কাব্য প্রসঙ্গে ইমেজ কথাটি প্রায়ই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাংলায় একে কেউ বলেন বাকপ্রতিমা, কিন্তু চিত্রকল্পের ব্যবহারই বহুল প্রচলিত। ইমেজের সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞাটি হল। শব্দচিত্র। ‘A picture made out of words.’ একথা সত্য যে, সংগীত জাতীয় কবিতা ছাড়া অন্যান্য কবিতা সামগ্রিকভাবে একটা চিত্রমাত্র হতে পারে। যেখানে চিত্র হয় না, সেখানেও কবিতার মধ্যে এক বা একাধিক চিত্র গচ্ছিত থাকে। আসলে প্রত্যেক ভাষার শব্দাবলীরই একটা সহজাত চিত্ৰধৰ্ম আছে। আর সেই চিত্রধর্মের নিপুণ প্রয়োগ ঘটিয়েই কবিরা কবিতার মধ্যে ছবি ফলিয়ে থাকেন। বিষ্ণু দে-র কবি-জীবনে ভাষা দিয়ে ছবি লেখার বিরাম কখনও ছিল না। তাঁর অক্লান্ত চর্চায় কবিতার মধ্যে অফুরন্ত চিত্র সজ্জার পরিচয় পাওয়া যায়।
রং-তুলি নিয়ে ছবি আঁকতে না বসলেও এ পর্যায়ে বিষ্ণু দে-র হাতে ছিল প্রচুর শব্দ। সেই শব্দগুলির সদ্ব্যবহার করেই তিনি ছবি তৈরি করেছেন। বর্ণনা কুশল কবি রবীন্দ্রনাথের কাব্যাদর্শের অনুরূপ ছবির অভাব কখনও দেখা যায়নি বিষ্ণু দে-র কাব্যে। কিন্তু এ জাতীয় চিত্রধর্মী বর্ণনার কোনো ব্যঞ্জনা সেই অর্থে লক্ষ্য করা যায় না। কোনো দৃশ্যান্তরের রহস্যও এদের মধ্যে ছড়িয়ে নেই। শুধুমাত্র চিত্র ছাড়া আর কিছুই হয়ে উঠতে পারেনি এগুলি। তাই এই শব্দচিত্রগুলিকে চিত্রকল্প বলা বোধহয় ঠিক হবে না। কারণ এগুলিকে যদি চিত্রকল্পের দৃষ্টান্ত বলতে হয়, তবে সব যুগের সব কবির কাব্যের ছবির বর্ণনাকেই চিত্রকল্প বলে স্বীকার করে নিতে হয়। চিত্রকল্পের বিষয়টি তাহলে শুধু চিত্রধর্মী বর্ণনার নামান্তর হয়ে দাঁড়ায়। তাই শুধুমাত্র চিত্র বা শব্দচিত্রকেই চিত্রকল্প বলা যাবে না, কারণ চিত্রকল্পের বিশেষ চেহারা ও চরিত্র সেখানে ধরা পড়ে না। চিত্রকল্পের সংজ্ঞাটি সেক্ষেত্রে অনেক বেশি ব্যাপক।
বিষ্ণু দে-র কাব্যে এমন অনেক চিত্রই রয়েছে যেগুলি শুধুমাত্র বাহ্যিক দৃশ্য রূপের মধ্যেই সমাপ্ত হয়নি। দৃশ্যের মধ্যে তা একটা গভীরতর অর্থ বা ভাব ফুটিয়ে তুলেছে। কিছু কিছু বিষয় আবার দৃশ্যরূপকে ছাড়িয়ে, চিত্রের আবহে এক-একটা ভাবের মায়াজাল রচনা করেছে।
অন্তর্নিহিত এই ভাবব্যঞ্জনাটি আছে বলেই চিত্রটি সেখানে শুধু চিত্র হয়েই থাকেনি, অতিরিক্ত আরও কিছু অর্থাৎ চিত্রমায়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ একটি ভাবকে আবহরূপে সৃষ্টি করে চিত্র যদি মূর্ত হয়ে ওঠে, তবে সেটি চিত্রকল্প নাম পাওয়ার উপযোগী হয়। সুতরাং চিত্রমায়ার দৃষ্টান্ত চিত্রকল্পেও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে। কারণ চিত্রমায়ায় বাচ্যের অতিরিক্ত ব্যঞ্জনা রয়েছে। আর বাচ্যের অতিরিক্ত ব্যঞ্জনা জ্ঞাপিত হলেই কাব্যের কাব্যত্ব প্রকাশিত হয়ে ওঠে।
কোনো কোনো মতে কাব্যে প্রতীকের প্রয়োগকেই চিত্রকল্প বলে। কিন্তু শব্দমাত্রই ভাব বা বস্তুর প্রতীক এবং সেই অর্থে শব্দ চিত্র মানেই প্রতীক চিত্র। তবে চিত্রকল্পের উপাদান হিসাবে যে প্রতীকের কথা বলা হয়, সেগুলি কিন্তু সাধারণ প্রতীক নয়। একটি ভাবকে কাব্যের মধ্যে প্রকাশ করতে গিয়ে বিশেষভাবে কোনো প্রতীকের ব্যবহার যখন হয়, সেখানেই প্রতীককে চিত্রকল্পরূপে গ্রহণ করার বিষয়টি গণ্য হয়। বিষ্ণু দে-র কাব্যবৃত্ত পরিক্রমায় নির্বিশেষ প্রতীকের এই চিত্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। রবীন্দ্র ভাবনা, জীবন দর্শন, মানবতার অবক্ষয়জনিত দুর্যোগ ও অমঙ্গলের কালো রাত্রির নিরবচ্ছিন্ন চিন্তা থেকে তাকে অন্য একটি ভুবন নির্মাণের আশা ও আশ্রয় দিয়েছিল। তাই প্রথম কাব্য ‘মর্মবাণী’ থেকেই কাব্যের শরীর নির্মাণে, রবীন্দ্র ভাব ভাষাকে প্রতীকায়িত করে চিত্রকল্প রচনার নিপুণ চমৎকারিত্ব বিষ্ণু দে-র কবিসত্তায় লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হয়ে রয়েছে।
চিত্রকরের চিত্রপটে আঁকা ছবির মতো রূপদক্ষ ভাস্বর বিষ্ণু দে রবীন্দ্র অনুষঙ্গকে আশ্রয় করে সম্পূর্ণ নতুন রীতির কাব্যকলা নির্মাণে প্রয়াসী হয়েছিলেন। ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ কাব্যগ্রন্থটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এ কাব্যের ‘দামিনী’ কবিতাটির রসবস্তু নির্মাণে রবীন্দ্র সৃষ্ট উপন্যাস ‘চতুরঙ্গে’র স্থান-কাল-প্রতিবেশের অনুপুঙ্খ ব্যবহার করেছেন বিষ্ণু দে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই রবীন্দ্র চিত্রকল্পের এই নিপুণ ব্যবহার নিছক অনুকরণ মাত্র হয়ে থাকেনি। প্রতীকায়নের প্রবণতাই সেখানে বড়ো হয়ে উঠেছে। ‘দামিনী’ কবিতাটির কেন্দ্রীয় বিষয় রবীন্দ্র উপন্যাস ‘চতুরঙ্গে’র নায়িকার জীবন অন্বেষণের আকুলতা। দামিনীর জীবন পিপাসাকে কবি বিষ্ণু দে তার পরিশীলিত চিত্ত নিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন। জীবনব্যাপী অতৃপ্ত নারী সত্তার এই প্রবল আর্তি কবিকে মনে করিয়ে দিয়েছিল, আমরা প্রত্যেকেই এক অতলস্পর্শ বিরহজ্বালায় কাতর। সেই কারণেই জীবনের প্রেমময় পূর্ণচন্দ্রের প্রতি আমাদের এত তীব্র আকুলতা। মৃত্যুময় উপত্যকায় দাঁড়িয়ে একান্ত প্রিয়জনের আঘাতের স্মৃতি সমস্ত জীবন ধরে বয়ে চলেছিল দামিনী। আর শ্রীবিলাসের প্রতিদানহীন ভালোবাসাকে জন্মান্তরে পরিপূর্ণভাবে অনুভব করবার সাধ বুকে নিয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। দামিনীর প্রেমে রয়েছে শ্রীবিলাসের সীমাবদ্ধ ভালোবাসায় নিমজ্জনের আকুতি কিন্তু বিষ্ণু দে ব্যক্তি প্রেমের সীমাবদ্ধতায় আপন সত্তাকে বদ্ধ রাখতে চাননি। ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বপ্রেমের উদার প্রাঙ্গণে।
‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাসটির শেষে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “যেদিন মাঘের পূর্ণিমা ফাল্গুনে পড়িল, জোয়ারে ভরা অশ্রুর বেদনায় সমস্ত সমুদ্র ফুলিয়া ফুলিয়া উঠিতে লাগিল, যেদিন দামিনী আমার পায়ের ধুলা লইয়া বলিল, সাধ মিটিল না। জন্মান্তরে আবার যেন তোমাকে পাই।” রবীন্দ্রনাথের এই ভাব ভাষা অনুপুঙ্খ অবিকৃত রেখে বিষ্ণু দে তার ‘দামিনী’ কবিতায় লিখেছেন,
যেদিন সমুদ্র ফুলে ফুলে হল উন্মুখর মাঘী পূর্ণিমায়
সেদিন দামিনী বুঝি বলেছিল-মিটিল না সাধ।
পুনর্জন্ম চেয়েছিল জীবনের পূর্ণচন্দ্রে মৃত্যুর সীমায়
কবিতাটির তিনটি স্তরে কবি বিষ্ণু দে জীবন অন্বেষণের সম্পূর্ণ অন্যরকম ব্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রথম স্তবকে দামিনীর অন্বিষ্ট যা অর্থাৎ জীবনের পূর্ণচন্দ্রকে দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় স্তরে এই দামিনীকে আশ্রয় করেই কবি বিষ্ণু দে পৌঁছাতে চেয়েছেন প্রেমের পূর্ণ শুদ্ধ আশ্রয় ভূমিতে। তৃতীয় স্তবকে দামিনীই হয়ে উঠেছে কবি চেতনায় পরিপূর্ণ প্রেমের প্রতিমা। যার শরীর মনে ডুবে মরতে চেয়েছেন কবি। কবিতাটিতে চিত্রকল্পের ব্যঞ্জনাও এনেছেন কবি তিনটি বিষয়ে। প্রথমত, সমুদ্রের চিত্রকল্প দ্বিতীয়ত, পূর্ণিমার চিত্রকল্প এবং তৃতীয়ত, মিলনের আকুতিকে শরীরী চেতনার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে নির্বিশেষ প্রেমের শীর্ষবিন্দু স্পর্শ করার চিত্রকল্প। এছাড়াও রয়েছে ঝুলন পূর্ণিমা, রাস বা কোজাগর-এর মতো চিত্রকল্প যা দ্বৈতজীবন অথবা যুগল সম্মেলনের আভাস নিয়ে আসে পাঠকের কাছে।
সমুদ্র ও পূর্ণিমার চিত্র দিয়েই বিষ্ণু দে কবিতাটি শুরু করেছেন। এই সমুদ্র দামিনী ও কবির জীবনে প্রেমের অনুষঙ্গ যতবার এনেছে ততবারই এনেছে বেদনার অনুষঙ্গ। এই সমুদ্র প্রেম-বিরহ, আশা-নিরাশার প্রতীক হয়ে উঠেছে। বারোটি ছত্রের সমগ্র কবিতায় ‘সমুদ্রে’র ভাবব্যঞ্জনটি এসেছে ছ’বার। কখনও সেখানে পূর্ণিমা রাত্রে প্রেমের জোয়ার কখনও বা বেদনার গাঢ় তরঙ্গের লীলা। কবি ও দামিনী উভয়েই সেই সমুদ্রের তীরে উপবেশিত। কবির কাছে সমুদ্রের প্রতীকী ব্যঞ্জনাটি দামিনীর দেহ সমুদ্রের রূপ ধরে এসেছে। তিন চরণের তৃতীয় স্তবকটিতে কবি ফেলে আসা জীবনের প্রবল অতৃপ্তির কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, দামিনীর সমুদ্ররূপী প্রেমের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলার আকাঙ্ক্ষার কথা। কবি বলেছেন,
“আমারও মেটে না সাধ, তোমার সমুদ্রে যেন মরি
বেঁচে মরি দীর্ঘ বহু আন্দোলিত দিবস যামিনী
দামিনী, সমুদ্রে দীপ্র তোমার শরীরে।”
এই বেঁচে মরা’র মধ্যে অনেক কবি সমালোচকই প্লেটোনিক লাভ’-এর ‘অনুষঙ্গ’ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু বিষ্ণু দে নিজে কিন্তু এখানে কোনো শিকড় ছেঁড়া ভালোবাসার কথা বলেননি। দেহের সীমাতে দাঁড়িয়েই মনের মাধুরীকে স্পর্শ করতে চেয়েছেন কবি। এই আকাঙ্ক্ষায় শরীরী উত্তাপ বা উষ্ণতা খুব স্বাভাবিকভাবেই ছড়িয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে ‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ দামিনী সম্পর্কে যা লিখেছিলেন সে কথাটি মনে পড়ে, “সে নারী মৃত্যুর কেহ নয়। সে জীবন রসের রসিক। বসন্তের পুষ্প বনের মতো লাবণ্য গন্ধ হিল্লোলে সে কেবলই ভরপুর হইয়া উঠিতেছে, সে কিছুই ফেলিতে চায় না। সে সন্ন্যাসীকে ঘরে স্থান দিতে নারাজ।” অর্থাৎ দামিনী অনেক বেশি আত্মসচেতন এবং শরীরী দাবীকে সে উপেক্ষা করতে চায় না। কবি বিষ্ণু দে-ও কবিতার অন্তিমে এমন ভাবনার কথাই বলতে চেয়েছেন। ইন্দ্ৰিয়জ অনুভূতি যে এখানে অনেকখানি ক্রিয়াশীল সেকথা বলা যায়।
সমুদ্রের পাশাপাশি পূর্ণিমার চিত্রকল্পও কবিতাটিতে নানা ভাবব্যঞ্জনার সৃষ্টি করেছে। আসলে দামিনী ও কবি বিষ্ণু দে দুজনেই জীবন রসের রসিক। দুজনের মধ্যেই রয়েছে প্রেমের অতৃপ্তি জনিত যন্ত্রণা। আর ঠিক সেই কারণেই দুজনেরই প্রতীক পূর্ণিমার চিত্রকল্প। ঝুলন পূর্ণিমা বৈশাখী কিংবা রাসপূর্ণিমা, কোজাগর সর্বত্রই রয়েছে রাধাকৃষ্ণের দ্বৈত মিলন কাহিনি। মাঘী, ফাল্গুনী, বৈশাখী, কোজাগরী সমস্ত পূর্ণিমাতেই যুবক-যুবতীর প্রেমানুভূতি ও মিলন আনন্দ চারদিক রাঙিয়ে রাখে। কিন্তু মিলনের পরে, যুগল সম্মেলনের পরেও তো মাথুরের অন্তহীন কান্নার সুর বেজে ওঠে। প্রাপনীয়কে অপ্রাপনীয়তার পরপারে থেকে যেতে হলে যে যন্ত্রণার সুর বেজে ওঠে তা প্রেমেরই অন্য এক প্রতিনাম। বিষ্ণু দে বুঝেছিলেন প্রেম ও অপ্রেমের যুগলবন্দী ভালোবাসাই মানুষকে পূর্ণতার উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। তাই পূর্ণিমার পাশাপাশি তিনি অমাবস্যার নিবিড় অন্ধকারের চিত্রকল্পও এনেছেন কবিতাটিতে। প্রেমের উৎসবের অনুষঙ্গ যেমন ‘পূর্ণিমার নিলীমা’কে অগাধ বলে জেনেছেন, তেমনি অপ্রেমের অনুষঙ্গটিকে দামিনীর সঙ্গে সমীকৃত করে বলেছেন,
“আমার জীবনে তুমি বুঝি প্রত্যহই ঝুলন পূর্ণিমা
মাঘী বা ফাল্গুনী কিংবা বৈশাখী রাস বা কোজাগরী,
এমনকি অমাবস্যা নিরাকার তোমারই প্রতিমা।”
সনেট কবিতায়ও বিষ্ণু দে বলেছেন,
“সেই দূরে যাও, ওঠে বিচ্ছেদের অতল অপার
বঙ্গোপসাগরে ঢেউ, যেন নিত্য মাঘী পূর্ণিমার।”
এইভাবে বিষ্ণু দে রাবীন্দ্রিক শব্দবাক্য ভাব প্রতিবেশের অনুষঙ্গকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে কবিতাটিকে করে তুলেছেন প্রতীক আশ্রিত একটি প্রতিমা। দামিনীর দেহ-মনকে প্রেম সমুদ্রের অতল অপার রত্নভাণ্ডার করে তুলেছেন কবি। সেখান থেকে জীবন সত্যের মুক্তাবিন্দু হয়ে কবি চেতনায় উঠে এসেছে প্রেম। আর দামিনীর প্রেমহীন বঞ্চিত জীবন অভিজ্ঞতা বিষ্ণু দে-কে দিয়েছে ‘আমি’-‘তুমি’র সীমায়িত পরিসর ছেড়ে বহুব্যাপ্ত ‘আমরা’র প্রতীকী ব্যঞ্জনা। কবিতার অন্তর্নিহিত এই ভাব মাধুর্যকে ধরে রাখবার জন্যই ‘আমি’, ‘তুমি’, ‘শরীর’, এবং ‘সমুদ্র এই চারটি শব্দচিত্রের সার্থক উপস্থাপনা। মাঘী পূর্ণিমার উন্মুখর সমুদ্র, দামিনী এবং দামিনীর প্রেমের সমুদ্র এভাবেই এক হয়ে গেছে কবিতাটিতে। সীমায়িত প্রেমের এই বহুব্যপ্ত অভিজ্ঞতা বিষ্ণু দের ছিল বলেই কবি বলতে পেরেছিলেন,
“শ্রাবণে তোমার স্মৃতি, মাঘে থাকো চেতনায় মিলে
তোমার সত্তার সত্য, তোমাতে বা তোমাতে আমাতে
শেষ নয়, সে বরং ব্যপ্ত হয়ে শব্দের তরঙ্গ যেন।”