পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করার সময় প্রতিটি রাষ্ট্রকে অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার কথা বিশেষভাবে বিচারবিশ্লেষণ করতে হয়। সাধারণত পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করার সময় সরকারকে সামগ্রিকভাবে জাতির ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা, জাতীয় উন্নয়ন, জাতীয় মর্যাদা, জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, বিশ্বব্যবস্থা প্রভৃতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। মূলত সরকার ও বিরােধীদলের মধ্যে আপস করার মাধ্যমে নির্ধারিত জাতীয় স্বার্থই পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
প্রত্যেক রাষ্ট্রের সরকারের বিশেষ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকে এবং সেই অনুসারেই পররাষ্ট্রনীতি সংগঠিত হয়। পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে বিশেষ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কে নিম্নে আলােচিত হলㅡ
(১) জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধান: সকল রাষ্ট্রসমূহ নিজের দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় স্বার্থকে রক্ষা করতে চায়। এক্ষেত্রে ছোট-বড় সকল রাষ্ট্রই তার অখণ্ডতা ও নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। কোনাে রাষ্ট্র তার জাতীয় স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করে বিদেশ নীতি রচনা করতে চায় না, কারণ তার স্বাধীনতার বিষয়টি জাতির সার্বভৌম বিষয়টির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। কোনাে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বিনষ্ট হলে সেই দেশের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুগ্ হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেই রাষ্ট্রের সার্বভৌম মর্যাদাও ক্ষুগ্ন হয়। এই কারণেই প্রতিটি রাষ্ট্র তার সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার অফুরন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যায়। সুতরাং প্রতিটি সার্বভৌম রাষ্ট্র তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে যথেষ্ট শক্তিশালী করে তােলে।
(২) জাতীয় উন্নতি: প্রতিটি দেশের বিদেশ নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল বৈদেশিক ক্ষেত্রে নিজের দেশকে প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্যকে সফল করতে সকলে প্রয়ােজনমাফিক জাতীয় উন্নতির উপর বিশেষ জোর দেয়। প্রতিটি দেশের জাতীয় উন্নতির দিকে লক্ষ রেখে বিদেশ নীতিকে গ্রহণ করা হয়। অবশ্য এই ধরনের উন্নতি বলতে কেবল দেশের আর্থিক উন্নয়নকে বােঝায় না পাশাপাশি শিল্পোন্নতিবােধকেও বােঝায়। বর্তমান বিশ্বে সব ধরনের রাষ্ট্র অন্তর্দেশীয় বাণিজ্যে অংশ নিয়ে নিজের আর্থিক স্বার্থকে রক্ষা করতে চায়। সেইজন্য সকল দেশ বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার দখল করার চেষ্টা করছে। এই বাজার ধরার প্রতিযোগিতায় তাদের নিজের দেশের মতাদর্শ কখনও প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়নি। বর্তমান সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, গ্রেট ব্রিটেন, চিন প্রভৃতির মতাে শিল্পসমৃদ্ধ দেশ গুলো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৃহৎ বাণিজ্যশক্তির পরিচয় দিচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যকে সফল করতে ওই রাষ্ট্রসমূহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তারের জন্য নিজ রাষ্ট্রের অনুকূলে বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ করে থাকে। ভারতের মতাে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি যাদের আর্থিক সামর্থ্য খুবই কম, সেইসকল দেশগুলি বিভিন্ন আর্থিক জোট গঠন করে নিজেদের বৈদেশিক নীতি নির্ধারণে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে চায়।
(৩) বিদেশে অস্থায়ী বসবাসকারী নাগরিকদের স্বার্থরক্ষা: বিশ্বায়নের যুগে আধুনিক সময়ে যােগাযােগ ব্যবস্থার অভাবনীয় উন্নতির ফলে একদেশের নাগরিক বিদেশে গিয়ে বা পরভূমিতে গিয়ে কাজের সুবিধা নেয় এবং অস্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করতে থাকে। বিশেষত বিদেশে পড়াশােনার কাজে, কূটনৈতিক কাজে, ব্যাবসাবাণিজ্যের কাজে এবং কোনাে বিশ্ব সম্মেলনে যােগ দিতে যায়। প্রতিটি বিদেশি রাষ্ট্রে প্রত্যেক দেশের দূতাবাস থাকে। ওই দূতাবাসে ব্যাপক সংখ্যক কর্মচারীরা কাজ করে থাকে। আন্তর্জাতিক আইন ও প্রথা অনুসারে এইসকল নাগরিকদের স্বার্থরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র গ্রহণ করে। ওই বিষয়ে একটি দেশের বিদেশ নীতির মধ্যে গ্রহণ করা হয়।
(৪) আর্থিক উন্নয়ন: জাতীয় স্বার্থের এই দিকটির উপর ভিত্তি করেই একটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারিত হয়। কৃষিপ্রধান দেশসমূহ জনগণের প্রয়ােজন পূরণের পর উদ্বৃত্ত কাঁচামাল ও দ্রব্যসামগ্রী বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে এবং সংগৃহীত অর্থের মাধ্যমে নিজ দেশের উন্নতির পথ প্রশস্ত করে। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ও শিল্পক্ষেত্রে অনুন্নত দেশগুলি শিল্পোন্নত দেশসমূহের কাছ থেকে মূলধন ও প্রযুক্তিগত সাহায্য গ্রহণ করে। এইসব উন্নয়নশীল রাষ্ট্র গুলির পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারকরা জাতীয় স্বার্থে শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তােলে ও জোট গঠন করে। এর ফলে ওইসব উন্নয়নশীল রাষ্ট্র স্বাধীনভাবে তাদের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করতে পারে না।
(৫) শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা রক্ষা: প্রতিটি রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ভীষণ আগ্রহী হয়। এর ফলে বিশ্বব্যবস্থায় প্রতিটি রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নতির বিষয়টি প্রশস্ত হতে পারে। ফলে প্রতিটি রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে কতকগুলি বিষয় মনে রাখা উচিত, যার দ্বারা দেশগুলি পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষ ও হিংসার প্রভাব বিস্তারের পরিবর্তে একটি শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। অবশ্য বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মতো অতিশক্তিশালী দেশগুলি এই নীতিটিকে কতটা গ্রহণ ও কার্যকর করে, তা সন্দেহের বিষয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বরাজনীতিতে তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য ও তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ভীষণভাবে বিঘ্নিত হয়েছিল। তার ফলে সমগ্র বিশ্ব ঠান্ডা লড়াই-এর দিকে চলে যায়। এরূপ পরিস্থিতিতে শুরু হয় মতাদর্শগত লড়াই। এর ফলে ঐ সকল দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে। এই অবস্থায় ভারতের মতাে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলি জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন তৈরি করে কোন শিবিরে যোগ না দিয়ে জোট নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বন করে নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে।
(৬) নিরস্ত্রীকরণ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে মারণাস্ত্রের প্রতিযােগিতা সমগ্র বিশ্বকে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রের অস্বাভাবিক উৎপাদনের ফলে সমগ্র বিশ্ব ভয়ংকর বিপদের সম্মুখীন হয়েছিল। পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণকারী শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত রাশিয়া, গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স) উপলব্ধি করেছিল নতুন করে আবার একটা মহাযুদ্ধ শুরু হলে সমগ্র বিশ্ব ধ্বংসের সম্মুখীন হবে। তাই ওই পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলি নিরস্ত্রীকরণ, আণবিক অস্ত্রের উৎপাদন হ্রাস ও প্রসাররােধে আগ্রহী হয়ে উঠল। তারা অস্ত্রমুক্ত পৃথিবী গঠনের কর্মসূচি গ্রহণ করে, তার ফলে সকল রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা পাবে বলে রাষ্ট্রনায়কেরা মতপ্রকাশ করেছিলেন।
(৭) পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রভাব: রাজনৈতিক মতাদর্শগত দিক থেকে কোনাে কোনাে দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে জাতীয় স্বার্থের ভূমিকা পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে পুঁজিবাদী রাষ্ট্র, সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির পররাষ্ট্রনীতির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বর্তমান। প্রত্যেক দেশই তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শের দ্বারা প্রভাবিত জাতীয় স্বার্থকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, তবে রাজনৈতিক মতাদর্শ জাতীয় স্বার্থ ও পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম নির্ধারক হলেও বৃহত্তর বিশ্বের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে কোনাে কোনাে দেশ তার মৌলিক (বেসিক) জাতীয় স্বার্থের এজেন্ডা থেকে সরে এসে পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করতে পিছপা হয় না। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষ তার জাতির স্বার্থে জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির গতিমুখ পরিবর্তন করে রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য ভুলে বিশ্বের সর্বপ্রধান বৃহৎ শক্তি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। এইসময় প্রতিটি রাষ্ট্র নিজেদের বিদেশ নীতি রচনায় জাতীয় স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার দিকে নজর দেয়। এর ফলে ওইসকল রাষ্ট্রের বিদেশ নীতি রচনায় জাতীয় মতাদর্শ গুরুত্ব পায়। আবার জাতীয় স্বার্থের প্রয়ােজনে কোনাে কোনাে রাষ্ট্র জোটবদ্ধ হয়ে অন্য রাষ্ট্রের সাহায্য ও সহযােগিতা গ্রহণ করে দ্বিধাবােধ করে না। যেমন পাকিস্তান মার্কিন গােষ্ঠীভুক্ত দেশ হলেও নিজেদের জাতীয় স্বার্থ পূরণে বিদেশ নীতি রচনায় চিনকে ভীষণ গুরুত্ব দেয়।
প্রত্যেক দেশেরই নিজের ব্যবস্থার পক্ষে একটি মতবাদ থাকে, মূল্যবােধ থাকে। তাই নিজের দেশের মতবাদ ও মূল্যবােধকে রক্ষা করা এবং জাতীয় মর্যাদা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয়। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপায়গুলি নিম্নলিখিতরূপে বর্ণনা বা বিশ্লেষণ করা হলㅡ
(১) কূটনীতি: বর্তমানে কূটনৈতিক উদ্যোগ ও আয়ােজনকে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কূটনীতিবিদরা নিজেদের দেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রধানত তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করেন, যথা— ০ আস্থা অর্জন, ০ আপস মীমাংসা, ০ বলপ্রয়ােগের ভীতি প্রদর্শন। কূটনীতিবিদদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পামার ও পারকিনস তাদের নিজ নিজ দেশের সরকারের চক্ষু ও কর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন। বস্তুত কূটনীতির মাধ্যমেই কোনাে দেশ তার জাতীয় শক্তির অন্যান্য উপাদানগুলিকে সার্থকভাবে প্রয়ােগ করতে পারে।
(২) প্রচারকার্য পরিচালনা: জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্য হল প্রচার মাধ্যমকে হাতিয়ার করে রাষ্ট্রসমূহ বিদেশ নীতিতে সাফল্যলাভের চেষ্টা করা। প্রত্যেক দেশের সরকার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজের দেশের পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে গণমাধ্যম সমূহের সাহায্যে ব্যাপক প্রচারকার্য পরিচালনা করে। যেমন ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় তৎকালীন সােভিয়েত ইউনিয়ন তার রাজনৈতিক মতাদর্শকে সমগ্র বিশ্বের সামনে উপস্থিত করেছিল রেডিয়াে, টিভি ও সংবাদপত্রের নিরন্তর প্রচারের দ্বারা। প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রচারের উদ্দেশ্য হল তার নীতিসমূহকে সমগ্র বিশ্বের দরবারে গ্রহণযােগ্য করে বিশ্বজনমত গঠন করা।
(৩) জোট গঠন: নিজেদের সাধারণ জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ, শক্তিবৃদ্ধি, প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি জোটের মােকাবিলা প্রভৃতি চিন্তাভাবনার ভিত্তিতে একাধিক রাষ্ট্র জোট গঠনে শামিল হয়। যেমন— ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের NATO জোট গঠন করা হয়েছিল, অপরদিকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি গঠন করেছিল WARSAW জোট, আবার ভারত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন গড়ে তুলে জাতীয় স্বার্থকে রক্ষা করেছিল।
(৪) অর্থনৈতিক সহযােগিতা: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সম্পদশালী দেশ দরিদ্র ও উন্নতিশীল দেশ গুলোর দিকে অর্থনৈতিক সহযােগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এর উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ঋণদানকারী রাষ্ট্রের কার্যকলাপের প্রতি ঋণগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলির অকুণ্ঠ সমর্থন আদায় করা। যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্শাল পরিকল্পনার মাধ্যমে আমেরিকা পূর্ব ইউরোপে আর্থিক সহায়তা দানের মাধ্যমে ওই দেশগুলির সমর্থন আদায় করেছিল।
(৫) শক্তি প্রয়ােগ: জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য শক্তিধর রাষ্ট্র গুলো শক্তি প্রয়ােগ করে বা শক্তি প্রয়ােগের ভীতি প্রদর্শন করে। নিজেদের জাতীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে উত্ত রাষ্ট্রগুলোর অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। দৃষ্টান্তস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিকারাগুয়া, অ্যাঙ্গোলা প্রভৃতি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের কথা উল্লেখ করা যায়।