অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে শিশুর শিক্ষায় পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পরিবারের শিক্ষামূলক কাজগুলি আলােচনা করা হল一

(১) সামাজিক আচরণের শিক্ষা: পরিবার শিশুকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক আচার-আচরণের শিক্ষা দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া করতে করতে শিশু বিভিন্ন আচার-আচরণ শিখে ফেলে।

(২) সংস্কৃতির শিক্ষা: পরিবারই শিশুর মধ্যে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক গুণাবলির বিকাশ ঘটায়। ফলে শিশুর মধ্যে সুস্থ সংস্কৃতির বােধ জাগ্রত হয়।

(৩) সু-অভ্যাস গঠনের শিক্ষা: পরিবার শিশুকে বিভিন্ন ধরনের সু-অভ্যাস গড়ে তুলতে শেখায়। ওই সু-অভ্যাসগুলিই পরবর্তীকালে শিশুকে সুনাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করে।

(৪) প্রাক্ষোভিক বিকাশের শিক্ষা: পরিবার শিশুর প্রক্ষোভ-গুলিকে যথাযথভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করে। সংযত প্রাক্ষোভিক আচরণের শিক্ষা শিশুর সার্বিক বিকাশের ক্ষেত্রেও সহায়ক হয়।

(৫) জ্ঞানার্জনের শিক্ষা: পরিবার শিশুকে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত করে। জ্ঞানার্জনের শিক্ষা তাই প্রকৃতপক্ষে পরিবারেই শুরু হয়।

(৬) ঐতিহ্য সংরক্ষণের শিক্ষা: পরিবার শিশুকে সামাজিক ঐতিহ্য সম্পর্কে পরিচিত করে এবং সেই ঐতিহ্য সংরক্ষণের শিক্ষা দেয়।

(৭) বৃত্তিশিক্ষা: শিশুকে বৃত্তিশিক্ষা দেওয়ায় পরিবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আজও বহু পরিবারে ছেলেরা বাবার বৃত্তি এবং মেয়েরা মায়ের বৃত্তি গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

(৮) আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষা: পরিবার শিশুর মধ্যে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটায়। শিশু নিজের অজান্তেই তার পরিবারের আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করে থাকে।

(৯) মূল্যবোধের শিক্ষা: শিশুর মধ্যে মূল্যবােধ গড়ে তােলার ক্ষেত্রে তার পরিবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন কাজ ও আচার-আচরণের মধ্য দিয়েই শিশুর মধ্যে মূল্যবােধ গড়ে ওঠে।

ওপরের আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, শিশুর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক বােধ গঠনে পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পরিবার সঠিকভাবে এই কাজগুলি করতে না পারলে, শিশুর যথাযথ বিকাশ ব্যাহত হয়।

Rate this post