অর্থনৈতিক অবস্থা:
সপ্তম শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সময়কালে ভারতীয় অর্থনীতির মূল ভিত্তি কৃষিক্ষেত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল উদ্বৃত্ত উৎপাদনের বণ্টন ব্যবস্থায় নতুনত্ব। সমকালীন কিছু শিলালেখ, তাম্রশাসন, সাহিত্যসম্ভার এবং আরবি ও ফার্সী বিবরণী থেকে নতুন ভূমি সম্পর্কের আভাস পাওয়া যায়। আলোচ্য পাঁচশো বছরের প্রধান ঘটনা হল ‘শাসকশ্রেণির গ্রামায়ন’। মৌর্য শাসনের পরবর্তীকালে নগরজীবনের অবক্ষয়, বাণিজ্যে অধোগতি এবং নগদ মুদ্রার সংখ্যাল্পতার সাথে সম্ভবত এই পরিবর্তনটি সম্পর্কিত। এই পরিস্থিতির ফলস্বরূপ কেন্দ্রীয় শাসন এবং একেকটি রাজ্যের প্রশাসক ও অভিজাতবৃন্দের বসবাস বিকেন্দ্রীকৃত হয় এবং এঁরা মূলত জমির আয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে বাধ্য হন। শ্রীরাম শৰ্মা এই পরিবর্তনকে ভারতীয় অর্থনীতিতে সামন্ততন্ত্রের আবির্ভাব বলে উল্লেখ করেছেন। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতে কেন্দ্রীয় শাসনের পরিবর্তে আঞ্চলিক আনুগত্যভিত্তিক বহু ছোটো ছোটো রাজ্য গড়ে উঠেছিল। তারা স্থানীয় প্রয়োজন ও সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে যে নতুন আর্থরাজনৈতিক কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করে, তাতে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ও উৎপাদন ব্যবস্থার অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। অবশ্য ইউরোপের অন্যান্য দেশের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে ভারতের সামন্ততান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যের মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ এখানে অর্থনৈতিক চুক্তির ওপর জোর দেওয়া হয়নি কিংবা ‘ম্যানর’ (Manor) ব্যবস্থার অস্তিত্বও ছিল না। তাই অনেকে তৎকালীন ভারতীয় সমাজকে ‘সামস্ততান্ত্রিক ধাঁচের সমাজব্যবস্থা’বলে অভিহিত করেন। আধুনিক গবেষকদের অনেকে মনে করেন, তথাকথিত ‘সামন্ততন্ত্র’ ভারতে ছিল না; তবে ভারতীয় সমাজে সামন্ততান্ত্রিক উপাদানের অস্তিত্ব অবশ্যই ছিল। যাই হোক্, সপ্তম শতকের ভারতীয় সমাজকে ‘সামন্ততান্ত্রিক উপাদান-সমন্বিত সমাজ’বলাই অধিক সঙ্গত। প্রথমে উত্তর ভারতে এবং পরে দক্ষিণ ভারতে এই পরিবর্তন সম্প্রসারিত হয়। সপ্তম শতকে নগদ বেতনের পরিবর্তে সরকারি কর্মচারীদের জমি ইজারা দেবার প্রথা চালু হলে সামন্ততন্ত্রের পথ সুগম হয়। পাল-প্রতিহার ও রাষ্ট্রকূটদের রাজত্বে এই জাতীয় ধর্মনিরপেক্ষ অনুদান হিসেবে বহু গ্রাম দান করা হয়। ধর্মীয় কারণে ব্রাহ্মণ, পুরোহিত বা মন্দিরকে ভূমিদানের প্রথা প্রাচীনকাল থেকেই ছিল। তবে গুপ্তযুগে ভূমির রাজস্ব অধিকারের সাথে সাথে এই অঞ্চলের সাধারণ প্রশাসক, বিচার ইত্যাদির দায়িত্বও দানগ্রহীতার হাতে অর্পিত হয়। খনিজ দ্রব্যের মালিকানাও দানগ্রহীতা লাভ করেন। ধর্মনিরপেক্ষ দানের ক্ষেত্রেও এই সকল অতিরিক্ত অধিকার সম্প্রসারিত হয়। এ ছাড়া ছিলেন কিছু পরাজিত রাজা, যারা বশ্যতা স্বীকারের বিনিময়ে কিছু অঞ্চলের রাজস্ব আদায় ও ভোগ করতে পারতেন। অধ্যাপক সতীশচন্দ্র সামন্ততন্ত্রের ধারক ও বাহক হিসেবে আরও দুটি শ্রেণির উল্লেখ করেছেন— স্থানীয় উদ্যমশীল ব্যক্তি এবং উপজাতিগোষ্ঠীর নায়ক। এরাও রাজার অনুমতিক্রমে কম বা বেশি নির্দিষ্ট অঞ্চলে আধিপত্য করতেন। এইভাবে ‘উৎপাদনে কায়িকশ্রম না-দিয়ে যে গোষ্ঠী মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে নিজেদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতেন, তাঁরাই এদেশে সামন্ততন্ত্রের বাহক হিসেবে চিহ্নিত হলেন।
সামন্তদের কর্তব্যকর্মের মধ্যে প্রধান ছিল কর আদায় করা এবং যুদ্ধের সময় রাজাকে সেনা সরবরাহ করা। অর্থাৎ সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র এবং রাজকীয় বাহিনী অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। রাজা সামন্তদের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ফলে তাদের ক্ষমতা ও মর্যাদা হ্রাস পায়। ইতিপূর্বে গ্রামগুলি ছিল বহুলাংশে স্বনির্ভর। স্বতন্ত্রভাবেই হোক্ কিংবা সমষ্টিগতভাবেই হোক্, গ্রামগুলির একটা প্রবণতা ছিল আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠার। অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা, স্থানীয় প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে এবং স্থানীয় স্বশাসন প্রবর্তন করে গ্রামগুলি রাষ্ট্রের প্রাথমিক স্তরে একটা প্রাণস্পন্দন জাগানোর চেষ্টা করত। কিন্তু সামন্তব্যবস্থার বিকাশ গ্রামগুলিকে শক্তিহীন ও শ্রীহীন করে তোলে। সামন্ত-প্রধানদের আধিপত্য গ্রাম্য-স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। গ্রাম-সমিতির নির্বাচনে সামন্ত-প্রভুর মতামত প্রাধান্য পেতে থাকে। ফলে স্বাভাবিক ও সুস্থ নির্বাচন ব্যাহত হয়।
সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ‘দাসব্যবস্থা’ তখন কী আকারে ছিল, তা পরিষ্কার বলা কঠিন। তবে পণ্ডিত ও গবেষকরা সমকালীন দানপত্র এবং বিবরণী বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, ক্রীতদাস-ব্যবস্থা হয়তো ভারতে ছিল না, কিন্তু ভূমিদাসত্বের অস্তিত্ব ছিল। এক্ষেত্রেও স্মরণীয় যে, ইউরোপের ভূমিদাসদের জীবনযাপন পদ্ধতির রূপ ও কঠোরতা অষ্টম শতকের ভারতে ছিল না; তবে ভূমির সাথেই আবদ্ধ একদল মানুষ ছিল,—যারা বংশানুক্রমে ভূমির আধিকারিক পরিবর্তনের সাথে নিজেদের ভাগ্যকে জড়িয়ে রাখতে বাধ্য ছিল। অধ্যাপক রামশরণ শৰ্মা উল্লেখ করেছেন যে, “কাংড়া ও গুজরাটের কোনো কোনো অংশে ষষ্ঠ ও সপ্তম দশকের মধ্যে ভূমিদাস-প্রথা প্রচলিত ছিল।” জমিদানের সঙ্গে সঙ্গে উল্লিখিত জমির সাথে যুক্ত চাষিদেরও দানগ্রহীতার কাছে হস্তান্তরের রীতি প্রথম শুরু হয় দক্ষিণ ভারতে এবং তা সপ্তম শতকের আগেই। পরে এই ব্যবস্থা দেশের অন্যান্য অংশে চালু হয়। তবে এই প্রথা প্রথমেই গ্রামভিত্তিক চাষিদের ওপর প্রযুক্ত হয়নি। সম্ভবত প্রথমদিকে সেই সকল জমির সঙ্গে চাষিদেরও দাসরূপে হস্তান্তরিত করা হত, যেখানে চাষিরা অসংগঠিতভাবে চাষের কাজে যুক্ত থাকত কিংবা যে জমি কোনো সংগঠিত গ্রামের অংশ ছিল না, সেটিকেই দান করা হত। অধ্যাপক শর্মা এক্ষেত্রে দু-ধরনের চাষির কথা উল্লেখ করেছেন—(১) যারা একান্তভাবে কৃষি-শ্রমিক হিসেবে জমি চাষ করত এবং (২) যারা গ্রামবাসী প্রজা হিসেবে নিজ উৎপন্ন ফসলের একাংশ দানগ্রহীতাকে প্রদান করত এবং দানপত্রে নির্দিষ্ট অন্যান্য কর্তব্য পালন করত। অধ্যাপক শর্মা জমির সাথে যুক্ত কৃষি শ্রমিকদের ‘পূর্ণ ভূমিদাস’ রূপে এবং গ্রামের হস্তান্তরিত চাষিদের ‘অর্ধদাস’রূপে অভিহিত করেছেন। ৭৩২ খ্রিস্টাব্দে জনৈক চিনা পর্যটকের গ্রন্থেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, অষ্টম শতকের মধ্যভাগে দাসব্যবস্থা এদেশে বহুল প্রচলিত একটি রীতি ছিল।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সপ্তম থেকে দশম শতককে ভারতের ক্ষেত্রে, ‘গতিহীন জড়ত্ব ও অবক্ষয়ের যুগ’ বলে চিহ্নিত করেছেন কোনো কোনো পণ্ডিত। এবং এই স্থবিরত্বের জন্য তাঁরা দায়ী করেছেন আলোচ্য পর্বে ভারতীয় বাণিজ্যের ক্রমাবনতিকে। পশ্চিমি দেশগুলির সাথে ভারতের সমৃদ্ধ বাণিজ্য এই পর্বে ভিন্ন চরিত্রের কয়েকটি কারণে দ্রুত হ্রাস পেয়েছিল। যেমন—(১) পশ্চিম রোম সাম্রাজ্যের সাথে ভারতের বেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাণিজ্য দীর্ঘকাল চালু ছিল। কিন্তু বর্বর আক্রমণের ফলে পশ্চিম রোম সাম্রাজ্যের পতন এবং পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের সাথে পারস্য সাম্রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ভারতের ব্যবসা ব্যাহত হয়। (২) ইসলামের উত্থান এবং পারস্যের সামানিদ প্রভৃতি প্রাচীন সাম্রাজ্যের পতনের ফলেও ভারতে স্থল-বাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অধ্যাপক শর্মা লিখেছেন : “ইসলামের পতাকাতলে মিলিত আরবদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রসারের ফলেও ভারতের বহির্বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে। বিশেষ করে প্রথমদিকে পশ্চিম এশিয়া, মিশর ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে আরবদের বিজয়-অভিযান যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করেছিল, তার প্রতিকূল প্রভাব পড়েছিল পশ্চিমি দেশগুলির সাথে ভারতের বাণিজ্যে। অবশ্য পরবর্তীকালে পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় সুবিস্তৃত আরব সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবার ফলে এবং আরও পরে সিন্ধুপ্রদেশে আরবীয় শাসনের সূচনা ঘটলে ভারতের বহির্বাণিজ্যে আবার জোয়ার এসেছিল।”(৩) সমকালীন কয়েকটি স্মৃতিশাস্ত্রে সমুদ্রযাত্রাকে ‘অপবিত্র কর্ম’ বলে নিন্দা করা হয়েছে, যা বাণিজ্যিক অবক্ষয়ের আভাস দেয়। পশ্চিমি দেশগুলিতে ইসলামধর্মের উত্থান এবং পূর্বের দেশসমূহে বৌদ্ধধর্মের প্রাধান্য সম্ভবত ব্রাহ্মণ্যধর্মের নেতাদের শঙ্কিত করেছিল। কারণ ওই সকল দেশে বাণিজ্যের কারণে অধিক সংখ্যক ভারতীয় ভ্রমণ করলে ওই সকল দেশ থেকে ব্রাহ্মণ্যধর্মবিরোধী ভাবধারা এদেশে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা ছিল। তবে এই কারণটির গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে ছিল সীমিত। কারণ, ব্রাহ্মণ ব্যতীত অন্যান্য বর্ণের মানুষ এই নিষেধাজ্ঞাকে যে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন না, তখন পারস্য ও পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম-অধ্যুষিত দেশগুলিতে ভারতীয় বণিক, কারিগর ও বুদ্ধিজীবীদের অবস্থান তার যথার্থতা প্রমাণ করে। (৪) সামন্ততান্ত্রিক আর্থসামাজিক ব্যবস্থার দ্রুত প্রসারের ফলে ভূমিভিত্তিক অভিজাততন্ত্রের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। ফলে জমি থেকে নিয়মিত ও নিশ্চিত আয়ের লোভে অনিশ্চিত বাণিজ্যযাত্রা মুৰ্খামি বলে বিবেচিত হতে শুরু করে। তা ছাড়া, গ্রামগুলি অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলে স্বাভাবিকভাবেই গ্রামে ব্যবসাবাণিজ্য অপ্রয়োজনীয় বোধ হয়। পরস্তু, অষ্টম শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ ভারতে জারি করা দুটি সনদে দেখা যায়, একটি ক্ষেত্রে কয়েকজন ব্যবসায়ীর একটি দলের হাতে একটি মন্দিরকে দান করা কয়েকটি গ্রামের তত্ত্বাবধানের ভার দেওয়া হয়েছিল এবং অপর ক্ষেত্রে একটি শহর ও সংলগ্ন তিনটি গ্রামের দায়িত্ব দুজন ব্যবসায়ীর হাতে অর্পিত হয়েছিল। দুটি ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ীদের হাতে ‘সামন্ততান্ত্রিক’ সব অধিকার তুলে দেওয়া হয়েছিল। ফলে বণিকেরাও মধ্যস্বত্বভোগীতে পরিণত হওয়ায় বাণিজ্যপ্রবণতা হ্রাস পাচ্ছিল।
আলোচ্য পর্বে উল্লিখিত কারণে পশ্চিমি দেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য হ্রাস পেলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চিনের সাথে ভারতীয় বাণিজ্য অব্যাহত ছিল। নবম শতকের একটি চৈনিক বিবরণী থেকে জানা যায় যে, সপ্তম শতকে চিনে বহু ভারতীয় বণিক বসবাস করত। চিনের ক্যান্টন নদী পারসিক ও আরবীয় জাহাজের সাথে সাথে ভারতীয় জাহাজে ভরতি থাকত। ‘জাপানি বিবরণী’তেও চিনে ভারতীয় বণিকদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই বাণিজ্যে বিশিষ্ট ভূমিকা নিত বাংলা ও দক্ষিণ ভারতের বন্দরগুলি। বাংলার পাল ও সেন রাজারা এবং দক্ষিণ ভারতের চোল ও পল্লব রাজারা চিনে দূত প্রেরণ করে সে দেশের সাথে বাণিজ্যপ্রসারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। চিনের সাথে বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করার জন্য চোল রাজারা মালয় ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলির বিরুদ্ধে নৌ-অভিযানও প্রেরণ করেছিলেন। ত্রয়োদশ শতকে এই বাণিজ্যে মন্দা দেখা দেয়।
রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা, অন্তর্দ্বন্দ্ব, ব্যক্তি বা বংশভিত্তিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, জাতীয় চেতনার একাত্ত অভাব, নিশ্চল মধ্যযুগীয় অর্থব্যবস্থা মিলিতভাবে ভারতের রাষ্ট্রজীবনে যে ভাঙন ধরিয়েছিল, সেই পথ ধরে একের পর এক মুসলমান আক্রমণ ঘটেছিল ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে। প্রথমে আরবগণ, তারপরে মামুদ গজনি এবং শেষে মহম্মদ ঘুরি বিধর্মীর দেশ এই ভারতবর্ষের অতুল ধনসম্পদ আর বিধর্মীকে ধর্মান্তরিত করে ইসলামের বিজয়যাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন এর বুকে। ভারতভূমির বক্ষদেশের পাঁজরসদৃশ তন্দ্রাচ্ছন্ন রক্ষককুল আত্মকেন্দ্রিকতা ও অন্তর্দ্বন্দ্বে এতটাই দীর্ণ ছিল যে, বহির্জগতের দিকে চোখ ফেরানো বা সেই শক্তিকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা, – কোনোটাই তার অবশিষ্ট ছিল না।