, পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহার, মহাস্থানগড়, নবাবগঞ্জের সােনা মসজিদ, ঢাকেশ্বরী মন্দির, আর্মেনিয়ান চার্চ, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বােস্তামীর দরগাহ, সিলেটের হজরত শাহজালালের দরগাহ, কক্সবাজারের রামু মন্দির প্রভৃতি।
(ঙ) নৌ পর্যটন : বাংলাদেশ নদীবহুল দেশ। অসংখ্য ছােটো-বড়াে নদ-নদী জালের মতাে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এদেশের বুকে।আর এসব নদ-নদী বিনােদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রকৃত সৌন্দর্য অনেকাংশেই ফুটে ওঠে নৌভ্রমণের মাধ্যমে।
পর্যটন কেন্দ্রগুলােকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সরকারি উদ্যোগ : দেশের পর্যটন শিল্পকে গতিশীল ও আকর্ষণীয় করার জন্য এবং স্থানীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলােকে সুপরিচিত ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তােলার লক্ষ্যে সরকার এক্সকুসিভ জোন করার পরিকল্পনা গ্রহণ। করেছেন। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশের পর্যটন শিল্পকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়ার জন্য একটি খসড়া নীতিমালাও তৈরি করা। হয়েছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়নে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছেন । ইনানী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইড নির্মাণের পাশাপাশি সেন্টমার্টিন দ্বীপের উন্নয়নে মাস্টার প্লানের কাজ চলছে। কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য ওই এলাকাকে পৌর এলাকা ঘােষণাসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব নানা পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমাদের পর্যটন শিল্প বিপুল সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
উপসংহার : পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়ােজন। সরকারের পাশাপাশি আমরা বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারি। আমাদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিশ্বের দরবারে স্থান করে নেবে। এটাই আজকের প্রত্যাশা।