বাসিনী: মহাশ্বেতী দেবীর ‘ভাত’ ছছাটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিতে উল্লিখিত বাসিনী হল বড়ড়া বাড়ির পরিচারিকা।
সঙ্গে আনা ব্যক্তি : বাসিনী তার গ্রাম সম্পর্কিত দাদা উচ্ছবকে তার মনিবের বাড়িতে এনেছে।
ভাতের আকাক্ষার কারণ : ‘ভাত’ ছােটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছবের জীবনে এক ঝড়-বৃষ্টির রাতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। যেদিন মাতলার বানে তার বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যায়। সেদিন সন্ধ্যাতেই উচ্ছব বউ-ছেলেমেয়েসহ পেট পুরে ভাত খেয়েছিল বহুদিন পর। সেই বন্যার রাতের পর জল নেমে গেলেও কয়েকদিন ধরে সে তার ভিটেয় পড়েছিল প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আশায়। ফলে লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি’। তার সংবিৎ ফিরে আসলে সে দেখে রান্না খিচুড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কয়েকদিনের উপবাসের পর সে বেশ কয়েকদিন কাঁচা চাল চিবিয়েই কাটিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেতে পেয়ে দিশেহারা উচ্ছব ভেবেছিল, “পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে। ভাত খেলে সে মানুষ হবে। তখন বউ ছেলে মেয়ের জন্য কাঁদবে।” যার জমিতে সে কাজ করে সেই সতীশ মিস্তিরি যখন তাকে একদিনের জন্যও ভাত খেতে দিতে অরাজি হয়, তখন সে পেট ভরে ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাতেই গ্রামতুতাে বােন বাসিনীর কলকাতাস্থ মনিবের বাড়িতে আসে। সুন্দরবনের বাদায় বাস করা উচ্ছবের একারণেই ‘ভাতের আহিংকে এতখানি’ ছিল।