অথবা, জ্ঞান কী? জ্ঞানের উৎসগুলাে লিখ।
ভূমিকাঃ জ্ঞান কী অথবা জ্ঞানের উৎপত্তি কীভাবে হয়। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে দর্শনের যে শাখাটির উদ্ভব হয়েছে তার নাম জ্ঞানবিদ্যা। জ্ঞানবিদ্যায় জ্ঞান, জ্ঞানের স্বরূপ, প্রকৃতি, পরিধি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে দার্শনিকদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দেয়, তার ওপর ভিত্তি করে দর্শনে উদ্ভব হয়েছে বিভিন্ন মতবাদের।
জ্ঞানঃ জ্ঞান শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Knowledge, যার অর্থ হলাে জানা কোনাে বিষয় সম্পর্কে যখন আমাদের মনে সুস্পষ্ট ও সুশৃঙ্খল ধারণা জন্ম হয় তখন তাকে আমরা জ্ঞান বলি। জ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে “Oxford learners’s Dictionary’ তে বলা হয়েছে, “Knowledge is the facts, information, understanding a skills that and person has acquired through experience or education.” সুতরাং কোনাে বস্তু সম্পর্কে আমাদের সুস্পষ্ট ও নির্ভযােগ্য ধারণাই জ্ঞান।
জ্ঞানের উৎসসমূহঃ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে দার্শনিকদের মধ্যে মতভেদ লক্ষ করা যায়। এ সম্পর্কে দর্শনে তিনটি মৌলিক ধারা লক্ষ করা যায়। এগুলাে হলাে- বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা ও স্বজ্ঞা।
বুদ্ধিবাদঃ বুদ্ধিবাদ অনুসারে বুদ্ধিই হলাে জ্ঞানের একমাত্র উৎস।
অভিজ্ঞতাবাদঃ অভিজ্ঞতাবাদ অনুসারে অভিজ্ঞতাই জ্ঞানের একমাত্র উৎস।
সজ্ঞাবাদঃ স্বজ্ঞাবাদীরা সত্তা বা প্রত্যক্ষ অনুভূতিই জ্ঞান লাভের একমাত্র উৎস বলে মনে করেন।
বিচারবাদঃ জ্ঞানের উৎস হিসাবে বিচারবাদ অভিজ্ঞতাবাদ ও বুদ্ধিবাদকে সমন্বয় করে। এ মতবাদ অনুসারে শুধ বুদ্ধি কিংবা শুধু অভিজ্ঞতা এককভাবে যথার্থ জ্ঞানের সন্ধান দিতে পারে না, জ্ঞানের ক্ষেত্রে বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা উভয়ই প্রয়ােজন।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, জ্ঞান বলতে কোনাে বিষয় সম্পর্কে আমাদের সুস্পষ্ট কোনাে ধারণাকে বােঝায়। দর্শনের আলােচনায় একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে জ্ঞানসম্পর্কীয় আলােচনা । জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে দর্শনে আবির্ভাব ঘটেছে বিভিন্ন মতবাদের। তারা জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্নমতবাদ ব্যক্ত করে। তাই জ্ঞানবিদ্যার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মতবাদের উদ্ভব ঘটেছে।