প্রাকৃতিক বা মানবিক কারণে সংঘটিত যে সকল ঘটনার দ্বারা মানবজীবনের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের স্বাভাবিক অবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে বা হয়ে থাকে তাকে দুর্যোগ বলে।
Hazard বা দুর্যোগ কথাটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ এবং আরবি শব্দ Az-zahr’ থেকে এসেছে। যার অর্থ ‘Chance’ বা ‘Luck’ ।
সমুদ্রের মধ্যে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণবাত (টাইফুন, হ্যারিকেন ইত্যাদি) যখন মাঝ সমুদ্রেই মিলিয়ে যাওয়ার ফলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে না তখন সেটি দুর্যোগ বলে পরিগণিত হয়।
দুর্যোগের ফলে জীবন ও সম্পদহানির সম্ভাবনা থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে এবং জীবনহানি ঘটলেও তা যৎসামান্য বা খুবই কম। কারণ এটি বিপর্যয়ের পূর্ববর্তী অবস্থা।
সব দুর্যোগই বিপর্যয় নয়।
দুর্যোগ মূলত ক্ষুদ্র স্কেলে (Micro Scale) সংঘটিত হয়।
এটি প্রাকৃতিক, ভূমিরূপগত, ভূতাত্ত্বিক এবং সাংস্কৃতিক উপাদানের সংযুক্ত ক্রিয়া।
দুর্যোগ উপযুক্ত আধুনিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
দুর্যোগ-কে মূলত 3 টি ভাগে ভাগ করা যায়- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, প্রকৃতি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ।
এটি বিশেষ এক পরিস্থিতি তবে তা চূড়ান্ত ঘটনা নয়।
প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট যে-কোনাে তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদি ঘটনা যা জীবনহানি ও সম্পদহানি ঘটায় এবং বাইরের বা অপরের সাহায্য ছাড়া যার মােকাবিলা করা সম্ভব নয়, তাকেই বিপর্যয় বলে।
বিপর্যয় বা Disaster শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ ‘Desastre’ থেকে যেখানে ‘Des’ অংশের অর্থ মন্দ এবং ‘Astre’ অংশের অর্থ Star বা তারা অর্থাৎ মন্দ বা শয়তানের তারা।
মধ্য সমুদ্রে গঠিত একটি ঘূর্ণবাত যখন উপকূল অঞ্চলের জনবহুল স্থানে আছড়ে পড়ে মানব জীবনে আঘাত হানে তখন তা বিপর্যয়রূপে পরিগণিত হয়।
অন্যদিকে বিপর্যয় হল দুর্যোগের পরবর্তী অবস্থা। যেখানে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। অনেকের মতে, 100- র বেশি মানুষের জীবনহানি ঘটলে বা 1 মিলিয়ন ডলার অর্থের ক্ষতি হলে তা বিপর্যয় বলে গণ্য করা হবে।
সব বিপর্যয়কে দুর্যোগ হতে হবে।
বিপর্যয় মূলত বৃহৎ স্কেলে (Macro Scale) সংঘটিত হয়।
বিপর্যয় মূলত প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট উপাদানের সহিত যুক্ত।
বিপর্যয় এতই আকস্মিক যে নিয়ন্ত্রণ বা আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
বিপর্যয়কে মূলত 2 টি ভাগে ভাগ করা যায়- প্রাকৃতিক বিপর্যয়, মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়।
এটি হল সর্বোচ্চ ঘটনা।