রবার গাছ সর্বপ্রথম ব্রাজিলের আমাজন অববাহিকার সেলভা অরণ্যে লক্ষ করা যায়। উনবিংশ শতাব্দীতে আমাজন ও জাইরে অববাহিকার অরণ্য থেকেই পৃথিবীর অধিকাংশ রবার সংগৃহীত হত। এই কাঁচামাল নির্ভর রবার শিল্প বর্তমানে বিশ্বের বহু দেশে শুরু হয়। রবার শিল্পের ভিত্তিতে ব্রাজিল বিশ্বে এক উল্লেখযোগ্য দেশ। রবার শিল্পের প্রধান কাঁচামাল প্রাকৃতিক রবার উৎপাদনে ব্রাজিল বিশ্বে অষ্টম স্থান (1.64 লক্ষ টন, 2011) লাভ করেছে। কাঁচামালের সহজলভ্যতা, চাহিদা, উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা, দক্ষ শ্রমিকের প্রাচুর্য্য প্রভৃতি কারণে ব্রাজিলে রবার শিল্পের উন্নতি লক্ষ করা যায়। এখানকার রবার শিল্পগুলি মূলত ব্রাজিলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের প্রদেশগুলিতে সীমাবদ্ধ। উল্লেখযােগ্য রবার শিল্পকেন্দ্রগুলি হলㅡ
-
[1] রিও গ্র্যান্ড দো সুল,
-
[2] সাও পাওলাে,
-
[3] রিও ডি জেনিরাে,
-
[4] পাের্টো ভেলহাে,
-
[5] মানাউস,
-
[6] ম্যাকাপা,
-
[7] বেলেম,
-
[৪] বােয়া ভিস্টা প্রভৃতি।
এই সকল শিল্পকেন্দ্রগুলি থেকে উৎপন্ন রবারজাত দ্রব্যাদি বিশ্বের বহু দেশে রপ্তানি করা হয়। বর্তমানে আমাজন অববাহিকার অরণ্যে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং নির্বিচারে রস সংগ্রহ করার ফলে রবার গাছগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে রবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে যে রবার প্রস্তুত করা হয়, তাকে বলে কৃত্রিম রবার। একে বুনা (Buna) রবারও বলে। রাসায়নিক পদ্ধতিতে রবার উৎপাদনের সূচনা হয় জার্মানিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। তবে এর প্রকৃত জয়যাত্রা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়-যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি (মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড প্রভৃতি) থেকে প্রাকৃতিক রবার প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এবং রবার প্রায় দুষ্প্রাপ্য সামগ্রীতে পরিণত হয়। যুদ্ধের প্রয়ােজনে সেই সময় জার্মানি, সােভিয়েত ইউনিয়ন (পূর্বর্তন), আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি উন্নত দেশসমূহ ব্যাপকভাবে কৃত্রিম রবার উৎপাদনে উদ্যোগী হয় এবং অচিরেই কৃত্রিম রবার উৎপাদন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে পরিণত হয়।
কৃত্রিম রবারের কাঁচামাল : কৃত্রিম রবারের মূল কাঁচামালগুলি হল-
তবে এগুলি থেকে সরসারি নয়, পরােক্ষভাবে রবার উৎপাদন করা হয়। যেমন—কয়লা থেকে উপজাত দ্রব্য হিসেবে পাওয়া যায় ‘স্টিরিন (Styrene) এবং খনিজ তেল ও অ্যালকোহল থেকে ‘বুটাডিন’ (Butadiene)। এই স্টিরিন ও বুটাডিনকেই কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃত্রিম রবার উৎপাদন করা হয়।