(১) জীবনের বিকাশে সহায়ক: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকে জীবনের বিকাশে সাহায্য করে, যেমন শারীরিক বিকাশ, মানসিক বিকাশ, সামাজিক বিকাশ, প্রাক্ষোভিক বিকাশ এবং নৈতিক ও মূল্যবােধের বিকাশ।
(২) শৃঙ্খলাবোধ গঠনে সহায়ক: এই ধরনের কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীগণ শৃঙ্খলার প্রয়ােজনীয়তা বুঝতে সক্ষম হয়।
(৩) ক্ষমতা বিকাশে সহায়ক: এগুলি শিক্ষার্থীদের সহজাত এবং অর্জিত উভয় ধরনের ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করে।
(৪) সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশে সাহায্য করে।
(৫) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকাশে সহায়ক: শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবােধের বিকাশে সাহায্য করে।
(৬) মনের ভার লাঘবে সহায়ক: মানসিক জটিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার অন্যতম উপায় হল শিক্ষার্থীর পছন্দমতাে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণে সুযােগ করে দেওয়া যা তাদের মনের ভার লাঘবে সাহায্য করবে।
(৭) সেবামূলক কাজে প্রেরণাদায়ী : এই প্রকার কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের কমিউনিটি, সমাজ এবং দেশের মঙ্গলার্থে বিভিন্ন ধরনের পরিসেবামূলক কার্যে অংশগ্রহণে প্রেরণা সঞ্চার করে।
(৮) বিনোদনের চাহিদা পূরণকারী: শিক্ষার্থীদের বিনােদনের চাহিদাকে পূরণ করতে সাহায্য করে।
(৯) বৈচিত্রময়: পাঠক্রমের একঘেয়েমি দূর করতে সাহায্য করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি একটি শিশুকে প্রকৃত মানুষে পরিণত হতে সাহায্য করে।
প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েই অনেক শিক্ষার্থীরা আগ্রহের সঙ্গে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণে ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সবাই সেই ইচ্ছা দেখায় না। যদিও সাগ্রহে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ একটি আবশ্যিক শর্ত। শিক্ষার্থীদের দিক থেকে এই অনীহার কারণগুলি হল一
-
বিদ্যালয়ে এই ধরনের কার্যাবলির সুযােগ কম।
-
শহরাঞ্চলে খেলার মাঠের অভাব।
-
এই ধরনের কার্যাবলির নির্দিষ্ট সময় সঠিকভাবে বিবেচিত হয় না।
-
অধ্যয়নে বাধার সৃষ্টি করে।
-
পরীক্ষায় এর জন্য নম্বর বরাদ্দ নেই।
-
সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব।
-
অধিকাংশ বিদ্যালয় সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিভিত্তিক বিকাশ যেমন—শারীরিক, নৈতিক, প্রাক্ষোভিক এবং সামাজিক বিকাশের তুলনায় পঠনপাঠন-ভিত্তিক বৌদ্ধিক বিকাশের ওপর অধিক গুরুত্ব আরােপ করে।
এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের একটি বড়াে অংশ আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বিদ্যালয়ের শ্রেণির কাজ শেষ হওয়ার পরেই বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে (যা সাধারণত বিদ্যালয়ের শ্রেণির কাজে পরে সংগঠিত হয়) অংশগ্রহণের জন্য তারা খুব অল্প সময় পায়।