গম উৎপাদনে চিন পৃথিবীতে প্রথম স্থানাধিকারী দেশ। FAO-এর তথ্য অনুসারে 2012 খ্রিস্টাব্দে চিনের গম উৎপাদানের পরিমাণ 12.06 কোটি টন। বিশ্বের মােট গম উৎপাদনের প্রায় 18.11 শতাংশ এই দেশে উৎপাদিত হয়। বীজবপন ও ফসল কাটার সময় অনুসারে গম দু-ধরনের। যথা- [1] শীতকালীন গম ও [2] বাসন্তিক গম। চিনের এই দুধরনের গমের বণ্টন নীচে আলােচনা করা হলㅡ
[1] শীতকালীন গম বলয় : শীতকালীন গমের বীজ শীতের প্রারম্ভে বপন করা শুরু হয় এবং সাধারণত নভেম্বর মাসের শেষে বীজ রােপণের কাজ শেষ হয়। গ্রীষ্মের উয়তায় গম পরিপক্ক হওয়ার পর, সুবিধামতাে সময়ে, শরতের আগে ফসল কাটা হয়। এই শীতকালীন গমের বলয়টি মধ্য-চিনের প্রদেশগুলির ওপর দিয়ে বিস্তৃত। মধ্য চিনকে দেশের গমের গােলা (The Wheat Granary of the Country) বলা হয়। ইয়াংসি নদী অববাহিকার আনহুই, জিয়াংসি, হুবেই, হেনান ও সিচুয়ান প্রদেশে প্রচুর শীতকালীন গম উৎপন্ন হয়। এই শীতকালীন গম শ্যানডং প্রদেশে সর্বাধিক উৎপাদিত হয়।
[2] বাসন্তিক গম বলয় : বাসন্তিক গমের বীজ বসন্তের প্রারম্ভে বপন করা হয়। এই সময় দীর্ঘ শীতের শেষে বরফগলা জলে মাটি ভিজে থাকে। ফলে জলসেচের প্রয়ােজনীয়তা অনেকাংশে হ্রাস পায়। চিনে বাসন্তিক গম বলয়টি হেইলংজিয়াং (মারিয়া) ও গানসু প্রদেশের ল্যানঝু ও বাত্তু অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে। এই গম উৎপাদনে হেইলংজিয়াং প্রদেশ শীর্ষস্থান লাভ করেছে।
এই দুই ধরনের গমের মােট উৎপাদনের নিরিখে চিনের অন্যতম গম উৎপাদক প্রদেশগুলি হল শ্যানডং, হেনান, হুবেই, জিয়াংসু, আনহুই, সিচুয়ান প্রভৃতি। অত্যধিক জনসংখ্যার জন্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেশি বলে চিন গম রপ্তানি করতে পারে না।