নাইট্রোজেন চক্রের বর্ণনা।
বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন বায়ুমণ্ডল হতে মাটি ও উদ্ভিদে, উদ্ভিদ হতে প্রাণীদেহে আবার প্রাণী ও উদ্ভিদের মৃত্যুর পর পুনরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে। নাইট্রোজেন চলার এই চক্রাকার পথকে নাইট্রোজেন চক্র বলে।
এই প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপে সংঘটিত হয়।
১. বায়ু হতে মাটিতেঃ বজ্রপাতের সময় বিদ্যুৎক্ষরণের ফলে বায়ুর নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন যুক্ত হয়ে NO₂ উৎপন্ন করে। NO₂ পানির সাথে বিক্রিয়া করে HNO₃ তৈরি করে এবং মাটিতে পতিত হয়। মাটিতে থাকা ধাতব আয়নের সাথে যুক্ত হয়ে নাইট্রেট লবণ গঠন করে।
২. মাটি ও বায়ু হতে উদ্ভিদেঃ উদ্ভিদ মাটি হতে নাইট্রেট লবন আকারে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে রূপান্তরিত করে। কিছু লিগুমিনাস জাতীয় উদ্ভিদ যেমন- সিম, মটর, ছোলা ইত্যাদির শিকড়ে থাকা সিম্বায়টিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বায়ু হতে সরাসরি নাইট্রোজেন গ্রহণ করে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উৎপন্ন করে।
৩. উদ্ভিদ থেকে প্রাণী দেহেঃ প্রাণী খাদ্য হিসাবে সরাসরি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন গ্রহণ করে। এছাড়া তৃণভোজী প্রাণী খাদ্যরূপে উদ্ভিদ গ্রহণ করে। আবার মাংসভোজী প্রাণী তৃণভোজী প্রাণীর মাংস খায়। এভাবে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন প্রাণীদেহে স্থানান্তরিত হয় এবং প্রাণীজ প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়।
৪. প্রাণীদেহ ও উদ্ভিদ থেকে বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেন প্রত্যাবর্তনঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরণ ও পচনের ফলে ডিনাইট্রিফাইয়িং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা প্রোটিন বিয়োজিত হয়ে কিছু নাইট্রোজেন মাটিতে এবং বায়ুমন্ডলে মিশে যায়।
এভাবে প্রাকৃতিক নিয়মে নাইট্রোজেন চক্রাকারে আবর্তিত হয় এবং বায়ুমন্ডলে এর পরিমাণ স্থির থাকে।