অথবা, পিততন্ত্র বলতে কী বুঝ?
ভূমিকাঃ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষ প্রভূত্ব বিরাজমান। পুরুষ যাবতীয় ক্ষমতা চর্চা করবে এবং বিপরীত শ্রেণি অর্থাৎ নারীরা নিগৃহীত হবে। পিতৃতন্ত্র বজায় রাখার জন্য সমাজে বিভিন্ন মাধ্যম বা বাহন ব্যবহৃত হয় এমনভাবে যার দ্বারা সমাজে পুরুষ প্রাধান্য বিস্তার লাভ করতে থাকে ক্রমাগতভাবে এবং সমাজের আরেক অংশ অর্থাৎ নারী সমাজ তাতে আত্তীকৃত হয় যেন ক্ষমতাবান না হতে পারে।
পিতৃতন্ত্রঃ পিতৃতন্ত্র (Patriarchy) শব্দটি জেন্ডারভিত্তিক ধারণা। এটি এক ধরনের কর্তৃত্ববাদি ধারণা। গ্রীক ভাষায় এর অর্থ পিতার শাসন। সত্তর দশকে নারীবাদী চিন্তা-চেতনার অধিকারীরা এ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেন সাধারণভাবে বলা যায়, পিতৃতন্ত্র হচ্ছে পিতার শাসন। যেখানে পরিবারের শিশু, নারী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য বয়ােজেষ্ঠ্য পুরুষের অধীন। অর্থাৎ পিতৃতন্ত্রের মূল কথা হলাে পুরুষ প্রাধান্য। বিভিন্নভাবে পিতৃতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করা হয়-
সিলভিয়া ওয়ালবি (Sylvia Walby) বলেন, “পিতৃতন্ত্র এমন একটি সামাজিক ব্যবস্থা যেখানে পুরুষ নারীর উপর প্রভুত্ব করে, নারীর ওপর নির্যাতন চালায় এবং নারীকে শােষণ করে।”
জলিয়েট মিশেলের (Juliet Mitchell) মতে, “পিতৃতন্ত্র এমন এক ব্যবস্থা যেখানে নারী পুরুষের হাতের বিনিময়ের দ্রব্য মাত্র। তিনি মনে করেন, এ ব্যবস্থায় পিতার এক প্রতীকী ক্ষমতা থাকে, যে প্রতীকী ক্ষমতাই নারীর হীনমন্যতার জন্য দায়ি।”
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্রকৃতপক্ষে পিতৃতন্ত্র হলাে, পুরুষ কর্তৃত্বের একটি নীতি, যে নীতি তার সামাজিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে নারীকে নিপীড়ন করে।