সাম্যের ধারণা বিশেষভাবে ব্যাপক। আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক, রাজনীতিক প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাম্যের কথা বলা হয়। এই কারণে অধিকার ও স্বাধীনতার ন্যায় সাম্যেরও বিভিন্ন রূপ পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত নিম্নলিখিত চার ধরনের সাম্যের উপর জোর দেওয়া হয়। এই চার ধরনের সাম্য হল:
-
(১) রাজনীতিক সাম্য (Political Equality),
-
(২) আর্থনীতিক সাম্য (Economic Equality),
-
(৩) আইনগত সাম্য (Legal Equality),
-
(8) শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সাম্য (Education and Cultural Equality).
(১) রাজনীতিক সাম্য
রাজনীতিক সাম্যের প্রকৃতি: রাজনীতিক সাম্য বলতে রাজনীতিক অধিকার ভোগের সমতাকে বোঝায়। রাজনীতিক অধিকার বলতে ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়ার অধিকার, সরকারী চাকরি লাভের অধিকার, সরকারী কার্যে অংশগ্রহণের অধিকার, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার প্রভৃতিকে বোঝায়। নাবালক, দেউলিয়া, উম্মাদ ব্যতীত সকলে রাজনীতিক অধিকারগুলি ভোগ করার সুযোগ পেলে রাজনীতিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাকে রাজনীতিক সাম্যের পরিচায়ক হিসাবে গণ্য করা হয়। বলা হয় যে, রাজনীতিক ক্ষমতা লাভ এবং রাজনীতিক বিষয়ে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ-সুবিধার অস্তিত্বই হল রাজনীতিক সাম্য। রাজনীতিক সাম্যের স্বার্থে রাজনীতিক জীবনে যাবতীয় বৈষম্যের অবসান আবশ্যক এবং রাজনীতিক ক্ষেত্রে সমানাধিকার ও সমমর্যাদা স্বীকৃত হওয়া দরকার।
ল্যাস্কির মতানুসারে আর্থনীতিক ক্ষেত্রে সাম্য ব্যতিরেকে রাজনীতিক সাম্য হল অর্থহীন। কারণ সমাজে ব্যাপক আর্থনীতিক বৈষম্য বর্তমান থাকলে সমাজে সকলের সমানভাবে রাজনীতিক ক্ষমতা লাভের সম্ভাবনা থাকে না। আর্থনীতিক ক্ষমতাই রাজনীতিক ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর্থনীতিক সাম্য রাজনীতিক সাম্যকে নিয়ন্ত্রণ করে। একই কথা সামাজিক সাম্য সম্পর্কেও প্রযোজ্য। আর্থনীতিক ক্ষেত্রে অসাম্যের অস্তিত্ব সামাজিক ক্ষেত্রে সকলের সমমর্যাদা ভোগের সম্ভাবনাকে বাতিল করে দেয়।
(২) আর্থনীতিক সাম্য
আর্থনীতিক সাম্যের প্রকৃতি: আর্থনীতিক সাম্য ব্যতিরেকে অন্যান্য ক্ষেত্রে সাম্যের স্বীকৃতি মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আয় ও ধনবৈষম্যের অনস্তিত্বই সাম্যের মূল কথা। সাম্য বলতে যদি ব্যক্তিত্ব বিকাশের উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধার সমতাকে বোঝায়, তা হলে আর্থনীতিক সাম্যের গুরুত্ব সর্বাধিক। আর্থনীতিক সাম্য না থাকলে অন্যান্য সাম্য ও নাগরিক অধিকার অর্থহীন হয়ে পড়ে। আর্থনীতিক অসাম্য-বৈষম্য থাকলে সমাজে সম্পদশালী একটি শ্রেণীর সৃষ্টি হয়। এই শ্রেণীই বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা ভোগ করে। ল্যাস্কি বলেছেন: “Political equality; therefore, is never real unless it is accompained by virtual economic equality; political power, otherwise is bound to be the handmaid of economic power.” এর ফলে সাম্যের আদর্শ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের মতো সমাজতান্ত্রিক দেশগুলিতেই আর্থনীতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ল্যাস্কির অভিমত: ল্যাস্কি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে আর্থনীতিক সাম্যের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তাঁর মতানুসারে আর্থনীতিক সাম্য হল একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। মনুষ্যত্বের বিকাশের ক্ষেত্রে অসাম্যের অস্তিত্ব ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও অসাম্যের সৃষ্টি করে। আর্থনীতিক ক্ষেত্রে সাম্য না থাকলে রাজনীতিক এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাম্য থাকতে পারে না।
বার্কারের অভিমত: বার্কার তাঁর Principles of Social and Political Theory শীর্ষক গ্রন্থে আর্থনীতিক সাম্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তাঁর মতানুসারে আর্থনীতিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে এবং এই সমস্ত বিষয়ে সমবণ্টনের নীতি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে দুর্গম পথে এগোতে হয়। বার্কারের মতে সমস্যাটি দ্বিবিধ। এ হল অংশত একটি পদমর্যাদার বিষয় এবং অংশত সম্পত্তি ও আয়ের বিষয়। তিনি বলেছেন: “That problem may be said to be two-fold. It is partly a matter of status; it is partly a matter of property and income.” সম্পত্তি ও আয় বণ্টনের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্র কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগে মালিকানা ও মর্যাদার ক্ষেত্রে আর্থনীতিক সাম্য সৃষ্টি করে সম-নাগরিকতার আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে; নচেৎ আইনানুগ ব্যক্তির মৌল স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে না। আইনগত সাম্য সৃষ্টির আগে আয়, সম্পত্তি ও মর্যাদার ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা দরকার। বার্কার বলেছেন: “The original and basic equality of the simple legal person…is itself imperfect, and will remain imperfect, until some further equalization both of economic status and of economic possessions has made equal citizenship a fact….”
আর্থনীতিক সাম্য আইনগত সাম্যের আপেক্ষিক: বার্কারের মতানুসারে আর্থনীতিক সাম্য হল আইনগত সাম্যের আপেক্ষিক। তা ছাড়া এই সাম্য আইনগত সাম্যের থেকেও বড় ও মৌলিক কিছুর আপেক্ষিক। এ হল এক সর্বোচ্চ মূল্যবোধের আপেক্ষিক। এই মূল্যবোধ ব্যক্তি মানুষের সম্ভাবনাসমূহের বিকাশের মধ্যেই বর্তমান। আর্থনীতিক সাম্য এই মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার। বার্কার বলেছেন: “Economic equality… is relative to legal equality…It is relative to, and must square with, that supreme value, consisting in the development of the capacities of personality, from which the whole principle of equality….is derived.” বার্কারের অভিমত অনুসারে সম-নাগরিক মর্যাদা সৃষ্টির স্বার্থে সর্বাত্মক আর্থনীতিক সাম্য প্রতিষ্ঠা অনাবশ্যক। সমনাগরিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে আর্থনীতিক সাম্য সম্পূর্ণ বা চরম সাম্য নয়। এ হল আইনগত সাম্যের মর্যাদার প্রয়োজনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। বার্কার বলেছেন: “From the point of view of equal citizenship, the economic equality re quired is not a total or absolute equality; it is that amount of equality….which is relative to and necessary for the status of full legal equality in the system of State.”
বার্কার সর্বাত্মক আর্থনীতিক সাম্যের বিরোধী: বার্কার নৈতিক দিক থেকেও সর্বাত্মক বা সার্বজনীন আর্থনীতিক সাম্যের বিরোধিতা করেছেন। সার্বজনীন আর্থনীতিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যক্তিবর্গ আত্মিক বিচারে অধিকতর দরিদ্র হবে। সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের বিলুপ্তি ঘটবে। জীবনধারার গতিশীল প্রক্রিয়ার অবসান ঘটবে। অথচ শ্রেষ্ঠ সমাজের জন্য অপরিহার্য শর্ত হল এই গতিশীল প্রক্রিয়া। এই উৎকৃষ্ট সমাজে ব্যক্তি মানুষের সর্বোত্তম বিকাশ ঘটতে পারে। বার্কার বলেছেন: “Individually we should all be spiritually poorer…Socially, we should lose the diversity and the dynamic process of movement which are necessary conditions of the best society in which each of us can be at his best.” বার্কারের মতানুসারে আর্থনীতিক সাম্যের নিশ্চল ও গতিহীন সমাজে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের ব্যক্তিত্বের সম্ভাবনাসমূহের সম্ভবপর সর্বাধিক বিকাশ সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন: “A state and immobile society of economic equality is not the environment in which the greatest number of persons can achieve the greatest possible development of the capacities of personality.”
উপসংহার: বার্কার আর্থনীতিক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগ-সঞ্জাত সম্পত্তিগত বৈষম্যকে সমর্থন করেছেন। তাঁর মতানুসারে সম্পদ উপার্জনের উদ্যোগ ব্যক্তিত্বের গুণাবলী বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এরই ভিত্তিতে ব্যক্তির গুণাবলীর পরিমাপ করা সম্ভব। ব্যক্তিগত উদ্যোগের মাধ্যমে যে সম্পদ ও সম্পত্তি উপার্জিত হয় এবং তার ভিত্তিতে যে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়, বার্কার নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমর্থন করেছেন। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগ ছাড়া অন্য কোন উপায়ে অর্জিত সম্পদ-সম্পত্তির ক্ষেত্রে বৈষম্যকে তিনি নৈতিক দিক থেকে সমর্থন করেননি। তাঁর মতানুসারে এই বৈষম্য দূর করা দরকার এবং তা সম্ভব। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে অর্জিত সম্পদ-সম্পত্তিজনিত অসাম্যের অবসান সম্ভব। আর্থনীতিক সাম্য প্রসঙ্গে বার্কারের অভিমত হল: “The true policy of equality in the economic field is thus the correction of inequality, so far as such correction is demanded by the cause of legal equality, and so far as it is justified, and even demanded, by the action of factors other than effort in producing inequality in the distribution of means.”
(৩) আইনগত সাম্য
আইনগত সাম্যের প্রকৃতি: আইনের দৃষ্টিতে সাম্য বা সমানাধিকার স্বীকৃত হলে আইনগত সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা যায়। আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান এবং সকলের প্রতি আইন সমানভাবে প্রযোজ্য, এই হল আইনগত সাম্যের মর্মকথা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সকল নাগরিক আইনগত সমান সুযোগ-সুবিধা ও অভিন্ন অধিকার ভোগ করতে পারবে। বস্তুত পৌর, সামাজিক, রাজনীতিক ও আর্থনীতিক সাম্য বিধিবদ্ধ রূপ লাভ করে আইনগত সাম্য হিসাবে পরিগণিত হয়। তা ছাড়া উপরি উল্লিখিত সাম্যসমূহ বাস্তবে কার্যকর হলে স্বাভাবিকভাবেই আইনগত সাম্য বাস্তবে রূপায়িত হয়।
আইনগত সাম্যের ধারণা: আইনগত সামর্থ্যের ক্ষেত্রে সাম্যকে আইনগত সাম্য বলা হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে আইনগত সাম্য বলতে সাধারণভাবে সকলের অভিন্ন আইনগত মর্যাদাকে বোঝান হয়। আইনানুগ প্রত্যেক ব্যক্তি আইনগত সামর্থ্যের বিচারে অন্য সকলের সমান। এ হল আইনগত সাম্যের ধারণা। অর্থাৎ আইনগত সাম্যের ধারণা হল আইনসঙ্গত সমমর্যাদা ও সুযোগের ধারণা।
বার্কারের অভিমত: বার্কারের অভিমত অনুসারে আইনগত সাম্য বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারণ নারী-পুরুষ, শ্রেণী, ধর্ম নির্বিশেষে এখন আইনের কাছে সকলেই সমমর্যাদাযুক্ত। অর্থাৎ সকলেরই আইনগত ব্যক্তিত্ব সমান। বার্কার বলেছেন: “Generally however, the principle of legal equality may now be said to have triumphed. Legal capacity has ceased to be a matter of degrees, some higher and some lower; all alike, irrespective of class, or sex, or confession, are now equal persons under the law of the land, and all now enjoy, at any rate in form, an equal degree of legal personality.” তবে বার্কার সঙ্গে সঙ্গে এও বলেছেন যে, আইনের ক্ষেত্রে সাম্যের অভাব এখনও আছে। তাঁর মতানুসারে আইনগত সমানাধিকারের অস্তিত্ব শেষ কথা নয়। সংশ্লিষ্ট অধিকারকে কার্যকর করা দরকার। তারজন্য সমান সুযোগ ও ক্ষমতা থাকা দরকার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অসাম্য থাকতে পারে। সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আর্থনীতিক সামর্থ্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই কারণে বাস্তবে আদালতের কাজকর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে অসাম্যের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়; যদিও আইনগত সাম্য বর্তমান থাকে। বার্কার বলেছেন: “Even so, there is still some measure of legal inequality. All may possess equal rights, but all have not an equal power of vindicating rights, so long as the vindication demands expenditure, and so long as some are more able than others to meet the expenditure demanded.” এই কারণের জন্য আইনগত সাম্যের স্বীকৃতির সঙ্গে সঙ্গে তার বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল অবস্থা গড়ে তোলা আবশ্যক।
(8) শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সাম্য
শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সাম্যের প্রকৃতি: আইনগত সাম্যের ধারণাকে শিক্ষা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক বার্কারের অভিমত অনুসারে রাষ্ট্র বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষাকে সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। ন্যূনতম শিক্ষাগত অধিকারকে সকলের ক্ষেত্রে স্বীকার করা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার অধিকারও সম্প্রসারিত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে এই অধিকার ভোগ উন্নত গুণগত মানের প্রমাণসাপেক্ষ। তবে এখনও শিক্ষার ক্ষেত্রে অসাম্যের অবসান ঘটেনি। সমাজে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যবধান এখনও বর্তমান। সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ব্যবধান পরিলক্ষিত হয়। বার্কারের মতানুসারে এই ব্যবধান দূর করা যায়। তার জন্য শিক্ষার সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধাকে সম্প্রসারিত করতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে ন্যূনতম শিক্ষার মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে। অধ্যাপক বার্কার অভিন্ন শিক্ষা এবং একই ধরনের সাংস্কৃতিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বিরোধিতা করেছেন। কারণ ব্যক্তিবর্গের সামর্থ্য ও প্রকৃতির মধ্যে পার্থক্য বর্তমান। ব্যক্তি-মানুষের গুণগত উৎকর্ষের এই বৈচিত্র্যকে অগ্রাহ্য করা যায় না। বস্তুত বার্কার শিক্ষা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে চরম সাম্যকে স্বীকার করেনি।
(৫) স্বাভাবিক সাম্য
স্বাভাবিক সাম্যের প্রকৃতি: জন্মগত ভাবে সকল মানুষ সমান। তাই সমানাধিকার সহজাত। এই হল স্বাভাবিক সাম্যের মূল কথা। ফরাসী দার্শনিক রুশোর লেখায় এবং আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণায় স্বাভাবিক সাম্যের আদর্শ মূর্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু স্বাভাবিক সাম্যের ধারণাকে বর্তমানে বড় একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কারণ শক্তি-সামর্থ্য, বুদ্ধিবৃত্তি, গুণগত যোগ্যতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে মানুষে মানুষে জন্মগত পার্থক্য রয়েছে।