তদন্ত বলতে কী বুঝেন? ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ এর বিধান অনুযায়ী পুলিশের অপরাধ সংক্রান্ত ক্ষমতা আলােচনা করুন। পূর্বে চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর পুলিশ কি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করতে পারে?
অথবা, একটি ফৌজদারি মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করুন। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক দাখিলী চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর পুলিশ কি অতিরিক্ত (Supplementary) চার্জশিট দাখিল করতে পারেন?
অথবা, পুলিশ রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য কিনা? আদালত কর্তৃক রিপোর্ট গ্রহণের পর একই অপরাধ সম্পর্কে পুলিশ আদালতের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে এবং অধিকতর তদন্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করতে পারে কিনা? সংশ্লিষ্ট বিধান উল্লেখ পূর্বক আলোচনা করুন।
তদন্ত কি
[What is Investigation]
ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের প্রথম ধাপেই হল তদন্ত(Investigation)। তদন্ত বিচারিক বা জুডিসিয়াল কাজ না এটি বরং সম্পূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রম। অনেকেই অনুসন্ধান(inquiry) ও তদন্তকে (Investigation) একই মনে করে থাকেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, অনুসন্ধানের কাজটি বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালত করে থাকেন কিন্তু তদন্তের কাজটি পুলিশ কর্মকর্তা বা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কাজটি করে থাকেন।
তদন্ত হলো সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কোনাে পুলিশ অফিসার অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হতে অপর কোনাে ব্যাক্তি (যিনি ম্যাজিস্ট্রেট নন) কর্তৃক পরিচালিত সকল কার্যক্রমকে বুঝাবে।[“investigation” includes all the proceedings under this Code for the Collection of evidence conducted by a police-officer or by any person (other than a Magistrate) who is authorised by Magistrate in this behalf.][ফৌজদারি কার্যবিধির ৪ [১] ঠ ধারা]
এআইআর ১৯৫৪ কল ৩৫০ মামলায় বলা হয়েছে যে, একটি তদন্ত পুলিশ অফিসার কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা আদালতের নির্দেশে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত হবে। কোন একটি অপরাধ সংঘটনের সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ অথবা আদালতের নির্দেশে অপর কোন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন, সন্দেহযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন এবং আলামত জব্দ করেন। এমন ধরনের কার্যক্রমকে তদন্ত বলা হয়।
তদন্তের উপাদান। যেমন-
১। পুলিশ অফিসার বা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অপরাধ সংঘটনের স্থলে যাওয়া;
২। মামলার ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট সনাক্তকরণ;
৩। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারকরণ;
৪। অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে সাক্ষ্য সংগ্রহকরণ;
৫। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মৌখিক সাক্ষ্য লিপিবদ্ধকরণ।
মোটকথা, কোন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তথ্য সংগ্রহ, এজাহারনামীয় বা সন্দেহযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, আলামত জব্দ, সাক্ষ্য গ্রহণ করার মত কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন এগুলোকে তদন্ত বলা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪,১৫৫,১৫৬, ১৬৯,১৭০,১৭২ ও ১৭৩ ধারায় তদন্ত সম্পর্কে বিধান বর্ণিত রয়েছে। এছাড়া দেওয়ানী কার্যবিধির ২৬নম্বর আদেশের ০৯ নম্বর নিয়মে তদন্তের বিধান বর্ণিত রয়েছে।
পুলিশের তদন্ত করার ক্ষমতা সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান/
পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংক্রান্ত ক্ষমতা ও কার্যাবলী
[INFORMATION TO THE POLICE AND THEIR POWERS TO INVESTIGATE]
ফৌজদারি কার্যবিধির পঞ্চম অধ্যায়ের ১৫৪ ধারা থেকে ১৭৬ ধারা পর্যন্ত পুলিশের অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে এ সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক আলোচনা থাকছে-
১. প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বা এজাহার(First Information Report, FIR in cognizable cases)
আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে থানায় এজাহার বা FIR দায়ের হলেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে কোন পুলিশ অফিসার তদন্ত করতে পারেন [ধারা-১৫৪]। এক্ষেত্রে ১৫৬(১) ধারার আওতায় কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের প্রয়োজন পড়ে না।
২.আমলঅযোগ্য অপরাধের সংঘটনের ক্ষেত্রে তদন্ত(Investigation into non-cognizable cases)
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৫(২) ধারার বিধান অনুসারে আমলঅযোগ্য অপরাধের তদন্ত করার সময় আদেশপ্রাপ্ত পুলিশ আমলযোগ্য অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন সেই সকল ক্ষমতা তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা প্রয়োগ করতে পারবেন।
৩. আমলযােগ্য অপরাধের তদন্ত(Investigation into cognizable cases)
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ ধারার বিধান অনুসারে কোনাে পুলিশ অফিসার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৭ ধারার ক্ষমতা বলে আমলযােগ্য অপরাধ সংঘটনের সংবাদের ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া তদন্ত করতে পারবেন।
৪. আমলযােগ্য অপরাধ সম্পর্কে সন্দেহ(Procedure where cognizable offence suspected)
কখনো কখনো এমন কিছু অপরাধ আছে যার জন্য কোন এজাহার দায়ের করা হয়নি তারপরও পুলিশ যদি সন্দেহ করে তবে সে ক্ষেত্রে তদন্ত শুরু করতে পারেন। [ফৌজদারি কার্যাবধি’র ১৫৭ ধারা] এ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া বনাম এন এন চাঁদহা এআইআর ১৯৯৩ এসসি ১০৮২ মামলায় বলা হয়েছে যে এ ধরনের তদন্ত শুরু করার জন্য যুক্তিযুক্ত কোন কারণ থাকার প্রয়োজন নেই। পুলিশ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু করতে পারেন যখন তার বিশ্বাসের যুক্তি থাকে যে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য।
৬. সাক্ষী তলবের ক্ষমতা(Police-officer’s power to require attendance of witnesses)
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারা অনুযায়ী তদন্তকারী পুলিশ অফিসার অপরাধমূলক ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসেবে তার নিকট বা পার্শ্ববর্তী থানায় সাক্ষ্য প্রদানের জন্য হাজিরের লিখিত আদেশ দিতে পারেন।
৭.পুলিশ কর্তৃক সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ (Examination of witnesses by police)
তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞাত এমন ব্যক্তির অর্থাৎ সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার ক্ষমতা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারাতে দেওয়া হয়েছে।
৮. তল্লাশি করার ক্ষমতা(Search by police-officer)
সংঘটিত অপরাধের সাথে সম্পর্কিত যে কোনাে জিনিস উদ্ধারের জন্য তদন্তকারী পুলিশ অফিসার যে কোনাে স্থানে তল্লাশী চালাতে পারবেন, যদি তিনি মনে করেন অহেতুক বিলম্ব ছাড়া অন্য কোনভাবে উক্ত জিনিস উদ্ধার করতে পারবেন না। [ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৫ ধারা]
৯.পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষমতা(Power to remand)
বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারকৃত কোনাে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটক রাখার প্রয়োজন হলে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার তাঁর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে তদন্তকালে ম্যাজিস্ট্রেট কোন আসামিকে অনধিক ১৫ দিন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার জন্য তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দিতে পারেন। উক্ত সময়টায় হল পুলিশ রিমান্ড। [ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারা]
১০. সাক্ষ্য অপর্যাপ্ত হলে অভিযুক্তের মুক্তি(Release of accused when evidence deficient)
অভিযুক্তকে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণের মতাে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ না এবং যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকলে মুচলেকা সম্পাদনের মাধ্যমে অভিযুক্তকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন। [ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৯ ধারা]
১১. সাক্ষ্য পর্যাপ্ত হলে মামলা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ(Case to be sent to Magistrate when evidence is sufficient)
আসামিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণের মতাে যথেষ্ট প্রমাণ বা যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি বা পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে তবে পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করবেন। [ফৌজদারি কার্যাবধি’র ১৭০ ধারা]
১২. তদন্তের বিবরণ সম্বলিত ডায়েরি(Diary of proceedings in investigation)
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকতা প্রতিদিন তার ডায়েরিতে তদন্তের অগ্রগতি লিপিবদ্ধ করবেন। তদন্তের আরম্ভ ও শেষ, স্থান পরিদর্শন, তদন্তের অবস্থান ও ফলাফল সম্পর্কে ডায়েরিতে উল্লেখ করবেন। কেননা এর গুরুত্ব অপরিসীম। একটি ফৌজদারি আদালত বিচারকালে পুলিশ ডায়েরী/কেস ডায়েরি(Case Diary) বিচারের জন্য তলব করতে পারেন। [ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭২ ধারা]
১৩. পুলিশ অফিসারের রিপাের্ট(Report of police-officer)
পুলিশ অফিসার তদন্ত বিলম্ব না করে যথাসম্ভব সমাপ্ত করে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারা অনুযায়ী তদন্তের বিবরণ সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করে থাকেন।
[ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারা]
১৪. আত্মহত্যা ইত্যাদির বিষয়ে রিপোর্ট(Police to inquire and report on suicide, etc.)
কোন আত্মহত্যা, অপর কোনো ব্যক্তি বা কোন প্রাণী কর্তৃক বা কোন যন্ত্র দ্বারা বা কোনো দুর্ঘটনার ফলে কেউ নিহত হয়েছেন,কিংবা এরকম পরিস্থিতিতে মারা গিয়েছে যার ফলে যুক্তিযুক্তভাবে সন্দেহ হতে পারে যে অপর কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ করেছেমোটকথা অস্বাভাবিক মৃত্যু প্রভৃতি সম্পর্কে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৪ ধারাতে পুলিশ কর্তব্য বর্ণিত হয়েছে।
১৫. সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি সমন দেওয়ার ক্ষমতা (Power to summon persons)
পুলিশ অফিসার 174 ধারা মোতাবেক কাজ করার সময় সমন বা লিখিত আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কে সাক্ষ্য দিতে আহবান করার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যখন কোনো স্থানে তল্লাশি করে তখন লিখিতভাবে বা মৌখিকভাবে আশেপাশের লোকজনকে ডেকে নিতে পারেন। তদন্তের সময় তিনি এ ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন। অস্বাভাবিক তুমি একটু সম্পর্কে তদন্তের সময় তিনি এ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।
পূর্বে চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর পুলিশ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করতে পারে কি না (Whether police can file supplementary charge sheet after earlier charge sheet is accepted or not)
ফৌজদারি কার্যাবধির ১৭৩(৩)(খ) ধারা মােতাবেক, যে অপরাধের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট ১৭৩ (১) ধারা মতে পুলিশ রিপাের্ট বা চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে, তার অধিকতর তদন্তের অন্তরায় হবে না বলে অত্র ধারায় বলা হয়েছে। ফলে এরূপ তদন্তে আরও মৌখিক বা দালিলিক সাক্ষ্য পেলে, সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত ফর্মে অতিরিক্ত রিপাের্ট বা সম্পূরক চার্জশিটম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রেরণ করবেনএবং তা ১৭৩(১) ধারার রিপোর্টের ন্যায় প্রযোজ্য হবে। সুতরাং এটা বলা যায় যে, চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দাখিলের পরেও পুলিশ অফিসার সম্পূরক চার্জশীট দাখিল করতে পারেন। 17 BLD 436 (HCD) মামলার রায়ে বলা হয়েছে যে, ইতােমধ্যে রিপাের্ট দাখিল করা হলেও, আরাে তদন্তের জন্য ১৭৩ (৩-খ) ধারা পুলিশকে ক্ষমতা দেয় অর্থাৎ ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া অধিকতর তদন্ত করতে আইনগত কোনো বাধা থাকবে না এবং পরবর্তী রিপাের্টকে ১৭৩ (১) ধারা অনুযায়ী পুলিশ রিপাের্ট হিসেবে গণ্য করতে হবে। মোটকথা,একই অপরাধ সম্পর্কে পুলিশ রিপাের্ট গ্রহণের পর আদালতের অনুমতি ছাড়া পুলিশ অতিরিক্ত তদন্ত সম্পন্ন করে সম্পূরক চার্জশিট বা অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিতে পারেন এবং সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে পুলিশ নতুন করে কোনো আসামির নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে পূর্বে দাখিলকৃত চার্জশিট হতে কোনো আসামির নাম বাদ দিতে পারবেন না।
ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পুলিশ রিপোর্ট গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান [Acceptance or rejection of police report by Magistrate]
কোন মামলা তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে চার্জশিট দাখিল করা হয়। অথবা এজাহারে বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বর্ণিত ঘটনা তদন্তের পর সঠিক বলে মনে না হলে কিংবা সংঘটিত অপরাধের যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকলে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার আসামিকে অব্যাহতি বা মুক্ত করে দিতে পারেন। এ সময় তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর যে রিপোর্ট পেশ করেন তাকে চূড়ান্ত রিপোর্ট বা ফাইনাল রিপোর্ট বলা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশি রিপোর্ট গ্রহণের প্রত্যাখ্যান করতে পারে। পুলিশ রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য নয়। অর্থাৎ ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭৩ ধারানুযায়ী পুলিশ কর্তৃক দায়েরকৃত রিপোর্ট ম্যাজিষ্ট্রেট বা আদালত চাইলে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন।এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে উক্ত রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দিতে পারেন কিংবা উক্ত বিষয়ে বিচারক অনুসন্ধানের আদেশ দিতে পারেন।
……………………….