অথবা, পতিতা বৃত্তি কী?
অথবা, পতিতা চেনার উপায় কী?
ভূমিকাঃ বাংলাদেশ অনেকগুলাে সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত। পতিতাবৃত্তি তার মধ্যে অন্যতম। মানবসমাজে সবচেয়ে ঘৃণ্য, বর্বর, অমানবিক, জঘন্য ও প্রাচীন বৃত্তি হলাে পতিতাবৃত্তি। পতিতাবৃত্তির পক্ষে ধর্মীয় আদর্শ, সামাজিক মূল্যবােধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন সমর্থন তাে নেই-ই বরং ধর্ম ও সামাজিক মূল্যবােধ তীব্রভাবে এর বিরােধিতা করে থাকে। তারপরও পৃথিবীর প্রাচীনতম এই পাপ ব্যবসার অস্তিত্ব অনেক দেশ ও সমাজে বিদ্যমান।
পতিতাবৃত্তির সংজ্ঞাঃ টাকা-পয়সা বা অন্য কোনাে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্ত্রীলােক কর্তৃক পুরুষের যৌনসম্ভোগের জন্য দেহদানকে পতিতাবৃত্তি বলা হয়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ The dictionary of social welfare-এ পতিতাবৃত্তির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, পতিতাবৃত্তি হলো- The act of engaging indiscriminate sexual relations, especially when for hire.
Encyclopeadia of Britanica (1988)-এর সংজ্ঞা মতে, পতিতা হলাে এমন মহিলা যে টাকা বা পণ্যের বিনিময়ে পরিচিত, অপরিচিত, দেশ-ভাষা নির্বিশেষে যেকোনাে লােকের সাথে যৌনমিলনে রত হয়।
অধ্যাপক হাবিবুর রহমান তার “বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা” শীর্ষক গ্রন্থে বলেন, পতিতা, বেশ্যা বা গনিকা বলতে বুঝায় সেই মহিলাকে, যে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় জীবনধারণের অর্থ বা অন্য কোনাে সম্পদ বা সুযােগের বিনিময়ে স্বামী নয় এমন যেকোনাে পুরুষের সঙ্গে অস্থায়ী ভিত্তিতে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে।
The Dictionary of Social Work-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, পতিতাবৃত্তি হচ্ছে অর্থ বা অন্য কোনাে সুবিধার বিনিময়ে অন্যজনের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন।
উপরের সংজ্ঞাগুলাের আলোকে বলা যায় যে, জীবনধারণের জন্য অর্থ বা অন্য কোনাে সম্পদের বিনিময়ে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় যৌন সম্পর্কের উদ্দেশ্যে অন্যকে যৌনসম্ভোগে সুযােগ প্রদান করাকে পতিতাবৃত্তি বলা হয়। আর এরূপ কাজে কোনাে মহিলা নিয়ােজিত থাকলে তাকে পতিতা, গনিকা, বেশ্যা বা যৌনকর্মী বলা হয়।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, পতিতাবৃত্তি জনস্বাস্থ্য এবং সামাজিক মূল্যবােধের প্রতি চরম হুমকিস্বরূপ। এ বৃত্তি মানুষের নৈতিক চরিত্রকে ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিপতিত করে। তাই সমাজের অস্তিত্বের স্বার্থে পতিতাবৃত্তিকে অবশ্যই নিবারণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে যথাযথ কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।