অথবা, জাতীয় বিকাশের জন্য শিক্ষাকে কীভাবে কাজে লাগানাে হবে তা আলােচনা করাে।
জাতীয় বিকাশের জন্য শিক্ষার পুনর্গঠন প্রয়ােজন। যেসব ক্ষেত্রে শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় বিকাশ ত্বরান্বিত করা সম্ভব, সেগুলি হল一
[1] সামাজিক ঐক্য স্থাপন : সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গােষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। এর ফলে সামাজিক ঐক্য স্থাপন করা সহজ হয়।
[2] অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ : অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হলে দেশের জাতীয় বিকাশ সম্ভব। প্রত্যেককে তার ক্ষমতা এবং চাহিদামতাে শিক্ষা ও বৃত্তির সুযােগ করে দিতে পারলে আর্থিক বৈষম্য অনেকটাই দূর হবে।
[3] ভাষাসমস্যা সমাধান : শিক্ষার্থীরা যাতে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভ করতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্র ভাষাকে শক্তিশালী করতে হবে।
[4] নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন : জাতীয় বিকাশের দিকে লক্ষ্য রেখে ছাত্রছাত্রীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক রচনা করতে হবে।
[5] বৃত্তিমুখী শিক্ষার প্রচলন : জাতীয় বিকাশ ত্বরান্বিত করতে হলে ব্যক্তি ও সমাজের উন্নতির প্রয়ােজনে বৃত্তিমুখী শিক্ষার প্রচলন করতে হবে।
[6] অবৈতনিক, সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা : ব্যক্তিগত বিকাশ, সামাজিক বিকাশ ও জাতীয় বিকাশ অব্যাহত রাখতে হলে প্রয়ােজন অবৈতনিক, সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার।
[7] প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা : জাতীয় বিকাশের জন্য শিক্ষা পরিকল্পনায় শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
[8] নারীশিক্ষার প্রসার : জাতীয় বিকাশ ত্বরান্বিত করতে হলে নারীশিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী আসন সংরক্ষণ করতে হবে এবং বৃত্তিদানের মাধ্যমে নারীদের উৎসাহিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
[9] অনগ্রসর ও তপশিলিদের জন্য শিক্ষা : সুষ্ঠু জাতীয় বিকাশের লক্ষ্যে অনগ্রসর ও তপশিলিদের শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আসন সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বৃত্তিদানের ব্যবস্থাও করতে হবে।
জাতীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে হলে ওপরে আলােচিত বিষয়গুলি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়ের প্রতি নজর দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিচালিত করতে হবে। যেমন—ঐতিহাসিক মূল্যবােধ গঠন, ধর্মীয় কুসংস্কার দূরীকরণ, উদার মনােভাব গঠন, উন্নতমানের শিক্ষক তৈরি, উন্নতমানের পাঠক্রম, মানবসম্পদের যথাযথ ব্যবহার ইত্যাদি।