ধৌত প্রক্রিয়ায় মাটির উধ্বস্তর থেকে খনিজ পদার্থের নীচের দিকে গমনকে বলা হয় এলুভিয়েশন। তেমনি স্থানান্তরের মাধ্যমে কোনাে পদার্থের সঞ্চয় হল ইলুভিয়েশন। মাটি গঠনের এই দুই মৌলিক প্রক্রিয়ার মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। এগুলি হল一
এলুভিয়েশন : (১) এলুভিয়েশন পদ্ধতি মাটির ওপরের স্তরে ঘটে থাকে। (২) ধৌত প্রক্রিয়ায় মাটির শীর্ষস্তর থেকে দ্রবীভূত খনিজের অপসারণ ঘটে। (৩) মাটির উপরিস্তর খনিজশূন্য হয়ে পড়ে এবং স্তরের রং হালকা হতে থাকে। (৪) যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে এলুভিয়েশন ঘটে থাকে। এজন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দরকার। (৫) মাটির A স্তর গঠিত হয়।
ইলুভিয়েশন : (১) ইলুভিয়েশন পদ্ধতি মাটির নীচের স্তরে ঘটে থাকে। (২) মাটির নিম্নস্তরে দ্রবীভূত খনিজের সঞ্চয় ঘটে। (৩) মাটির নীচের স্তর খনিজসমৃদ্ধ হয় এবং মাটির রং গাঢ় হয়। (৪) ইলুভিয়েশনের বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে এলুভিয়েশনের প্রকৃতি ও পদ্ধতির ওপর। (৫) মাটির B স্তর গঠিত হয়।
আদি শিলা মাটি গঠনের একটি মূল উপকরণ। এই শিলা বিবর্তিত হয়ে মাটিতে পরিণত হয়। মৃত্তিকা বিজ্ঞানী Mohr 1969 খ্রিস্টাব্দে বিবর্তনের দীর্ঘ সময়কে পাঁচটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন এবং কীভাবে মাটি গঠিত হয় তা দেখিয়েছেন। নীচের সারণিতে তা উল্লেখ করা হল一
(১) প্রারম্ভিক : অপরিবর্তিত আদি শিলা।
(২) তরুণ : শিলাস্তরে আবহবিকারের শুরু।
(৩) যৌবন : সহজে পরিবর্তনযােগ্য খনিজ পদার্থের বিয়ােজন। ধীর আবহবিকারযােগ্য খনিজের পর্যাপ্ত উপস্থিতি এবং কর্দম কণার পরিমাণ বৃদ্ধি।
(৪) বার্ধক্য : অত্যন্ত প্রতিরােধকারী খনিজ ব্যতীত সমস্ত খনিজ এই পর্যায়ে বিয়ােজিত হয়।
(৫) পরিণত : এই অবস্থায় মাটি গঠন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটে। মাটি সুসম্পন্ন স্তরবিশিষ্ট হয় এবং এর পরিলেখ সুস্পষ্ট হয়।