আমির তৈমুর লঙের আক্রমণ ও পরিণতি:
আমির তৈমুর ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে মধ্য-এশিয়ার সমরখন্দের পঞ্চাশ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত ‘কেচ’ (শহর-ই-শব্জ) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আমির তাঘী বারলা তুর্কি উপজাতিদের সুরগান বা চাঘতাই তুর্কি সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন। বাল্যকালে যুদ্ধ করার সময় তৈমুরের পা তিরবিদ্ধ হয়। এই সময় থেকে তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য হন। তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী ‘আক্শক তৈমুর’ বা খোঁড়া তৈমুর বলে পরিহাস করতে শুরু করে। ক্রমে তিনি ‘তৈমুর লঙ’(Taimur the lame) নামেই পরিচিত হয়ে যান। ১৩৬৯ খ্রিস্টাব্দে তৈমুর সমরখন্দের সিংহাসনে বসেন। দুর্ধর্ষ সামরিক নেতা হিসাবে পৃথিবীর ইতিহাসে যাঁরা অমর হয়ে আছেন তৈমুর লঙ ছিলেন তাঁদের অন্যতম। খুব সাধারণ অবস্থা থেকে তিনি মধ্য-এশিয়া ও এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। স্ট্রান্স অক্সিয়ানা ও তুর্কিস্থানের একাংশের সাথে তিনি সমগ্র আফগানিস্তান, পারস্য, সিরিয়া, তুর্কিস্থান ও এশিয়া মাইনরের অধিকাংশ অঞ্চলে নিজ কর্তৃত্ব প্রসারিত করেন। রাজনৈতিক জীবনের শেষদিকে তৈমুর ভারতের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। চেঙ্গিজ খাঁ’র সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক আছে বলে তিনি দাবি করতেন। তাই চেঙ্গিজ খাঁ’র সাম্রাজ্য পুনর্গঠনের পরিকল্পনা তিনি নেন।
কোনো প্ররোচনা ছাড়াই তৈমুর ভারতবর্ষ আক্রমণের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতা থেকেই তিনি ভারতের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। সেই সময় দিল্লি-সুলতানি ছিল অন্তর্দ্বন্দ্বে জীর্ণ। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। ভারতের এই রাজনৈতিক দুরবস্থা তৈমুরকে উৎসাহিত করে। অধ্যাপক শ্রীবাস্তব (A.L. Srivastava)-এর মতে, তৈমুর লঙ কেবল দুর্ধর্ষ ছিলেন না, যথেষ্ট বিচক্ষণতা ও কূটনৈতিক বোধও তাঁর ছিল। তাই ভারত-আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে তিনি সম্পদ-লুব্ধতার সাথে ধর্মকে জুড়ে দেন। ভারতের সুলতানদের পৌত্তলিকদের সাথে আপস ও সহাবস্থানের অবসান ঘটানোকে তিনি ভারত-আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। নিজ আত্মজীবনীমূলক ‘মিলফুজাৎ-ই-তৈমুরী’ (বা তুজুক-ই-তৈমুরী) গ্রন্থে তিনি লিখেছেন যে, “পৌত্তলিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ‘গাজি’ বা ‘শহিদ হওয়াই’ তাঁর হিন্দুস্তান অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।” আবার দু-এক ায়গায় তিনি ‘পৌত্তলিকদের সম্পত্তি ধ্বংস করে ইসলামের সৈনিকদের কিছু পাইয়ে দেওয়াকে ভারত আক্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর ভারত অভিযানের গতিপ্রকৃতি থেকে একথা স্পষ্ট যে, ভারতে ভূমি দখল বা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার কোনো ইচ্ছা তাঁর ছিল না। সম্ভবত, ধর্মীয় প্রেরণা ও অর্থনৈতিক লোভ—দুটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি ভারত-আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। এই প্রেক্ষিতে ড. মজুমদার লিখেছেনঃ “প্রকৃত প্রস্তাবে তাঁর (তৈমুর) মধ্যে চেঙ্গিজ খাঁ’র দুর্ধর্ষ অভিযানপ্রিয়তা এবং সুলতান মামুদের ধর্মীয় জেহাদের সমাবেশ ঘটেছিল” (“As a matter of fact, he combined in himself the savage ferocity of Ceinghiz Khan and the fanaticism of Sultan Mahmud.”)।
১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে তৈমুর তাঁর পৌত্র পিরমহম্মদের নেতৃত্বে একটি অগ্রবর্তী বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে পাঠান। পিরমহম্মদ ছ-মাস অবরোধের পর মুলতান দখল করেন। ওই বছরের এপ্রিল মাসে স্বয়ং তৈমুর এক বিশাল বাহিনীসহ সমরখন্দ থেকে রওনা হন। সিন্ধু, ঝিলাম ও রাভী নদী পার হয়ে তিনি মুলতানের পঁচাত্তর মাইল উত্তর-পূর্বে ‘তালম্বা’ শহরে উপস্থিত হন। এখানে বহু লোককে হত্যা করে এবং প্রচুর ধনসম্পদ লুণ্ঠন করে তৈমুর লঙ বছরের শেষদিকে দিল্লির প্রান্তে এসে পৌঁছান। যাত্রাপথে পাক-পাতন, দিপালপুর, ভাতনার, শিরসা, কৈথাল প্রভৃতি অঞ্চল তিনি শ্মশানে পরিণত করে দেন। হাজার হাজার হিন্দু-পুরুষ তাঁর বাহিনীর হাতে প্রাণ দেয়। নারী ও শিশুদের দাসে পরিণত করা হয়। অপদার্থ সুলতান নাসিরউদ্দিন মামুদ তৈমুর লঙের এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও লুণ্ঠন নীরবে লক্ষ্য করে যান। শেষ পর্যন্ত দিল্লি হাতছাড়া হবার সম্ভাবনা প্রকট হলে মন্ত্রী ও পরামর্শদাতা মন্নু ইকবালের সাথে মিলিতভাবে একটা দুর্বল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তৈমুর অনায়াসে সুলতানি বাহিনীকে পরাস্ত করেন। ভীত-সন্ত্রস্ত সুলতান পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন (১২ ডিসেম্বর, ১৩৯৮ খ্রিঃ)। অথচ সুলতানের এহেন হটকারী আচরণের বদলা হিসেবে তৈমুর লঙ প্রায় এক লক্ষ হিন্দু-বন্দিকে হত্যার নির্দেশ দেন। কথিত আছে যে, দুজন আমির তৈমুর লঙকে জানায় যে, দিল্লির সুলতানের আক্রমণের সংবাদে হিন্দু-বন্দিরা দারুণ উল্লসিত হয়েছে এবং তৈমুরের বিরুদ্ধে ধ্বনি দিয়েছে। এমন সম্ভাবনা আছে যে, সুযোগ পাওয়া মাত্রই এই বিশাল সংখ্যক বন্দি শত্রুপক্ষের সাথে যোগ দিয়ে তৈমুরের বাহিনীকে আক্রমণ করবে। এই সংবাদে তৈমুর উত্তেজিত হন এবং বিভিন্ন সৈনিকের হাতে বন্দি-হিন্দুদের হত্যার নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশ সত্বর পালিত হয় এবং এক লক্ষ্য হিন্দুর রক্তে দিল্লির মাটি রঞ্জিত হয়। এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তৈমুর লিখেছেন : “মৌলানা নাসিরউদ্দিন উমর, যিনি এতাবৎকাল একটি চড়ুই পাখিকেও হত্যা করেননি, এখন আমার নির্দেশে পনেরো জন পৌত্তলিক বন্দি-হিন্দুকে হত্যা করেন।”
১৭ ডিসেম্বর সুলতান মামুদ ও মন্ত্রী মন্নু ইকবাল আবার তৈমুরকে বাধা দিতে অগ্রসর হন। প্রায় দশ হাজার অশ্বারোহী, চল্লিশ হাজার পদাতিক ও শতাধিক রণহস্তীসহ সুলতান তৈমুরের মুখোমুখি হন। কিন্তু এবারেও সুলতান পরাজিত হন। মল্লু বরণপ্রদেশে এবং সুলতান মামুদ গুজরাটে পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচান। পরের দিন (১৮ ডিসেম্বর) তৈমুর সসৈন্যে দিল্লিতে প্রবেশ করেন। অতঃপর শুরু হয় হিন্দুনিধন যজ্ঞ। টানা তিনদিন তৈমুরের বাহিনী তাণ্ডব চালায় গোটা দিল্লি জুড়ে। তৈমুর নিজেই লিখেছেন : “তখন বাহিনী ছিল আমারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। হত্যা, লুণ্ঠন ও বন্দি করা ছাড়া কিছুই তাদের চিন্তার মধ্যে ছিল না। সৈয়দ, উলেমা ও অন্যান্য মুসলমানদের গৃহ ছাড়া গোটা শহরটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।” এই বীভৎস হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসলীলার জন্য তৈমুর দিল্লিবাসী হিন্দুদের প্রতিরোধক দায়ী করে বলেন, “আমার ইচ্ছায় নয়, ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী দিল্লির তিনটি শহর ধ্বংস হয়েছে।” জনৈক ঐতিহাসিক লিখেছেন যে, হিন্দুদের ছিন্নমুণ্ড দিয়ে সৌধ নির্মাণ করে তৈমুরের সেনাদল উল্লাস প্রকাশ করে। হাজার হাজার নরদেহ মাংসাশী পশু ও পাখির খাদ্যে পরিণত হয়। লেনপুল (Lane Pool) লিখেছেন : “The unhappy city was turned into a place of bloodshed, ruin and destruction. There were inmense spoils of rubies, diamonds, pearls, gold and silver ornaments… Only the followers of Muslim religion escaped the general sack.”
প্রায় পনেরো দিন দিল্লিতে অবস্থান করার পর তৈমুর প্রত্যাবর্তনের পথ ধরেন। ফেরার পথে ফিরোজাবাদ, মীরাট, হরিদ্বার অঞ্চলেও তিনি লুণ্ঠন ও হত্যাকাণ্ড চালান। শিবালিক পাহাড়ের পথ ধরে উত্তরে যাওয়ার সময় কাংড়া ও জম্মু তিনি লুণ্ঠন করেন। ভারত ত্যাগের পূর্বমুহূর্তে খিজির খাঁকে তিনি মুলতান, লাহোর ও দীপালপুরের শাসক নিযুক্ত করেন (৬ মার্চ, ১৩৯৯ খ্রিঃ)। অনেকের মতে, তৈমুর তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে দিল্লির দায়িত্বও খিজির খাঁ’র হাতে অর্পণ করেছিলেন। ১৩৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মার্চ সিন্ধুনদ অতিক্রম করে তৈমুর লঙ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের ওপর তৈমুর লঙের আক্রমণের প্রভাব ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেম্ব্রিজ ঐতিহাসিক উলসী হেগ (W. Haig) লিখেছেন : “ইতিপূর্বে কোনো একটি আক্রমণে অন্য কোনো আক্রমণকারী তৈমুরের মতো হিন্দুস্তানে এত তীব্র দুঃখকষ্টের সৃষ্টি করেননি।” (“Timur recrossed Indus-after inflicting on India more misery than had ever before been inflicted by any conqueror in a single invasion.”)। সুলতান মামুদ নৃশংসতম হত্যাকারী রূপে ভারত-ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে আছেন। কিন্তু তৈমুর লঙের মতো একটি মাত্র অভিযানে এত রক্তপাত তিনিও করেননি। এই হত্যাকাণ্ড এত ব্যাপক ছিল যে, “স্তূপীকৃত মৃতদেহের দুর্গন্ধে এবং রক্তপাতের আতঙ্কে দু-মাস দিল্লির আকাশে কোনো পাখিও উড়তে দেখা যায়নি।” ঐতিহাসিক স্মিথের ভাষায়: “Timur quitted India, leaving anarchy, famine and pestilence behind him.” নির্বিচার হত্যা ও সীমাহীন লুণ্ঠনের অনিবার্য ফলস্বরূপ দুর্ভিক্ষ আর মড়ক নামে দেশ জুড়ে। তৈমুরের বাহিনী সঞ্চিত খাদ্যশস্য লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। নষ্ট করে দেয় মাঠের ফসল। ফলে নেমে আসে দুর্ভিক্ষের করাল গ্রাস। একদিকে অনাহার আর অন্যদিকে বায়ু ও জল দূষণের ফলে মড়কের কবলে পড়ে দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল। তারিখ-ই-মোবারকশাহিতে লেখা হয়েছে : “Many died of sickness and many of hunger. For a couple of months Delhi presented a scene of desolation and woe.” ড. মজুমদার লিখেছেনঃ “দিল্লির মুসলমান সুলতানের রাজধানী শহরের এই বেদনাময় পরিণতি ঘটেছিল এমনই একজনের হাতে যিনি নিজেকে ইসলামের রক্ষক হিসেবে দাবি করেন।”অধ্যাপক সতীশ চন্দ্র লিখেছেন: “এই আক্রমণে নিঃস্ব হয়ে যায় হিন্দুস্তান। স্বর্ণ, রৌপ্য, মণিমুক্তা প্রভৃতি প্রচুর ধনসম্পদ চলে যায় ভারত থেকে।” মহম্মদ হাবিবের মতে, তৈমুর লঙ হত্যাকাণ্ডের সময় সাধারণ মুসলমানদেরও রেহাই দেননি। সম্ভবত, ধর্মজ্ঞানী কিছু মানুষ তাঁর রোষ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। কারণ, তাঁদের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। নচেৎ অর্থ লুণ্ঠনের কাজে তাঁর তরবারির সামনে হিন্দু-মুসলমানের ভাগ্য একাকার হয়ে গিয়েছিল।
ক্ষয়িষ্ণু তুঘলক সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক অস্তিত্বের ওপর চরম আঘাত হেনেছিল তৈমুরের আক্রমণ। তৈমুর লঙের প্রায় প্রতিরোধহীন অগ্রগতি এবং সাফল্য আরও একবার স্পষ্ট করেছিল ভারতের সামরিক দৈন্য। দিল্লির সুলতানের পলায়নী মনোবৃত্তি, প্রজাসাধারণের ধনমান রক্ষায় নির্লিপ্ততা, শাসক হিসেবে দায়িত্ববোধের একান্ত অভাব যুগপৎ উচ্চাকাঙ্ক্ষী আমির মালিকদের স্বাধীনতাস্পৃহা বৃদ্ধি করেছিল এবং প্রজাসাধারণের মনে চরম হতাশার জন্ম দিয়েছিল। চূড়ান্ত রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগে বহু অঞ্চল দিল্লির অধীনতা অস্বীকার করে স্বাধীন শাসনের সূচনা করেছিল। বাংলা ও দক্ষিণ ভারত আগেই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল। এখন তৈমুর লঙের আক্রমণের পরে গুজরাট, সামানা, বিয়ানা, কালপি, মাহাবা, মুলতান, পাঞ্জাব, সিন্ধু প্রভৃতি বহুস্থানে গড়ে ওঠে স্বাধীন রাজ্য। সুবিস্তৃত সুলতানি সাম্রাজ্য ‘দিল্লি থেকে পালামের’ ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে সংকুচিত হয়ে পড়েছিল।
সামাজিক জীবনেও তৈমুরের আক্রমণ-প্রভাব ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তৈমুর লঙ ধর্মের নামে হিন্দুদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিলেন। ফলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিরোধ বৃদ্ধি পায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় হিন্দু-মুসলমানের সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের ধারা। হিন্দু পিতামাতা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তাদের কন্যাদের বাল্যবিবাহের জন্য সচেষ্ট হন। কারণ নারীর মর্যাদা রক্ষার অন্যতম উপায় হিসেবে এই কাজটাই তাদের কাছে সহজসাধ্য বলে মনে হয়। এর অনিবার্য ফলস্বরূপ সমাজের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
ভারতের সাংস্কৃতিক অগ্রগতিও এই আক্রমণের ফলে ব্যাহত হয়। তৈমুরের বাহিনী বহু সুদৃশ্য অট্টালিকা ও মন্দির ধ্বংস করেছিল। তা ছাড়া তিনি বহু সুদক্ষ ভারতীয় কারিগর, রাজমিস্ত্রী ও শিল্পীকে স্বদেশে ধরে নিয়ে যান। এদের প্রতিভার অবদান থেকে ভারত বঞ্চিত হয় এবং সমৃদ্ধ হয় সমরখন্দের শিল্পধারা। এই সকল ভারতীয় শিল্পীর মাধ্যমে ভারতীয় শিল্পের ধারা সম্প্রসারিত হয় মধ্য-এশিয়ার নানা অঞ্চলে।