যে মানচিত্রে ভূপৃষ্ঠের প্রাকৃতিক (যেমন— ভূমিরূপ, নদনদী, উদ্ভিদ ইত্যাদি) ও সাংস্কৃতিক (যেমন-জনবসতি, রাস্তা, টেলিফোন লাইন ইত্যাদি) উপাদানগুলি বিভিন্ন প্রতীক চিহ্ন ব্যবহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্কেলে চিত্রায়িত করা হয় সেই মানচিত্রকে ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বা টপােগ্রাফিকাল মানচিত্র (Topographical Map) বলে।
সাধারণ মানচিত্র অপেক্ষা ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে বিশেষ কতকগুলি বৈশিষ্ট্য থাকে। সেই বৈশিষ্ট্যগুলি হল一
-
এই ধরনের মানচিত্র কতকগুলি সুনির্দিষ্ট স্কেলে আঁকা হয়।
-
সুনির্দিষ্ট স্কেলে আঁকা মানচিত্রগুলির অক্ষাংশগত ও দ্রাঘিমাংশগত নির্দিষ্ট পরিসর বা বিস্তার থাকে।
-
নিখুঁতভাবে জরিপ কাজের মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যের (Primary Data) ভিত্তিতে এই মানচিত্র আঁকা হয়। বর্তমানে উপগ্রহ চিত্র কিংবা আকাশ থেকে তােলা চিত্রে (Satellite Imagery and Aerial Photo)-র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে আরও নিখুঁতভাবে এই মানচিত্রকে পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা হয়।
-
কোনাে একটি নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবর্তে নির্বাচিত কিছু প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানের সমাবেশ এই মানচিত্রে দেখানাে হয়।
ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব বা প্রয়ােজনীয়তা
-
ভূপ্রকৃতি, নদনদী, হ্রদ, পুকুর, বনভূমি ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিষয়গুলির বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায়।
-
রাস্তাঘাট ও যাতায়াত ব্যবস্থা, লােকবসতি ইত্যাদি সাংস্কৃতিক বিষয় সম্বন্ধে জানা যায়।
-
প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা নির্ভরতা সম্বন্ধে জানা ও বিশ্লেষণ করা যায়।
-
কোনাে অঞ্চলের বিভিন্ন সম্পদ সম্পর্কে সমীক্ষা করা যায়।
-
আঞ্চলিক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়।
-
সামরিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা প্রভৃতি কারণেও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ করা হয়।