উত্তরঃ দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতালব্দ সমাজের মর্মমূল থেকে উৎসারিত চিরন্তন জ্ঞানবাণীই ডাক ও খনার বচন। অশিক্ষিত বাঙালির নানা ধরনের সংস্কারে বিশ্বাস রয়েছে। সংস্কার ও প্রথা পালনের সাথে ডাক ও খনার বচনে বিশ্বাস চিরন্তন। ডাক ও খনার বচনে এদেশের কৃষিকাজের ও দৈনন্দিন জীবনের অতি প্রয়ােজনীয় সূত্রগুলাে ছন্দাকারে রচিত হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে মধ্যযুগের প্রায় শেষ পর্যন্ত সময়ে এদেশের পণ্ডিতেরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্যোতিষশাস্ত্র এবং ডাক ও খনার বচন শিক্ষা দিতেন এবং সেসব ছাত্ররা দেশে দেশে ঘুরে অর্থের বিনিময়ে কৃষকদেরকে ডাক ও খনার বচন শিক্ষা দিত। কৃষকেরা ডাক ও খনার বচনের শিক্ষা অনুসারে কৃষিকাজ করত। ডাক ও খনার বচনের জ্ঞানই ছিল তখন বাঙালিদের সর্বোচ্চ নির্দেশক। ডাক ও খনার বচন কোন একক লােকের সৃষ্টি নয়, আবহমান কাল থেকে লােক পরম্পরায় চলে আসছে। এগুলাে বাঙালির অলিখিত সাহিত্য। মানুষের মুখে মুখে সৃষ্ট ও প্রচলিত। এগুলাে সমগ্র জাতির সৃষ্টি। যেহেতু কৃষিকাজের জন্য প্রযােজ্য, তাই ডাক ও খনার বচন বিভিন্ন ধরনে—
১. চাষসংক্রান্ত,
২. বৃষ্টিসংক্রান্ত,
৩. সামাজিক সংস্কারমূলক।
মূলত ডাক ও খনার বচন কৃষিপ্রধান বাঙালির জীবনে এক বিশেষ প্রয়ােজনীয় সাহিত্য।