বৃক্ষরূপী জলনির্গম প্রণালী
যে জলনির্গম প্রণালী বা নদী ব্যবস্থায় উপনদীগুলি অতি এলােমেলােভাবে সবদিকে শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তৃত হয় এবং সম্পূর্ণভাবে গাছের ডালপালার মত সজ্জিত দেখায় সেই নদী বিন্যাস বা গােষ্ঠীকে বৃক্ষরূপী নদী নকশা বলে। উদাহরণ—ভূপৃষ্ঠের যেসব অংশ একইপ্রকার শিলার দ্বারা গঠিত অর্থাৎ শিলার ক্ষয়কার্য প্রতিরােধ করার ক্ষমতা একই রকমের, সেইসব স্থানে এইরূপ জলনির্গম প্রণালী গড়ে ওঠে। গােদাবরী নদীর সঙ্গে মঞ্জিরা, পেনগঞ্গা, ওয়েনগঞঙ্গা, ইন্দ্রাবতী প্রভৃতি উপনদী মিলিত হয়ে বৃক্ষরূপী জলনির্গম প্রণালী গড়ে উঠেছে।
উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্য
(১) ক্রমবিকাশ বা বিবর্তনের প্রথম পর্যায়ে অববাহিকা অঞ্চলে কতকগুলি উপসমান্তরাল অনুগামী নদী সৃষ্টি হয়।
(২) অববাহিকার স্থানে স্থানে বৃষ্টির জলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নালা বা খাত সৃষ্টি হয়।
(৩) ওই সমস্ত খাত উৎস মুখের দিকে এলােমেলােভাবে বিস্তৃত হতে থাকে এবং উপনদী রূপে প্রধান নদী বা অনুগামী নদীর সঙ্গে সূক্ষ্ম কোণে (অবশ্যই 90° অপেক্ষা অনেক কম মানের কোণে) মিলিত হয়।
(৪) উপনদীগুলির বিস্তার নানা দিকে ঘটায় নদী নকশা বৃক্ষের মতাে রূপ লাভ করে।
বৃক্ষরূপী জলনির্গম প্রণালীর উৎপত্তিতে নিয়ন্ত্রণকারী উপাদানসমূহ
(১) মৃদুটাল যুক্ত সমতল ভূপৃষ্ঠ এধরনের নদী নকশা গঠনের সহায়ক হয়।
(২) অনুভূমিক বা প্রায় অনুভূমিক একনত গঠনের সমধর্মী পাললিক শিলা কিংবা ফাটহীন নিরেট সুবিস্তৃত আগ্নেয় শিলার ওপর নদীগুলি ডালপালার মত বিস্তৃত হয়।
(৩) শিলার গ্রথন, প্রবেশ্যতা, কাঠিন্য ও ক্ষয় প্রতিরােধ ক্ষমতা সর্বত্র একই রকম হয়।
(৪) এরূপ জলনির্গম ব্যবস্থায় বাস্তবিকই শিলার গঠনগত নিয়ন্ত্রণ উল্লেখযােগ্যভাবে কম থাকে।
এমনকি, ওপরের শিলাস্তরকে সম্পূর্ণ ক্ষয় করে কখনাে কখনাে নদী নীচের ভাঁজ গঠন বা জটিল রূপান্তরিত শিলার ওপর অধিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও নিজের পূর্বেকার প্রবাহ বজায় রাখে।
পেডিপ্লেন কীভাবে সৃষ্টি হয়? ডেভিসের ত্রয়ী বলতে কী বােঝ? মরু ক্ষয়চক্রে দৃশ্যমান বিভিন্ন ভূমিরূপের বিবরণ দাও।
জলনির্গম প্রণালী কাকে বলে? এই প্রণালীর নিয়ন্ত্রকসমূহ আলােচনা করাে। অনুরূপ প্রশ্ন: নদী নকশা গঠনের প্রধান ভূগাঠনিক নিয়ন্ত্রকগুলি কী কী?
গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন প্রকার জলনির্গম প্রণালী সম্বন্ধে আলােচনা করাে।
Geography সব প্রশ্ন উত্তর (দ্বাদশ শ্রেণীর)