প্রশ্নোধৃত উক্তিটি ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই রচনায় লেখক স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন যে, শিকার-করা হাঙরটিকে দড়ি ধরে টেনে তােলার সময় বিকট এক ধপাৎ শব্দে সেটি জাহাজের ওপর আছড়ে পড়েছিল। এরপর একজন সাবধানী যাত্রী হাঙরটির মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফাতনা হিসেবে ব্যবহার করা কড়িকাঠখানা দিয়ে হাঙরটির মাথায় আঘাত করতে অনুরােধ করলেন জাহাজের অপর এক যাত্রী ফৌজি ভদ্রলােককে। যাইহােক, গায়ে কাপড়ে রক্তমাখা ফৌজি লােকটি তখন প্রবল উৎসাহের সঙ্গে হাঙরের মাথায় আঘাত করতে থাকেন। মহিলা যাত্রীরা এই নিষ্ঠুর দৃশ্য দেখে আর্তনাদ করতে শুরু করলেও সেই স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকেন। পরবর্তী বীভৎস কাণ্ডকারখানার বিবরণ সহৃদয় লেখক আর বিস্তৃতভাবে প্রকাশ না করে নিছক তথ্যের আকারে জানিয়ে দেন যে, হাঙরের পেট চেরা হলে চারিদিকে রক্তের নদী বয়ে যেতে থাকে। হাঙরটি খণ্ড-বিখণ্ড দেহ, ছিন্ন-অন্ত্র এবং ছিন্ন হৃৎপিণ্ড হয়েও দীর্ঘক্ষণ কাঁপতে থাকে। এরপর তার পেট থেকে হাড়, পেশি, চামড়া, মাংস, কাঠের টুকরাে ইত্যাদি রাশি রাশি বেরােতে থাকে। এসব বীভৎস দৃশ্য দেখার জন্যই লেখকের সেদিনের খাওয়ার ইচ্ছে একেবারেই চলে গিয়েছিল। সারাদিন ধরে সব জিনিসের মধ্যেই তিনি হাঙরের গন্ধ পাচ্ছিলেন। এভাবেই হাঙর-শিকারের ঘটনাটি সম্পূর্ণ হয়েছিল।
স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় দেখা যায়, থ্যাবড়ামুখাে হাঙরটি বড়শিতে বিদ্ধ হলে জাহাজের উপরে থাকা ছেলে, বুড়াে, জোয়ান অর্থাৎ সব বয়সের লােকেরাই কাছি ধরে জোরে টানতে থাকে। হাঙরের মাথা জল থেকে উঠতেই তাদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। এরপর হাঙরের ভয়ংকর মুখ দেখে সবাই শিউরে ওঠে। দেখা যায় যে, হাঙরের ঠোঁট এফোড় ওফোড় করে বড়শি বিধেছে। জাহাজটির নীচে অপেক্ষারত পাহারাদার আরব পুলিশদের যাত্রীদের তরফ থেকে অনুরােধ করা হয়, তারা যেন হাঙরের ল্যাজের ঝাপটা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে হাঙরের ল্যাজের দিকে একটা দড়ি বেঁধে দেয়। অন্যথায়, বিশাল ওজনের হাঙরকে একটি দড়ির সাহায্যে টেনে তােলা রীতিমতাে অসম্ভব। পুনরায় টানা শুরু হলে দেখা যায়, হাঙরের পেটের নীচে থেকে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে আসছে। একজন যাত্রীর নির্দেশে সেটা কেটে জলে ফেলে দেওয়া হয় ভার কমানাের জন্য। এর ফলে সৃষ্টি হয় রক্তের ফোয়ারা। কাপড়ের মায়া ছেড়ে রক্তমাখা অবস্থাতেই হাঙরটিকে অতঃপর জাহাজের ওপরে তােলার কথা বলা হয়। সঙ্গে সতর্ক থাকতে বলা হয়, হাঙরের কামড় আর ল্যাজের ঝাপটা থেকে। এরপরই জাহাজের উপরে এনে ফেলা হয় হাঙরটিকে।
স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। ভগীরথ ছিলেন ইক্ষাকুবংশীয় সগর রাজার অধস্তন পঞ্চম পুরুষ। কপিলমুনির শাপে ভস্মীভূত সগর রাজার যাট হাজার সন্তানকে উদ্ধারের জন্য ভগীরথ কঠোর তপস্যা করেন। পরে ব্রয়ার কথায় ভগীরথ তপস্যা করে মহাদেবকে তুষ্ট করে তাঁকে তাঁর মস্তকে গঙ্গা ধারণে রাজি করান এবং সেখান থেকে সাতটি ধারায় গঙ্গা মর্ত্যভূমিতে নেমে আসেন। এর মধ্যে একটি প্রবাহ ভগীরথকে অনুসরণ করে বলে তার নাম হয় ভাগীরথী। গঙ্গার স্পর্শে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া সগররাজার ষাট হাজার বংশধর মুক্তিলাভ করে স্বর্গারােহণ করেন।
স্বামী বিবেকানন্দ ভগীরথের এই গঙ্গা আনয়নের ঘটনাকে সম্পূর্ণ অন্য এক ঘটনার সাদৃশ্যে প্রয়ােগ করেছেন। হাঙর শিকারের জন্য অপেক্ষারত জাহাজযাত্রীদের সঙ্গে লেখকও লক্ষ করেছিলেন হাঙরের সামনে আসছে পাইলট ফিশ, অনেকটা গঙ্গার আগে চলা ভগীরথের মতাে। এই পাইলট ফিশ বা আড়কাটী মাছের কাজ হল হাঙরকে শিকার দেখিয়ে দেওয়া। পুরাণের প্রসঙ্গকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করে হাঙরের চলাচলকে এভাবে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছেন লেখক।
স্বামী বিবেকানন্দের পরিব্রাজক গ্রন্থের অন্তর্গত সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটিতে দেখা যায়, লেখকের জাহাজ ইউরােপ যাবার জন্য রেড সি বা লােহিত সাগর পার হয়ে ১৪ জুলাই মিশরের সুয়েজ বন্দরে থেমেছিল মাল নামানাের জন্য। মিশর দেশে তখন ছিল প্লেগ রােগের প্রকোপ। এর ওপরে এশিয়া থেকে আগত যাত্রীরা পাছে প্লেগ রােগের জীবাণু বহন করে আনে—এই আশঙ্কায় জাহাজের কর্মী-যাত্রী এবং সুয়েজ বন্দরের মিশরীয় কর্মীদের মধ্যে ছোঁয়াছুঁয়ির ভয় জাঁকিয়ে বসেছিল। সুয়েজ বন্দরের পর থেকেই যেহেতু ইউরােপের শুরু তাই জাহাজটিকে প্লেগ জীবাণুমুক্ত করে স্বর্গরূপী ইউরােপে প্রবেশ করানাে বাধ্যতামূলক ছিল। প্লেগ রােগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার দশদিনের মধ্যেই রােগের উপসর্গ ফুটে বেরােয়। তাই মিশরীয় কোনাে লােকের সঙ্গে জাহাজের যাত্রী বা খালাসিদের ছোঁয়াছুঁয়ি হলে আবার দশদিন আটক থাকতে হবে যাত্রীদের। সেক্ষেত্রে নেপলস বা মার্সাইতে লােক নামানােও যাবে না। নিয়ম করা হয়েছিল যে, সুয়েজের কুলিরা কিছুতেই লেখকদের জাহাজ স্পর্শ করতে পারবে না। এদিকে জাহাজের মধ্যে সুয়েজ বন্দরে নামানাের মতাে মালপত্র ছিল। ফলে জাহাজের খালাসিরা খুব বিপদে পড়ে যায়। বাধ্য হয়েই মিশরের কুলিদের কাজ তাদেরকে নিজেদের হাতেই তুলে নিতে হয়। ক্রেনে করে তুলে আলগােছে তাদেরকেই জাহাজের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা সুয়েজি নৌকোয় মাল ফেলতে হচ্ছিল। সেই নৌকোই মাল ডাঙায় নিয়ে যাচ্ছিল। পরিস্থিতির চাপে কুলির যাবতীয় কাজ তাদেরকেই করতে হচ্ছিল বলে লেখক সহানুভূতির সঙ্গে জাহাজের খালাসিদেরকে বেচারা বলে সম্বোধন করেছেন।
“ভেবে কূল-কিনারা পাওয়া যায় না।” -কার কোন ভাবনার কথা এখানে বলা হয়েছে?
“ডাকাতি করা তার স্বামী-পুত্রের হকের পেশা। সে তাে মরদের কাজ, গর্বের জিনিস।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তার এই ভাবনার কারণ ব্যাখ্যা করাে।
“এতক্ষণে বােঝে সৌখী ব্যাপারটা।”—মন্তব্যটি আলােচনা করাে।
“ঘুমের অসুবিধা হলেও,” -কার, কী কারণে ঘুমের অসুবিধা হত?
“বুড়ি উঠে বসে!” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বুড়ির উঠে বসার কারণ লেখাে।
“হাতি পাকে পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে।” -বক্তার একথা বলার কারণ প্রসঙ্গসহ আলােচনা করাে।
“এদের কাউকে দেখছি না।” -কে, কাকে কাদের কথা জিজ্ঞাসা করেছে? তাদের সম্পর্কে সৌখীর কোন্ মনােভাবের প্রকাশ দেখা যায়?
“তাদের দেখা যাচ্ছে না কেন?” -সে কথা কেন সৌখীকে সব খুলে বলা যাচ্ছে না?
‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের মাদীন পেশকার কীভাবে চুরি যাওয়া লােটার সন্ধান পেল?
“দারােগা-পুলিশ দেখে বুড়ির বুক কেঁপে ওঠে।” -কেন কেঁপে উঠেছিল বুড়ির বুক?
“এইবার সৌখীর মা ভেঙে পড়ল” -কখন এবং কেন সে ভেঙে পড়ল?
জেল থেকে ফিরে আসার দিন রাত্রে ছেলে সৌখীর সঙ্গে তার মায়ের যে কথােপকথন হয়েছিল, তা ডাকাতের মা ছােটোগল্পে অবলম্বনে লেখাে।
‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।
“কিন্তু আজ যে ব্যাপার অন্য।”—কোন্ দিনটার কথা বলা হয়েছে? সেদিনের অন্য ব্যাপারটির পরিচয় দাও।
“..ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে সে।” -কে ছেলের নামে কলঙ্ক এনেছে? কলঙ্ক শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী?
ডাকাতের মা ছােটোগল্পটির শিল্পসার্থকতা আলােচনা করাে।
সুয়েজখালে: হাঙ্গর শিকার প্রবন্ধটিতে বিবেকানন্দের রচনা-বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় বিবেকানন্দের ভাষাশৈলীর পরিচয় দাও।
হাস্যরসাত্মক রচনা হিসেবে ‘সুয়েজখালে : হাঙ্গার শিকার কতখানি সার্থক?
স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।
সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনা অবলম্বনে বাঘা নামের প্রথম হাঙরটির বর্ণনা দিয়ে জানাও যে কীভাবে তাকে শিকারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল?
থ্যাবড়া নামের হাঙরটিকে কীভাবে শিকার করা হয়েছিল তার বিস্তৃত বিবরণ দাও।
সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় লেখক যে বনিটো মাছের কথা উল্লেখ করেছেন, রচনা অনুসরণে তার বিস্তৃত বিবরণ দাও।
সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনায় হাঙরের পাশে থাকা ছােটো মাছ ও হাঙর-চোষক মাছের বিস্তৃত বিবরণ দাও।
“আমাদের কিন্তু দশদিন হয়ে গেছে—ফাঁড়া কেটে গেছে।” -মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
“সেকেন্ড কেলাসের লােকগুলির বড়ােই উৎসাহ।” হাঙর শিকার প্রবন্ধটি অবলম্বনে এই উৎসাহের পরিচয় দিয়ে এদের চরিত্রের যে যে দিকগুলি রচনাটিতে প্রকাশ পেয়েছে তার বিবরণ দাও।
“রক্ত-মাখা গায়-কাপড়ে ফৌজি যাত্রী কড়িকাঠ উঠিয়ে দুম দুম দিতে লাগলাে হাঙ্গরের মাথায়” -উদ্ধৃত অংশটির মধ্য দিয়ে ফৌজি চরিত্রের কোন দিক প্রতিফলিত হয়েছে? এর পরবর্তী অংশের বর্ণনা ও প্রতিক্রিয়া আলােচ্য পাঠ্যাংশে যেভাবে ফুটে উঠেছে তা লেখাে।
“কিন্তু যখন ওসব কিছুই হল না” -এখানে কী না হওয়ার কথা বলা হয়েছে তা সপ্রসঙ্গ আলােচনা করাে।