পন্য কি বা কাকে বলে
সাধারণ অর্থে মানুষের প্রয়োজন বা অথবা পূরণে সক্ষম এমন দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সকল জিনিসই পণ্য। অন্য কথায় পন্য কি বলতে গেলে, অর্থের বিনিময়ে ক্রয়বিক্রয়যোগ্য যে কোনো সামগ্রীই পণ্য। পণ্যের অস্তিত্ব মানুষের প্রয়োজন, অভাববোধ এবং আকাঙ্ক্ষার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সুতারাং বিপণনের দৃষ্টিতে মানুষের চাহিদা ও অভাব পূরণে সক্ষম এরূপ দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কোনো উপাদানকেই পণ্য বলে।
বিভিন্ন লেখক পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। নিম্নে দুজন বিশেষজ্ঞের মতামত তুলে ধরা হলো:
ফিলিপ কটলার ও গ্যারি আর্মস্ট্রং (Philip Kotler and Grary Armstrong) এ দুজন লেখকের মতে, “এমন কোনো কিছুই পণ্য যাকে বাজারে উপস্থাপন করা হয় লোকের মনোযোগ আকর্ষণ, অর্জন, ব্যবহার কিংবা ভোগের জন্য, যাতে করে লোকজনের অভাব বা চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটে।”
W.S. Starton এর মতে, একটি পণ্য হলো- মোড়কাকরণ রং মূল্য, উৎপাদনকারী ও খুচরা বিক্রেতার মর্যাদা ও সেবা সম্বলিত অতিপয় দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান ঋণের সমষ্টি যা ক্রেতাগণ অভাব মোচনের উপায় হিসেবে গ্রহণ করে।
পন্য কাকে বলে? এ সম্পর্কে ম্যাকর্থি (McCarthy) বলেন, “পণ্য বলতে কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিক্রয়যোগ্য এবং চাহিদার সন্তুষ্টি বিধানে সক্ষম জিনিসকে বোঝায়।”
উপরিউক্ত আলোচনা ও সংজ্ঞা বিশ্লেষণে পন্য কি এ সম্পর্কে আমরা বলতে পারি, পণ্য হলো সে সব দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান বস্তু যা মানুষ ভোগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে চাহিদা ও অভাব পূরণ করতে পারে এবং যা অর্থের বিনিময়ে ক্রয়বিক্রয়যোগ্য।
পণ্য কত প্রকার ও কি কি :-
যতই দিন গড়াচ্ছে মানুষের অভাব ও চাহিদার বিস্তার ঘটছে আর তা পূরণের জন্য নতুন নতুন হাজারাে পণ্য বাজারে আসছে। আর এই পণ্য গুলোেকে বাজারজাতকরণ বৈশিস্ট্য অনুযায়ী প্রধানতঃ দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
- ভোগ্য পণ্য (Consumer goods) এবং
- শিল্প পন্য (Industrial goods)।
এ দুই শ্রেণীর পণ্যকে আবার বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়।
(ক) ভােগ্য পণ্য :-
ভােগ্য পণ্য বলতে চুড়ান্ত ভােগের উপযোগী পণ্যকে বুঝায়। কোনাে রকম প্রতকরিয়াজাতকরণ ছাড়াই যে সব পণ্য সরাসরি ভােগ বা ব্যবহার করা যায় সেগুলোকে ভােগ্যপণ্য বলে। এরূপ পণ্য এমন অবস্থায় থাকে যে তা সরাসরি ভােগের নিমিত্তে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে আর কোন প্রত্রিয়াজাতকরণ বা ব্যবসায়িক উপযোগ সৃষ্টির প্রয়ােজন পড়ে না।
আমাদের আশেপাশের দোকান গুলাতে সাজানাে কৃষিজাত সামগ্রী, যেমন চাল, ডাল থেকে শুরু করে শিল্পে উৎপাদিত পণ্য-সাবান, র্লেড, গাড়ি, রেডিও ইত্যাদি সবই এ ধরনের পণ্যের উদাহরণ।
ভােগ্য পণ্যকে আবার চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
সুবিধা পন্য (Convenience goods)
সৌখিন / বিপণন পণ্য (Shopping goods)
বিশিষ্ট পন্য (Specialy goods)
অযাচাইকৃত পন্য (Unsought goods)
নিম্নে এদের সম্পর্কে পর্যায়ক্রমে আলোেচনা করা হল।
(১) সুবিধা পণ্য (Convenience goods) :-
সুবিধা পণ্য এক ধরনের ভােগপণ্য যা ক্রেতা সহজে পেতে চায়। এ কারণে পণ্যটির নামকরণ হয়েছে সুবিধা পণ্য। এ সকল পণ্যের চাহিদা সাধারণত নিয়মিত থাকে এবং মানুষ ন্যনতম প্রচেষ্টায় এবং স্বল্প সময় ব্যয় করে ক্রয় করে থাকে।
এই পণ্য ক্রেতার বাসস্থানের আশেপাশের দোকানে পাওয়া যায় এবং মূল্য সব দোকানেই এক হয়ে থাকে।
যেমনঃ সাবান, টুথপেস্ট, কাগজ, কলম, পান, দিয়াশলাই ইত্যাদি।
ফিলিপ কটলারের ভাষায়, “সুবিধা পণ্য হলাে ঐ জাতীয় পণ্য যা ক্রেতারা কোন প্রকার তুলনা ছাড়াই স্বল্প প্রচেষ্টায় বারবার ক্রয় করে থাকে।”
এই পণ্যের বৈশিষ্ট্যে ভিত্তিতে নিন্নোত্ত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
(i) নৈমিত্তিক বা আবশ্যক পণ্য (Staple goods) :-
যে সব পণ্য নিয়মিত এবং প্রায়ই ক্রয় করা হয় সেগুলােকে নৈমত্তিক পণ্য বলে।
যেমন -চাল, ডাল, রুটি, লবণ, মাছ ইত্যাদি। এসব পণের চাহিদার সাথে জীবনে টিকে থাকা জড়িত বিধায় এদেরকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বলে। এ কারণে নৈমিত্তিক পণ্যের মজুদ শেষ হবার সাথে সাথে আবার ক্রয় করা হয়। এ জাতীয় পণ্যের হ্রাস বা বৃদ্ধি পেলে চাহিদায় তেমন পরিবর্তন দেখা যায় না
(ii) লােভনীয় পণ্য (Impulse goodls) :-
যে সব পণ্য ক্রেতারা দেখামাত্র ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করে তাকে লােভনীয় পণ্য বলে।
ক্রেতারা কোন প্রকার চিন্তা-ভাবনা না করেই এ জাতীয় পণ্য কিনে থাকে। যেমনঃ বাদাম, আইসক্রীম, চিপস, খেলনা, ফুলদানী, ম্যাগাজিন ইত্যাদি। বিক্রেতারাও ক্রেতাদের নজরে পরারজন্য এ জাতীয় পণ আকর্ষণীয় স্থানে চমৎকার ভাবে সাজিয়ে রাখে।
(iii) জরুরি পন্য (Emergency goods) :-
যে পণ্যের চাহিদা হঠাৎ উদ্ভব হয় এবং ক্রেতারা এর গুণাগুণ ও মূল্য ততটা বিবোচনা না করেই কেনে তাই জরুরী পণ্য।
যেমনঃ বৃষ্ট শুরু হলে ছাতার দরকার হয়। রােগীর জন্য ঔষধ প্রয়ােজন, লং ওয়েতে হঠাৎ করেই গাড়ীর তেল নেয়ার প্রয়ােজন হয় ইত্যাদি।
আসলে জরুরী পণ্য বলতে কোন বিশেষ পণ্যকে বা পণ্যসমূহকে বুঝায় না। তবে জরুরী কারণ যে কোন পণ্যই জরুরী পণ্য হতে পারে।
(iv) সরবরাহ পন্য (Delivery goods) :-
এ ধরনের পণ্য ক্রেতারা বাসা-বাড়িতে বসে পাওয়ার প্রত্যাশা করে অর্থাৎ বিক্রেতারা ঘরে ঘরে পৌছে দেয়। শহরে দুধ, ডিম, শাক সজি এ ধরনের পণ্যের উদাহরণ।
২. সৌখিন পণ্য (Shopping goods) :-
যেসব পণ্য কেনার সময় ক্রেতারা অনেক সময় ব্যয় করে। পণ্যের বিভিন্ন দিক যাচাই করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ভেবে চিন্তে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয় তাকে সৌখিন পণ্য বা শপিং পণ্য বলে।
এজাতীয় পণ্য মূলতঃ বিলাস শ্রেণীর এবং মূল্যও থাকে তুলনামূলক ভাবে বেশি। তাই ক্রেতারা শপিং পণ্য কেনার পূর্বে বাজেট তৈরি করে পণ্যের দাম, সাইজ, রং, স্টাইল প্রভৃতি সতর্ক্তার সাথে যাচাই করার জন্য দূর-দূরান্তের জায়গায় যেতে দ্বিধাবােধ করে না। গাড়ী, স্বর্ণলংকার, আসবাবপত্র, টিভি, ক্যামেরা বিয়ের শাড় ইত্যাদি এর উদাহরণ।
৩. বিশিষ্ট পন্য (Specialy goods) :-
বিশিষ্ট পণ্য বলতে বিশেষ শ্রেণীর ভােক্তাদের জন্য বিশেষ মান সম্বলিত পণ্যকে বুঝায়। যারা নিজেদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা কিছু ভাবতে ভালবাসে তারাই এ ধরনের বিশিষ্ট পণ্যের ভােক্তা হিসেবে চিন্তিত হয়। এরূপ পণ্য ক্রয় করতে ক্রতা যেমন প্রচুর অর্থ ব্যয়ে রাজী থাকে তেমনি সময় ও শ্রম ব্যয় করে এবং প্রয়ােজনে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতেও প্রস্তুত থাকে। যেমনঃ নির্দিষ্ট মডেলের গাড়ী, আকর্ষণীয় ঘড়ি, ফ্যাশনের জুতা, মূল্যবান ক্যামেরা কোন নির্দিষ্ট দোকানের খাবার ইত্যাদি।
৪. অযাচাইকৃত পন্য (Unsought goods) :-
ক্রেতারা যে সব পণ্য সাধারণভাবে দেখেনি বা দেখে থাকলেও কেনার কথা ভাবেনি সেসব পণ্যকে অযাচিত বা অযাচাইকৃত পণ্য বলে।
যেমনঃ জীবন বীমা পলিসি, এনসাইক্রোডিয়া ইত্যাদি। প্রকৃতগত ভাবে এসব পণ্য কেনার কথা ক্রতারা সহজে ভাবে না। এসব পণ্য বিক্রির জন্য কতগুলোে উচ্চতর বিক্রয়িকতা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।
অযাচিত পণ্য আবার দুই প্রকার। যথা-
(i) নতুন অযাচিত পণ্য (New unsought goods) :-
যে সমস্ত পণ্য সম্পর্কে ক্রেতারা এখনো তেমনি কিছু জানেনা তাই যাচাই করেও দেখেনা সেগুলােকে নতুন অযাচিত পণ্য বলে।
যেমনঃ কমপ্যাক্ট ডিস্ক বা C.D আমাদের দেশের অনেক ক্রেতারা এব্যপারে এখনও বিশেষ কিছু জানে না।
(ii) নিয়মিত অযাচিত পণ্য/পুরান অযাচিত পণ্য (Old usought goods) :-
এমন কিছু পণ্য আছে যা সম্পর্কে ক্রেতারা পূর্ব থেকেই অবগত থাকে কিন্তু সাধারণ ভাবে কেনার চিন্তা করে না, এসব পণ্যকে নিয়মিত / পুরাতন অযাচিতপণ্য বলে।
যেমনঃ জীবন বীমা পলিসি ক্রয় করা।
(খ) শিল্প পন্য (Industrial goods) :-
শিল্প পণ্য হচ্ছে ঐসব পণ্য যা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পদ্ধতিকরণ, প্রক্রিয়া করণ বা পুনঃ প্রক্রিয়াকরণ আথবা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহারের জন্য ক্রয় করে।
শিল্প পণ্য এবং ভােগ্য পণ্যের মধ্যে পার্থক্য ক্রেতার ক্রয়ের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে যেমনঃ পাট যদি রশি তৈরি করার জন্য ক্রয় করা হয় (যা ঘর বাঁধার জন্য ব্যবহৃত হবে) তাহলে তা হবে ভাগ্য পণ্য। আর যদি তা দিয়ে কার্পেট বা চট ইত্যাদি পাটজাত পণ্য তৈরি করার উদ্দেশ্যে ক্রয় করা হয় তবে তা হবে শিল্প পণ্য।
শিল্প পণ্যকে আবার তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা-
(১) মালামাল এবং খুচরা যন্ত্রাংশ,
(২) মূলধনজাতীয় পণ্য,
(৩) সরবরাহ এবং সেবা।
(১) মালামাল এবং খুচরা অংশ (Materials and parts ):-
যে সব মালামাল এবং খুচরা অংশ সরাসরি উৎপাদনে অংশগ্রহণ করে সেগুলোই হল মালামাল ও খুচরা অংশ। এগুলোকে আবার দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
(i) কাঁচামাল এবং
(ii) প্রস্তুতকৃত মালামাল এবং খুচরা অংশ।
(i) কাঁচামাল (Raw materials ) :-
যে সব পণ্য রূপান্তর করে বা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে ভোগ বা পরবর্তী উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে কাঁচামাল বলে।
যেমনঃ গম, তুলা, পাট, আখ, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি।
এগুলোকে আবার দুইভাবে ভাগ করা যায়?
কৃষিজাত পণ্য (Agricultural goods) :-
এসমস্ত পণ্য কৃষক কর্তৃক কৃষি খামার উৎপাদিত হয়। যেমনঃ আখ, তামাক, তুলা, পাট, গম ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক পণ্য (Natural Products) :-
যে সমস্ত সম্পদ প্রকৃতি থেকে পাওয়া যায় এবং সেগুলো পরবর্তী উৎপাদন বা রূপান্তর কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে প্রাকৃতিক পণ্য বলে।
যেমনঃ আকরিক লৌহ, কাঠ, প্রাকৃতিক গ্যাস, খণিজ তৈল ইত্যাদি।
(ii) প্রস্তুতকৃত মালামাল এবং খুচরা অংশ (Manufactured materials and Parts ) :-
যে সব পণ্য ইতিপূর্বে কিছুটা প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়েছে কিন্তু পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে মূল প্রস্তুত পণ্যের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে প্রস্তুতকৃত মালামাল বা আধা প্রস্তুত পণ্য বলে।
এ জাতীয় শিল্প পণ্য কোন কোন শিল্পকারখানার জন্য প্রস্তুত পণ্য আবার অন্য শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
যেমনঃ সুতা, সিমেন্ট, লোহা ইত্যাদি। অন্যদিকে খুচরা অংশ সরাসরি মূল পণ্যের অংশে পরিনত হয়। যেমনঃ মটর, টায়ার ইত্যাদি। প্রস্তুতকৃত মালামালের সমমান প্রকৃতির কারণে মূল্য এবং সরবরাহকারীর নির্ভরযোগ্যতাই ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি বিবেচ্য হয়।
(২) মূলধন জাতীয় পণ্য (Capital goods) :-
এসব শিল্প পণ্যের সাহায্যে মূল উৎপাদন কাজটি চালানো হয়। কিন্তু এদের খুব কমই চূড়ান্ত পণ্যের অংশ হিসেবে দেখা যায়। মূলধন জাতীয় পণ্য দুই ধরনের হয়। যথা –
(i) স্থাপনা / ভারি যন্ত্রপাতি (Installation) :-
এজাতীয় পণ্যের মধ্যে কারখানা, অফিস, স্থায়ী যন্ত্রপাতি যেমন- জেনারেটর, কম্পিউটার, ক্রেন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
এগুলো বড় ধরণের ক্রয়। অনেক চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর এগুলো সরাসরি উৎপাদনকারীর নিকট থেকে কেনা হয়। উৎপাদনকারীরা এ ধরনের পণ্য বাজারজাত করার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিক্রয়কর্মীদের ব্যবহার করে। এ সকল পণ্য নির্দিষ্ট মানসম্মত ভাবে তৈরি করা হয় এবং বিক্রয়োত্তর সেবারও ব্যবস্থা করা হয়।
(ii) আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ( Accessory Equipment) :-
যে সমস্ত ছোট খাটো যন্ত্রপাতি উৎপাদন কার্য এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সহায়তার জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বলে।
এসকল পণ্য চূড়ান্ত পণ্যের অংশ হয় না। শুধুমাত্র প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। এদের স্থায়িত্ব স্থাপনার চেয়ে কম কিন্তু অপারেটিং সরবরাহগুলোর চেয়ে বেশি। কারখানার বহনযোগ্য যন্ত্রপাতি ও হাতিয়ার (tools, ভ্যান) এবং অফিস যন্ত্রপাতি (টাইপ রাইটার ডেস্ক) ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত। অধিকাংশ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির উৎপাদনকারী তাদের পণ্য মধ্যস্থ কারবারীদের মাধ্যমে বাজারজাত করে।
(৩) সরবরাহ এবং সেবা (Supplies and Services) :-
যে সব শিল্প পণ্য চূড়ান্ত পণ্যের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না, তবে দৈনন্দিন কার্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী অথবা মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেগুলো সরবরাহ পণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় লুব্রিকেন্ট, কয়লা, টাইপিং কাগজ, পেনসিল, রং, তারকাটা, ঝাড়ু ইত্যাদি। সরবরাহ পণ্যগুলো শিল্প ক্ষেত্রে সুবিধা পণ্য। কারণ এসব পণ্য ক্রয়ে ন্যূনতম খোঁজাখুঁজি এবং বাজার যাচাই করা হয়। এসব পণ্য সাধারণত মধ্যস্থকারবারীর মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। এর কারণ হচ্ছে এগুলোর একক প্রতি মূল্য কম হয় এবং এর ক্রেতা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে।
অপরদিকে ব্যবসায় সেবার (Businsess) মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতি সেবা (যেমনঃ জানালা দরজা পরিস্কার ও রং করা, টাইপ রাইটার মেরামত ইত্যাদি) এবং ব্যবসায় পরামর্শ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। সাধারণ চুক্তি ভিত্তিতে এসব সেবা প্রদান করা হয়।