বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত চট্টগ্রাম জেলার নয়াপাড়া গ্রামে ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি দার্শনিক-বৈজ্ঞানিক প্রিয়দারঞ্জন রায়ের জন্ম হয়। গ্রামের স্কুল চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, তারপর চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চশিক্ষার প্রাথমিক পর্ব শেষ করে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তে আসেন। সেখানেই তিনি শিক্ষক হিসেবে জগদীশচন্দ্র বসু ও প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সান্নিধ্য লাভ করেন। রসায়ন ও পদার্থবিদ্যার অনার্স পরীক্ষায় তিনি সসম্মানে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এ ছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, জার্মান ভাষাতেও তিনি দক্ষ হয়ে ওঠেন। ড. রায়ের গবেষণাগারে প্রিয়দারঞ্জন অজৈব রসায়নে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণাগারের দুর্ঘটনায় তার চোখের বিপুল ক্ষতি সত্ত্বেও তিনি গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার পথ থেকে সরে যাননি। সায়েন্স কলেজে অজৈব রসায়ন বিভাগের পুনর্বিন্যাসের দায়িত্ব পেয়ে প্রিয়দারঞ্জন অচিরেই অজস্র গবেষণায় ব্যাপক সাফল্য পান। প্রফুল্লচন্দ্রের আগ্রহে ও অনুপ্রেরণায় ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিদেশে যান। সুইটজারল্যান্ডের বার্নে বিখ্যাত রসায়নবিদ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ফ্রিৎস এফ্রাইমের গবেষণাগারে, অস্ট্রিয়ার গ্রাজে প্রখ্যাত মাইক্রো কেমিস্ট অধ্যাপক ফ্রেডারিক এমিটের গবেষণাগারে, এ ছাড়াও ইউরােপের নানান গবেষণাগারে তিনি গবেষণা করে দেশে ফেরেন। সাধারণ রসায়ন, অজৈব রসায়ন ও বিশ্লেষণী রসায়ন শাখায় প্রিয়দারঞ্জন রায়ের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের রসায়ন শাখার সভাপতি হন। পরে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য এবং ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সােসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে তিনি বিজ্ঞান কলেজের পালিত অধ্যাপক ও বিশুদ্ধ রসায়নের অধ্যক্ষও ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি Indian Association for the Cultivation of Science -এর অবৈতনিক অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। এ ছাড়াও এশিয়াটিক সােসাইটির সহসভাপতি, ‘সায়েন্স অ্যান্ড কালচার’ পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক ছিলেন প্রিয়দারঞ্জন রায়।
আয়ুবেদ সম্বন্ধে প্রবল আস্থাশীল প্রিয়দারঞ্জন প্রাচীন ভারতে চিকিৎসা সংক্রান্ত বইয়ের সম্পাদনা করেন। দেশীয় ভাষায় বিজ্ঞানপ্রচারে তিনি ছিলেন। এক নিরলস কর্মী। ভারতীয় দর্শনে তার গভীর শ্রদ্ধা ও আস্থা ছিল। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান, জীবন ও দর্শনসংক্রান্ত অজস্র প্রবন্ধ রচনা করেছেন। ভারতবর্ষ, প্রবাসী, নব্যভারত, দেশ প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় তাঁর রচনা ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলায় লেখা তার বইগুলি হল—বিজ্ঞান ও বিশ্বজগৎ, রসায়ন ও সভ্যতা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি, অতিকায় অণুর অভিনব কাহিনি, বিজ্ঞান, দর্শন’ ও ধর্ম প্রভৃতি। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ১১ ডিসেম্বর ৯৪ বছর বয়সে প্রিয়দারঞ্জন রায়ের জীবনাবসান ঘটে।
বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখােপাধ্যায়ের অবদান আলােচনা করাে।
বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের অবদান আলােচনা করাে।
বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে ডা. ইন্দুমাধব মল্লিকের অবদান আলােচনা করাে।
বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে শিশিরকুমার মিত্রের অবদান আলােচনা করাে।
বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলােচনা করাে।
বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে নীলরতন ধরের অবদান আলােচনা করাে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার পরিচয় দাও।
রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য মানুষজনের বিজ্ঞানচর্চার পরিচয় দাও।
বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনা ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলােচনা করাে।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে অক্ষয়কুমার দত্তের অবদান আলােচনা করাে।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর অবদান আলােচনা করাে।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলােচনা করাে |
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জগদানন্দ রায়ের অবদান আলােচনা করাে।